রামমন্দির দেখতে কেমন হবে? তৈরি হতে লাগবে কতদিন? কৌতূহল সর্বস্তরে

এই সেই রামলালা মন্দিরের কাঠের তৈরি মডেল

অযোধ্যায় সেই জমিতে রামমন্দির তৈরির অনুমতি দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।

এর পর থেকেই দেশজুড়ে প্রশ্ন আর কৌতূহল, কেমন হবে এই রামলালা মন্দির, মন্দির তৈরি শেষ হবে কত দিনে?

শুনলে আশ্চর্য হতে পারেন, সুপ্রিম কোর্ট শনিবার মন্দির নির্মাণে সবুজ সংকেত দিলেও রামলালা মন্দির তৈরির সলতে পাকানোর কাজ চলছে গত 30 বছর ধরে। 1992 সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঢের আগে থেকেই। নীরবে, ক্লান্তিহীনভাবেই মন্দিরের কাঠামো তৈরি করে চলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা VHP নিয়ন্ত্রিত ‘রাম জন্মভূমি নিবাস’। অযোধ্যার করসেবকপুরমে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দফতর থেকে 1 কিমি দূরে এবং বিতর্কিত রাম জন্মভূমির মূল জমি থেকে 3 কিমি দূরে তৈরি হয়েছে একটি কর্মশালা বা ওয়ার্কশপ। সেখানেই তিন দশক আগে শুরু হয় রামমন্দিরের কাঠামো তৈরির কাজ। মন্দির তৈরির জন্য অযোধ্যায় ‘রাম জন্মভূমি নিবাস’-এর কর্মশালায় প্রথম পাথর এসেছিল রাজস্থানের ভরতপুরের বাঁসিপাহাড় থেকে, 1989 সালে। সেদিন থেকে টানা কাজ চলছে। লক্ষ লক্ষ পাথর কেটে, তার উপর খোদাই করা হচ্ছে সুদৃশ্য ডিজাইন। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারনা, প্রস্তাবিত মন্দির যদি VHP-র নকশা এবং নির্মাণশৈলী মেনে তৈরি হয়, তাহলে লেগে যাবে আরও 5 বছর।

এই ওয়ার্কশপেই চলছে পাথর কাটার কাজ

কেমন হতে চলেছে এই মন্দির?

VHP-র ওয়ার্কশপে চলছে মন্দিরের মূল কাঠামো তৈরির কাজ।

■ প্রথমেই তৈরি করা হয়েছে কাঠের একটি নিখুঁত মন্দিরের প্রতিকৃতি।

■ সেই কাঠের মডেল দেখে কর্মশালার কর্মীরা মন্দিরের এক একটি অংশ বানিয়ে চলেছে। খুব পরিশ্রম এবং সময়সাপেক্ষ কাজ।

■ রাজস্থান থেকে বিশাল বিশাল পাথর এনে সেগুলি মাপমতো কেটে খোদাই করে এক একটি অংশ তৈরি হচ্ছে।

■ 1992 সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরপরই ‘রাম জন্মভূমি নিবাস’-এর কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়। তাতেও কিন্তু মন্দির তৈরির কাজ বন্ধ হয়নি।

■ সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার কিছুদিন আগে থেকে বন্ধ রাখা হয়েছিলো এই কর্মশালা। VHP সম্ভবত বুঝে নিতে চাইছিলো আদালতের ভূমিকা। রায় ঘোষণার কিছুদিন আগে তাই বন্ধ রাখা হয় মন্দিরের কাঠামো প্রস্তুতির কাজ।

■ শনিবারের রায়ের পরে সেই কাজ আবার শুরু হয়েছে নতুন উদ্যমে এবং কাজের গতিও বাড়ানো হয়েছে।

এই ওয়ার্কশপের সুপারভাইজার অন্নুভাই সোমপুরা বলেছেন, “VHP-র মডেল এবং নির্মাণশৈলী মেনে যদি কাজ চলে তাহলে মন্দির তৈরি শেষ হতে কমপক্ষে 5 বছর লাগবে। সোমপুরা বলেছেন, গত 3 দশক টানা কাজ করে মাত্র অর্ধেক কাজ শেষ করা গিয়েছে। বাকি অর্ধেক কাজ শেষ হতে আরও অন্তত 5 বছর লাগতে পারে। পাথর কেটে যে অংশগুলি তৈরি হবে বা হয়েছে, সেগুলি মূল মন্দির চত্বরে আনতেই লেগে যাবে অন্তত 6 মাস। আর তার পরে পুরো মন্দির তৈরি করতে আরও কয়েক বছর তো লাগবেই।’’ তাঁর কথায়,

■ মন্দিরের উচ্চতা হবে 128 ফুট।

■ মন্দির হবে দোতালা।

■ পুরোটাই তৈরি হবে গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে।

■ এই বিশেষ পাথর আনা হচ্ছে রাজস্থানের বাঁসপাহাড়ি থেকে।

■ মন্দিরের মোট উচ্চতা হবে 128 ফুট।

■ লম্বা হবে 265 ফুট 5 ইঞ্চি।

■ চওড়া হবে 140 ফুট।
■ গম্বুজ ও ভিত্তিপ্রস্তর অংশ বাদ দিয়ে একতলা হবে 18 ফুট উঁচু, দোতলা 15 ফুট 9 ইঞ্চি।

■ মোট 6 টি ভাগ থাকবে মন্দিরের।

■ এই 6 ভাগ হলো,
অগ্র দ্বার,
সিংহ দ্বার,
নৃত্য মণ্ডপ,
রং মণ্ডপ,
পরিক্রমা এবং
গর্ভগৃহ।

■ 1 লক্ষ 75 হাজার ঘনফুট পাথর দিয়ে তৈরি হবে রামমন্দির।

■ ইতিমধ্যেই এর মধ্যে প্রায় 1 লক্ষ ঘনফুট পাথর কাটা হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশের কাজ চলছে।

■ মন্দিরে থাকবে 212টি পিলার।

■ প্রতি তলায় থাকবে 106টি করে পিলার।

■ এগুলি 3 রকমের দেখতে হবে।

■ একতলার পিলারগুলি সাড়ে 16 ফুট লম্বা।

■ দোতলার পিলারগুলি হবে সাড়ে 14 ফুট।

■ প্রতিটি পিলারে থাকবে যক্ষ-যক্ষিণীর 16টি করে মূর্তি।

■ মন্দির নির্মানে কোনও সিমেন্ট, বালি বা লোহার ব্যবহার হবে না।
■ পুরো মন্দিরটির ভার বহন করবে 4 ফুট 9 ইঞ্চি উঁচু একটি ‘ফাউন্ডেশন প্ল্যাটফর্ম’।
■ গর্ভগৃহের ঠিক উপরেই 16 ফুট 3 ইঞ্চির একটি বেদি তৈরি হবে।

■ এই বেদির উপরেই বসবে রামের মূর্তি।

■ তার উপরে হবে 132 ফুট উঁচু গম্বুজ।

■ মন্দিরে থাকবে মোট 24টি দরজা।

Previous articleদীপককে শুভেচ্ছা সৌরভ-সচিনের
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ