ট্যানারির বর্জ্যের দেদার ব্যবহার সব্জি-মাছ-মুরগিতে, বাড়ছে ক্যানসারের আশঙ্কা

বানতলা চর্মনগরীর কাছে বর্জ্য থেকে তৈরি জৈব সারের মাধ্যমে ক্রোমিয়াম, নিকেল, লেডের মতো ভারী ধাতুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের দেহে।এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।অভিযোগ, মাছ-মুরগির খাবার হিসেবেও দেদার ব্যবহার হচ্ছে চামড়ার ছাঁটজাত বিষাক্ত দ্রব্য।যা থেকে ক্যানসার ছড়াচ্ছে। ভাঙড়-১ ব্লকের বৈরামপুরে বেআইনি ভাবে চলা এই সব ট্যানারির কারখানাগুলি মাঝেমধ্যে প্রশাসনিক অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর ফের সেগুলি বহাল তবিয়তে চলতে থাকে। ভাঙড় ১-র বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘এর আগেও আমরা অনেক ট্যানারি বন্ধ করেছি। এর পরেও যে সব কারখানা লুকিয়ে-চুরিয়ে চলছে, তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে অভিযান চালাব।’
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক আধিকারিক বলেছেন ‘অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। আজই বারুইপুরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা হয়েছে। পর্ষদ-পুলিশ অভিযান চালাবে।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক তড়িৎ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, সুন্দরবনের মাটি এবং ধানে অত্যন্ত ক্ষতিকারক ক্রোমিয়াম মিলেছে। ট্যানারিই এর অন্যতম উৎস।পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতেও লেড, ক্রোমিয়াম, নিকেল মিলেছে বলে দাবি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের। দীর্ঘ দিন ধরে বৈরামপুরের চামড়া সেদ্ধ করে সার তৈরির কাজে কয়েক হাজার মানুষ যুক্ত।ওই শ্রমিকদের অবশ্য দাবি, এই পদ্ধতিতে তৈরি সার সব্জি ফলনে, মুরগী-মাছের খাবার হিসেবে খুব ভালো। কিন্তু তা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত?
রাজ্যের ফরেন্সিক সায়েন্স মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ট্যানিং এবং রঙের কাজে লেড, ক্রোমিয়াম ব্যবহার হয়। দেখা দরকার, যে বর্জ্য থেকে সার তৈরি হচ্ছে তাতে ওই মৌলগুলোর উপস্থিতি কতটা। কোন পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে? দেখা দরকার সার তৈরির পর তরল রাসায়নিক কী ভাবে এবং কোথায় ফেলা হচ্ছে? চামড়া জৈব পদার্থ, তা সেদ্ধ করে জৈব সার তৈরি হতেই পারে। সেদ্ধ করলে বিষাক্ত রাসায়নিক অনেকটা বেরিয়েও যায়। কিন্তু আবার সেই রায়াসনিক মিশছে চামড়া সেদ্ধ করার জলে।ফলে যেখানে জল ফেলা হচ্ছে, সেখানেও দূষণ ছড়াচ্ছে।

Previous articleঅনলাইন শপিং সাইট মেতেছে CAA- NRC-র পক্ষে-বিপক্ষের টি-শার্ট নিয়ে
Next articleচুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বাজেটের আগে সুখবর শোনাল সুপ্রিম কোর্ট