কোন্ পথ খোলা রাখতে নতুন দলকে মদত দিচ্ছেন মুকুল?

দিল্লি নির্বাচনে লড়তে নির্বাচন কমিশনের ছাড়পত্র পেয়েছে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস। চিহ্ন আপেল।

তারপর থেকে জল্পনা শুরু।

দলটির সভাপতি অমিতাভ মজুমদার। তিনি বাগুইআটির বাসিন্দা। দলের ঠিকানা কোচবিহারে। যেখানে আপাতত বিজেপির প্রভাব যথেষ্ট।

প্রশ্ন হল হঠাৎ এই জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দিল্লির নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ঢুকল কেন? কেনই বা অমিতাভবাবু দিল্লিতে বসে থেকে এসব বন্দোবস্ত করছেন?

উল্লেখ্য, তৃণমূলের সঙ্গে মুকুল রায়ের দূরত্ব তৈরির সময়েই মুকুলঘনিষ্ঠ অমিতাভ মজুমদারকে সামনে রেখে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল গড়ার কাজ শুরু। সকলেই বলতেন, মুকুল পিছন থেকে নতুন মঞ্চ তৈরি রাখছেন। কারণ এখানে সকলেই তখন মুকুলশিবিরের ছিলেন। অমিতাভবাবু রাজ্য সভাপতি হন।

পরে মুকুল সরাসরি বিজেপিতে যান। এই শিবিরের কেউ কেউ তৃণমূলে থেকে যান। অমিতাভবাবুর সঙ্গে মুকুলের দূরত্ব হয়। অমিতাভবাবু তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাঁর একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে পার্থবাবুও যান। কিন্তু তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে অমিতাভবাবুকে কাছে রাখেনি বা রাখতে চায় নি।

এই সময়ে মুকুল রায়ের সঙ্গে আবার যোগাযোগ বাড়ে অমিতাভর। তাঁর আরেক ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী দত্ত বিজেপিতে গেলে অমিতাভ আরও প্রভাবিত হন।

দূরত্বের সময় মুকুলশিবির অমিতাভর হাত থেকে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল ছিনিয়ে নিতে যায়। অন্য একজনকে সভাপতি করে। পরে মুকুল-অমিতাভ বৈঠকের পর এই সমস্যা মেটে।

রাজনীতিতে ছোট দল নতুন নয়। এদের প্রভাবও কম। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে মুকুলঘনিষ্ঠ বা সব্যসাচীঘনিষ্ঠ অমিতাভ কেন দলটিকে নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়লেন? হঠাৎ দিল্লিতেই বা প্রার্থী দিতে চললেন কেন? এটা একেবারেই স্বাভাবিক নয়। বর্ষীয়ান অমিতাভবাবুর সঙ্গে বাম-কং সম্পর্ক ভালো। তাহলে কি জাতীয়তাবাদীকে সামনে রেখে কোনো অঙ্ক কষবে কোনো মহল?

একটি সূত্র বলছে, পিছনে মুকুল। বিজেপির পক্ষে উল্টোশিবিরের ভোট কাটার খেলায় এই দল ব্যবহৃত হবে। কেউ বলছেন বিজেপি যদি মুকুলকে যোগ্য জায়গা না দেয় তাহলে এই দল নিয়ে বাম-কং জোটে যাবেন। কেউ বলছে বিজেপির সাহায্যে বিটিম হিসেবে এই দল খেলবে। আবার মুকুলশিবির বলছেন এসব ভিত্তিহীন। মুকুল মন দিয়ে বিজেপি করছেন। আর কিছু না। তখন এই প্রশ্নটা আসছে, বিজেপিই এই নতুন দোকান খুলে রাখার রণকৌশল নিচ্ছে না তো? মুকুল এবং অমিতাভ, দুই শিবিরই অস্বীকার করছেন।

দিল্লিতে কারা প্রার্থী? বাগুইআটির বর্ষীয়ান অমিতাভ তাদের চিনবেন কী করে? সূত্রের খবর, ভোট কাটাকুটির জন্য এলাকা ধরে কিছু প্রার্থী এই দলেরশহয়ে দাঁড় করাবে অন্য শক্তি। পরীক্ষা সফল হলে পশ্চিমবঙ্গেও তার প্রয়োগ হবে। পুরভোটে প্রার্থী দেবেন অমিতাভবাবুরা। মূলত তৃণমূলের গোষ্ঠীবাজিকে কাজে লাগিয়ে এই প্রার্থী দেওয়া হবে। সংখ্যালঘু এলাকায় বিজেপির নিজেদের প্রার্থীর উপর জোর না দিয়ে জাতীয়তাবাদী তৃণমূলের প্রার্থী দেওয়া হবে। মূলত এইসব ছক মাথায় রেখেই খেটেখুটে ভোটে লড়ার অনুমতি ও প্রতীক করা হল। নির্বাচন কমিশনে মুকুলের অবাধ যাতায়াত। তাই এতেও পিছনে মুকুলকে দেখছেন অনেকে। মুকুলশিবির যতই অস্বীকার করুক না কেন, জল্পনা চলছেই।

Previous articleসিএএ নিয়ে প্রথম কোনও রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে
Next articleদেবের বিয়ের কার্ড!