আগামীকাল থেকে নিষিদ্ধ হতে চলেছে নিত্যব্যবহার্য কয়েকটি প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি

সারাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার। আগামীকাল গান্ধী জয়ন্তীর দিন থেকে 2022 সালের মধ্যে ভারতবর্ষকে সম্পূর্ণ প্লাস্টিকমুক্ত দেশ হিসেবে তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় সরকার নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। তার মধ্যে জনসাধারণের নিত্যব্যবহার্য কয়েকটি বস্তু রয়েছে যা ছাড়া পা ফেলাই দুষ্কর। অন্তত এখনও পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে নানা রকম চিন্তাভাবনা চলেছে। তবে এখনও পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার্য তেমন কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি। একবার মাত্র ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলার মত প্লাস্টিকজাত যে সমস্ত পণ্য বা দ্রব্যাদি নিষিদ্ধ হতে চলেছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে 200 মিলিলিটারের কম জল বা নরম পানীয়ের প্লাস্টিক বোতল। প্লাস্টিকের স্ট্র, প্লাস্টিকের পতাকা, লজেন্সের মোড়ক, বেলুন, প্লাস্টিকের চামচ-গ্লাস-বাটি ইত্যাদি। 50 মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, প্লাস্টিকের কান খোঁচানোর কাঠি বা ইয়ার বাড, প্লাস্টিকের কফি এবং চায়ের কাপ, দেড়শ মিলিলিটারের কম তরল ধারণ করার ক্ষমতাযুক্ত কাপ-গ্লাস বা অন্যান্য পাত্র। থারমোকল শীট, থার্মোকলের তৈরি সমস্ত রকম খাবারের প্লেট-বাটি-গ্লাস ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের ফ্লেক্স ও ব্যানার। উৎসববাড়িতে খাওয়ার টেবিলে বিছানোর জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক শীট। চিপস এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক প্যাকেট। কয়েক ধরনের শ্যাম্পু – সস ইত্যাদির স্যাশে। প্লাস্টিকের পরত দেওয়া কাগজের চা এবং নরম পানীয়ের কাপ এবং গ্লাস। প্লাস্টিকের পরত দেওয়া কাগজের খাবারের প্লেট। বিক্রেতাদের যেমন এগুলি মজুত করে রাখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তেমনই বলা হয়েছে মজুত করা সামগ্রীগুলি আগামীকাল রাতের মধ্যেই নষ্ট করে ফেলতে হবে। নির্দেশ মানা না হলে বড় রকমের জরিমানা ধার্য হবে বিক্রেতাদের জন্য এবং ক্রেতাদের জন্য। প্রথমবার ধরা পড়লে জরিমানা করা হবে 5000 টাকা। দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে তা বেড়ে হবে 10 হাজার টাকা। তৃতীয়বার ধরা পড়লে দিতে হবে 25 হাজার টাকা সঙ্গে 3 মাসের জেল। কিছু তবে নিষিদ্ধ তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে পুরু জলের বোতল, দুধের পাউচ, নার্সারির গাছ বড় করার জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক, রক্ত – স্যালাইন ইত্যাদি ড্রিপ দেওয়ার পাউচ। খুচরো দোকানদারেরা ক্ষুব্ধ এই নির্দেশনামাতে। তাদের বক্তব্য, খুচরো পণ্য কিনতে গিয়ে যারা আসবেন সেই ক্রেতাদের 50 মাইক্রন-এর বেশি পুরু প্লাস্টিক থলি ব্যবহার করতে তাদের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। সেই খরচ ক্রেতাদের থেকে আদায় করতে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই মোট খরচ বেড়ে যাবে। অনেকেই এমন আপত্তিও জানিয়েছেন যে কম পুরু প্লাস্টিকজাত দ্রব্য যদি পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক হয় এবং তা নষ্ট হতে বহু দিন সময় লাগে তাহলে পুরু প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য আরও বেশি দিন ধরে পৃথিবীতে থেকে যাবে এবং পরিবেশের আরও বেশি ক্ষতি করবে। প্রসঙ্গত প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার থিম নিয়ে কলকাতার একটি দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছেন হাজারে হাজারে খালি জলের বোতল মণ্ডপে ব্যবহার করে। তারা বার্তা দিতে চেয়েছেন প্লাস্টিকমুক্ত সমাজ। পরিবেশের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য যা অবশ্যই জরুরী। বিকল্প হিসাবে বাজারে আসতে চলেছে কর্নস্টার্চ-এ তৈরি থলি এবং অন্যান্য পণ্য। যার স্থায়িত্ব আপাতত 6 মাস এবং যেগুলিকে এখনও পর্যন্ত মজুত করতে গেলে সূর্যালোক এড়িয়ে রাখতে হবে।

Previous articleদেখুন আমাদের ব্যোমকেশ
Next articleসপ্তমী থেকে দশমী- 4 ছবিতে জমজমাট বাঙালির দুর্গোৎসব