ধ্বংসস্তূপের মাঝেও মাতৃ বন্দনায় আলোর সন্ধান পেয়েছে মেট্রো কাণ্ডে বিপর্যস্ত পরিবারগুলো

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে বিপর্যস্ত বউবাজার স্যাঁকরাপাড়া লেন। সম্প্রতি ভেঙে পড়েছে একের পর এক বাড়ি। বাসিন্দাদের ঠাঁই এখন আশপাশের হোটেল কিংবা গেস্ট হাউস। তবুও বাঙালির সেরা উৎসব তাঁদের দূরে ঠেলে রাখতে পারেনি। গত ৫৭ বছর ধরে সাকরা পাড়া যুবক সংঘ মা দুর্গার আরাধনা করে আসছে, এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ৫৮তম বছরে পুজোর আকার কিংবা জৌলুস কমলেও আবেগে ঘাটতি নেই।

ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বিপর্যস্ত পরিবারগুলো যথারীতি পুজো প্যান্ডেলে ভিড় করেছে। এসেছে কচিকাঁচারাও। যতই বিপর্যয় আসুক, পুজোর চারটি দিন কিছুতেই তাঁরা উৎসব বিমুখ থাকতে চায় না। সাকরা পাড়া পুজো কমিটির এক কর্মকর্তার কথায়, “জানি না কবে আবার নিজের বাড়িতে ফিরবো। তবে পাড়ার দুর্গাপুজো মিস করতে পারবো না। তাই যতই সমস্যা থাকুক, মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনেক কষ্টে পুজো করার অনুমতি মিলেছে। আগে আমাদের এই পুজো পাড়ার মধ্যে অনেক বড় করে হতো। কিন্তু এখন সেখানে ধ্বংস স্তুপ। তাই একটু ছোট করেই পুজোটা করতে হচ্ছে।”

স্থানীয় আরেকটি পরিবার সন্ধ্যায় ষষ্ঠীর পুজো দিতে এসেছে। সঙ্গে ক্লাস ওয়ানে পড়া বাচ্চা ছেলে। স্বামী-স্ত্রী জানালেন, বড় মেয়ে মাধ্যমিক দেবে। হোটেল থেকে পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। ছোট বাচ্চাটির জন্য কোনওরকমে পুজোর জামা-কাপড় কিনে দিয়েছেন, এর বাইরে এর কিছু সম্ভব হয়নি। তবে বাঙালির শেষ্ট্র উৎসব দুর্গা পুজো থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। তাই উৎসব মুখর দিনগুলিতে তাঁরাও হোটেলের ঘরে বসে থাকতে পারেননি।

সব মিলিয়ে আলো ঝলমলে গোটা শহরের মতো নয়, কিছুটা অন্ধকারেই সাকরা পাড়া লেন। যদিও শারদ উৎসবে ধ্বংস স্তূপের মাঝেও মাতৃ বন্দনায় আলোর সন্ধান পেয়েছে মেট্রো কাণ্ডে বিপর্যস্ত পরিবারগুলো।

Previous articleপুজোয় বৃষ্টির ভ্রূকুটি
Next articleপশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব পালনে আমাকে বাধা দেবেন না, ফের মনে করালেন রাজ্যপাল