রাম মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ড ও পৌরোহিত্যের অধিকারের দাবিতে গরম হচ্ছে হাওয়া

অযোধ্যা-মামলার রায়ে শীর্ষ আদালত রাম মন্দির গড়তে একটি ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রকে। এই নির্দেশ জারি হ্ওয়ার পর থেকেই ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে শুরু হয়েছে জাতীয় স্তরের জল্পনা। কারা থাকবেন কেন্দ্রীয় সরকার নির্মিত ট্রাস্টি বোর্ডে? ভেসে উঠেছে অনেকগুলি নাম। এই ট্রাস্টে ঢোকার জন্য নির্বাচনে দলের টিকিট পাওয়ার থেকেও বড় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে বিজেপি, সঙ্ঘ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অন্দরে। রাম মন্দির নির্মানের পরিকল্পনা নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরেই অযোধ্যাতে কাজ চালাচ্ছে VHP বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মন্দির নির্মাণ নিয়ে আগামী পরিকল্পনাও ছকে ফেলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ফলে ওই ট্রাস্টে VHP-র যথাযথ প্রতিনিধিত্ব না থাকলে পরিকল্পনা রূপায়িত করা সমস্যাজনক হবে বলেই VHP মনে করছে।

শুধু ট্রাস্টি বোর্ডে ঢোকার দৌড় নয়, একইসঙ্গে শুরু হয়েছে অযোধ্যা মন্দিরের পৌরোহিত‍্যের দায়িত্বে কারা থাকবেন, তা নিয়েও।
অযোধ্যা মন্দির সংক্রান্ত রায়ে সুপ্রিমকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে একটি ট্রাস্ট তৈরি করে মন্দির নির্মানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। প্রশ্ন উঠেছে, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির করার জন্য যে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন হবে সেই ট্রাস্টি বোর্ডে কারা কারা সদস্য হবেন? মন্দিরে কারা পূজো করবেন? বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, এই ট্রাস্টে দেশের সরকারের তরফে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব থাকতেই হবে।

এদিকে সূত্রের খবর, অযোধ্যার প্রস্তাবিত রামলালা মন্দিরের পুজো বদ্রিনাথ মন্দিরের আদলে করার জোরালো দাবি উঠেছে। বদ্রিনাথ মন্দিরে পুজো ধরনটি সম্পূর্ণ অন্যরকম। ওই মন্দিরের নিয়ম, যতদিন কেউ কঠোর
ব্রহ্মচর্য পালন করবেন, ততদিন সে মন্দিরের পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন। এর অর্থ, যতদিন তিনি বদ্রিনাথ মন্দিরে পুজো করবেন সেই সময়ে তাঁকে কঠোর ব্রহ্মচর্য পালন করে যেতে হবে। কোনও মহিলার সংস্পর্শে আসা চলবে না। বদ্রিনাথ-এ পুজো করার জন্য কেরলের নাম্বুদিরি থেকে ব্রাহ্মণরা আসেন। এই সম্প্রদায়কে শঙ্করাচার্যের বংশধর বলে মনে করা হয়।
এঁদের রাওয়ালও বলা হয়। সাধারণত এই সম্প্রদায়ের যোগ্যতা, স্থানীয় বেদ-বেদান্ত বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হতে হবে। এবং ‘শাস্ত্রী’ উপাধি আবশ্যিক হতে হবে। এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, পুরোহিতদের ব্রহ্মচারী হতেই হবে। রাম মন্দিরের পুরোহিতদেরও এমন শর্তের মধ্যেই আনতে চাইছে এক পক্ষ। অপর পক্ষ এই প্রস্তাব সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছে।

প্রস্তাবিত রাম মন্দিরে
কারা পৌরোহিত্য করবেন বা মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে কারা থাকবেন তার পাশাপাশি প্রশ্ন আরও উঠেছে। সরকারকে ঠিক করতে হবে মন্দির কার অর্থে হবে অর্থাৎ সোমনাথ মন্দিরের পর রাম মন্দিরও কি সরকারের টাকাতেই হবে নাকি ট্রাস্টি বোর্ডের থেকে অর্থ জোগাড় করা হবে।
এই ট্রাস্টের সদস্য কারা হবেন সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলি যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই মন্তব্য করছেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে গোটা বিষয়টিতে ভারসাম্য বজায় রাখার ভার কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর। সরকারের এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে রাম মন্দিরকে ঘিরে নতুন কোনও বিতর্ক তৈরি হবে কি’না।

Previous articleউত্তরপাড়া  জি টি রোডের বেহাল দশা, ভোগান্তি নিত্য যাত্রী থেকে সাধারণ মানুষের
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ