কে ঠিক কে ভুল? এনআরসি ইস্যুতে মোদি-শাহর দুই অবস্থানে প্রশ্ন উঠবেই

নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে যা বলেছেন, আক্ষরিক অর্থেই তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বক্তব্যের একশো আশি ডিগ্রি উল্টো। মোদি স্বয়ং বললেন, এনআরসি নিয়ে কোনও নিয়মও তৈরি হয়নি, কোনও আলোচনাও হয়নি। সারা দেশে এনআরসি চালুর বিষয়ে কোনও ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও এটা নিয়ে মিথ্যা প্রচার ও আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এনআরসির ভাবনা ছিল কংগ্রেসের, বিজেপির নয়। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল বলেই অসমে এনআরসি হয়েছে আদালতের তত্ত্বাবধানে। গোটা দেশে এনআরসি করার আলোচনা এযাবৎ কোথাও শুরুই হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে মান্যতা দিলে বলতেই হচ্ছে, 130 কোটি ভারতবাসীর সামনে এনআরসি উদ্বেগ আপাতত আর নেই। কারণ রাজধানীর প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে আজ মোদি যা বললেন তা থেকে সরে আসা 2024 সালের মধ্যে তাঁর পক্ষে আপাতভাবে অসম্ভব। আর ভারতের সংসদীয় কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী পদটিই সর্বোচ্চ। তিনিই ক্যাবিনেটের শীর্ষ পদাধিকারী। অতএব তিনি আজ যা বললেন সেটাই ভারত সরকারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান বলে ধরে নেওয়া যায়।

কিন্তু কথা হল, এতে কি সংশয় আদৌ কাটল? প্রশ্ন কি আদৌ বন্ধ হল? নাকি এনআরসি ইস্যুতে সরকারের অঘোষিত দু’নম্বর ব্যক্তি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত দুমাস ধরে প্রত্যয়ের সঙ্গে যা বলে চলেছিলেন তাকে প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে খারিজ করে বিশেষ কোনও ‘বার্তা’ দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী? অথচ এই অমিত শাহই তো বলে আসছিলেন গোটা দেশেই এনআরসি হবে এবং তা করা হবে 2024-এর মধ্যেই। তাহলে আজ মোদি যে বললেন এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনাই শুরু হয়নি তা কি সঠিক? নাকি জল মাপার পর পরিস্থিতি অনুকূল নয় বুঝে নিজের দ্বিতীয় টার্মে দেশজোড়া এনআরসি করার ঝুঁকি নিতে চাননি মোদি? তাঁর আজকের ঘোষণার পর অমিত শাহর পরবর্তী প্রতিক্রিয়াতেই বোঝা যাবে বিজেপি দল ও সরকারের মধ্যে সমন্বয়ে গুরুতর কোনও ফাঁক তৈরি হল কিনা। কারণ অমিত শাহ এখনও বিজেপির সভাপতিও বটে।

 

Previous articleনাড্ডার মিছিলে শোভনকে হাজির করানোর মরিয়া চেষ্টা চলছে বিজেপি-তরফে
Next articleগান্ধী নাম নিয়ে কটাক্ষ, আক্রমণ শতাব্দী প্রাচীন দলকেও