CAB : মোদি- শাহের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি মার্কিন কমিশনের, উড়িয়ে দিলো ভারত

লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (CAB) পাশ করিয়ে নিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না মোদি-শাহ । ঘরের বিরোধিতা তো আছেই, বেনজিরভাবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলো বিদেশের তীব্র বিরোধিতাও৷ পরিস্থিতি ক্রমশ এমন দাঁড়াচ্ছে যে, এই CAB বিলে ধর্মীয় বৈষম্যকে স্বীকৃতি দেওয়ার কড়া অভিযোগ এনে এ বার অমিত শাহ-সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি উঠলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

সোমবার লোকসভায় মহা-বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলটি নিয়ে প্রায় 12 ঘণ্টার তর্ক এবং বিতর্ক চলার পর, শুধুই বিজেপির সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদের সমর্থন থাকার সুযোগ নিয়ে মধ্যরাতে বিলটি পাশ হয়ে যায়। যদিও এখানেই শেষ নয়৷ বিজেপি তথা কেন্দ্রের আসল পরীক্ষা রাজ্যসভায়৷ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ না হলে মোদি-শাহের স্বপ্ন চুরমার হবে৷ রাজ্যসভায় সরকার পক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও, বিশেষ কৌশলে বিলটি পাশ করিয়ে নিতে আত্মবিশ্বাসীই দেখাচ্ছে মোদি-শাহকে৷
আর টিম-মোদির এই আত্মবিশ্বাসের মধ্যেই চরম উদ্বেগের ছায়া দেখতে পেয়েছে USCIRF বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন। এই কমিশনের মতে, CAB বিলে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া হয়েছে, এই চেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সোমবারই USCIRF-এর তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে ৷ সেখানে বলা হয়েছে, “নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল একটি বিপজ্জনক মোড়৷ এই প্রক্রিয়া ভুল পথ ধরে এগোতে চাইছে। ভারত সংবিধানগতভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী দেশ৷ সেই ইতিহাসই বহন করছে স্বাধীনতার পর থেকে৷ ভারতের সংবিধান, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের কথা বলে৷ অথচ সে দেশের সরকারই
এই বিল পেশ করে এবং পাশ করিয়ে, সংবিধান- পরিপন্থী কাজ করছে।”
এর আগে অসমে NRC নিয়েও USCIRF সমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলো৷ ঠাণ্ডা মাথায় ভারতীয ভাবে মুসলিমদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে সেইসময় দাবি করেছিল তারা। নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ওই সংগঠন। তাদের বক্তব্য, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মের পরীক্ষা নিচ্ছে ভারতীয় সরকার৷ এর ফলে কয়েক কোটি ভারতীয় মুসলিম নাগরিকত্ব হারাবে।”

এদিকে USCIRF-এর এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক।বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার টুইটারে লিখেছেন, “USCIRF-এর দাবি সম্পূর্ণ ভুল, পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য করা হচ্ছে ৷ বিলটি সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজও নেয়নি ওরা। তাছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে
হস্তক্ষেপের কোনও অধিকারও নেই USCIRF-এর।”

দশ বছর আগে, UPA আমলেও বার বার
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তৃতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে জানানো হয়েছিল। এমনকি, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে ভারতে আসতে চাইলে, USCIRF-কে ভিসার আবেদনও নাকচ করে দেয় তৎকালীন সরকার।
তবে মার্কিন সরকার USCIRF রিপোর্টকে অসম্ভব গুরুত্ব দেয়।

Previous articleবাংলা ডাকলেই ফিরবেন যৌবনের উপবনে, আবেগাপ্লুত অভিজিৎ
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ