সিপিএমের বিরোধী হয়েও বলছি, ওদের যাদবপুর বুকস্টলে যান: কুণাল ঘোষ

সিপিএমের কট্টর বিরোধী হয়েও বহু বছর ধরেই বামসাহিত্যের পাঠক। রীতিমত সিপিএমের স্টলে ঢুকে বই কেনেন তিনি। গতবারের মত এবারেও যাদবপুরে সিপিএমের স্টল ঘুরে এলেন তিনি। বই কিনলেন। স্টলের সম্ভার দেখে প্রশংসা করলেন। এবং শেষমেষ নিজেই ফেসবুক পোস্ট করলেন।

কুণাল লিখেছেন:

মহাসপ্তমীর সংগ্রহ

1) স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা : বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
2)ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন: অনিন্দ্য ভুক্ত।
3) বৃন্দাবনবিলাসিনী ও অন্যান্য কবিতা : উর্বা চৌধুরী।
4)নবরত্ন : এস কে ব্রহ্ম। বইটি ছিল। একজনকে দিয়েছি।
5)নতুন চিঠি : নিরুপম সেন সংখ্যা।
6) অগ্নিযুগের চিঠি: শুভেন্দু মজুমদার।
7) মুখ্যমন্ত্রীকেই বলছি: সুজন চক্রবর্তী।
8) সন্দেশ: সেরা উপন্যাস সংকলন।
9) সন্দেশ: সেরা গল্প সংকলন।

কিনেছি সিপিআইএমের স্টল থেকে। আমি রাজনৈতিকভাবে তাদের সহযাত্রী না হতেই পারি, চিরকাল তাদের বইগুলি পড়ার চেষ্টা করি। বহুবার কিনেছি, পড়েছি। না পড়লে জানব কী করে তাদের কথা?

যাদবপুরের স্টলটিতে ঢুকেছিলাম। সুদীপ সেনগুপ্তসহ কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হল। একটু গল্প হল।

এইট বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে স্টলটি যত্ন করে করা। শুধু রাজনৈতিক বই নয়, গতবারও দেখেছি, সবরকম সাহিত্য, বিশেষত শিশুসাহিত্যের দারুণ সম্ভার।

সিপিআইএমকে সমর্থন করুন বা নাই করুন, বইপ্রেমী হলে একবার স্টলটিতে যান। বই সংস্কৃতি ভালো লাগবে। সুদীপ এবং আয়োজকরাও বেশ খোলা মনের। আমার মত একটি সিপিএমবিরোধী বিতর্কিত প্রাণীকে চা খাওয়ানোর আতিথেয়তাটাও বাদ যায় নি।

আমার মতে, রাজনৈতিক কর্মী হলে সব দলের বই বা কাগজপত্র পড়া উচিত। যদি সমর্থন করতে হয়, বা বিরোধিতাও করতে হয়, বিষয় না জেনে তা করা যুক্তিসঙ্গত নয়। আমি কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এবং বিশেষভাবে এস ইউ সির বইগুলিও চিরকাল সংগ্রহ করি এবং পড়ার চেষ্টা করি।

সিপিআইএমের যাঁরা যাদবপুরের স্টলটি করেছেন, একটি সর্বাঙ্গসুন্দর বইশিবির করার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। দলমতনির্বিশেষে রাজনীতিতে আগ্রহী বা বইপ্রেমীরা ছুৎমার্গ না রেখে স্টলটিতে যেতেই পারেন। ভোটের রাজনীতিতে আজ দল হিসেবে পিছিয়ে পড়লেও এই ধরণের উদ্যোগ আবার এগিয়ে যাওয়ার বীজ বুনে দেয়; এটা সব দলের কর্মীদের কাছে শেখার মত। স্টল মানে শুধু নেতানেত্রীর ছবি লাগানো ম্যারাপ, উদ্বোধনের ফেস বুক ছবি আর তারপরেই স্টল ছেড়ে নেচে বেড়ানো নয়। স্টল করতে হলে এভাবেই করা উচিত।

আমি সিপিআইএমের সমর্থক নই। তবু, স্টল এবং বইসংস্কৃতি আমার ভালো লেগেছে। তাই খোলাখুলি লিখলাম। সিপিআইএম আমাকে কতটা খারাপ বলল, এটা আমার বিচার্য না। বহুবছর ধরে আমি জাতীয়তাবাদী রচনার পাশাপাশি বামপন্থী লেখালিখি পড়ি নিজের কৌতূহলে। সেটা অব্যাহত থাকবে।

আবার বলছি, সিপিআইএমের যাদবপুরের বইয়ের স্টলটি ঘুরে আসুন।

Previous articleজেলেই অসুস্থ চিদম্বরম, AIIMS ভর্তি নেয়নি
Next articleকুমারটুলিতে নেই কোনও অবিক্রিত দুর্গা প্রতিমা, তবুও কেন খুশি নন প্রতিমা শিল্পীরা?