প্রেস ক্লাবে একঝাঁক সাংবাদিকের সম্বর্ধনা পেয়ে আপ্লুত দিলীপ

সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সম্বর্ধনা দিলেন একঝাঁক সাংবাদিক। এই সম্মান পেয়ে আপ্লুত দিলীপ ঘোষ। মূলত, দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্য বিজেপি সভাপতি মনোনীত হওয়ার জন্য তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে দিলীপবাবুকে উত্তরীয় এবং তলোয়ার খাপে কলম দিয়ে সম্মান জানানো হয়।

এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রেস ক্লাবের মতো ঐতিহাসিক জায়গায় এসে খুব ভালো লাগছে। আমার কোনও রাজনৈতিক গুরু নেই। আমি মাঠে নেমে রাজনীতি শিখছি। রাজনীতিবিদরা সাধারণত সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলে। কিন্তু মিডিয়ার লোকেরা আমার বন্ধু। তাই আমি মনে করি, যদি কিছু শিখতে হয়, তাহলে সাংবাদিকদের কাছেই শেখা উচিত। তাঁরা অনেক ঘটনার সাক্ষী। রাজনীতিকরা মুখে এক কথা বলেন, আর কাজে অন্য। আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে সুখ-দুঃখ, হাসি-ঠাট্টা, গল্প করি। তাঁদের থেকেই শিখি।”

এরপরই প্রশ্ন-উত্তর পর্বে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “অনেকদিন পর মুখ্যমন্ত্রী ছবি আঁকার সুযোগ পেয়েছেন। আসলে মানুষ যখন হতাশ হয়, তখন গান শুনে, গিটার বাজিয়ে, ছবি এঁকে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেন। সেটাই করছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষ পাশে নেই। তাই কিছু বুদ্ধিজীবী আর শিল্পীদের নিয়ে ঘুরছেন। আসলে উনি একজন ব্যর্থ প্রশাসক। কোনও প্রশাসনিক কাজ নেই, তাই ছবি এঁকে বেড়াচ্ছেন।”

তৃণমূলের ছাত্র-যুব সমাবেশ নিয়েও কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের পাশে তাঁর দলের ছাত্র-যুবরাও নেই। কারণ, তারা এই আন্দোলনকে দেশবিরোধী মনে করছে। তাই নেতাজি ইন্ডোরের চার ভাগের একভাগও ভর্তি হয়নি। দলের যুব নেতাকে নিয়েও মারাত্মক মন্তব্য করেছেন। তার নাকি মাথায় সমস্যা। আসলে ওনাদের সকলেরই মাথার সমস্যা। ওই জন্যই তো যুবনেতা বক্তব্য না রেখে চলে গিয়েছে।”

পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল বাড়াবাড়ি করলে বিজেপিও ছেড়ে কথা বলবে না বলে হুঙ্কার দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যালট তত্ত্বাকে উড়িয়ে দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছেন ইভিএম-এ। আসলে উনি ইভিএমে জিতলেই ব্যালট, আর ব্যালটে হারলে ইভিএম বলেন।”

মোদি-শাহের রাজ্য গুজরাতে এবিভিপি হেরেছে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোটের ফল ভারতের রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলে না। এই তো JNU-তে দীর্ঘদিন ধরে বামেদের ছাত্র সংগঠন জিতে আসছে, কিন্তু দিল্লিতে ওদের কটা কাউন্সিলর? আমি তো পার্লামেন্টে গিয়ে লাল খুঁজে বেড়াই।”

শাহিনবাগের আন্দোলনকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, “শুনেছি ৫০০ টাকা রোজ দিয়ে ওখানে লোক নিয়ে আসা হচ্ছে। সব নাটক চলছে। ভারতবর্ষে ১৩৪ কোটি মানুষের মধ্যে ৩৪ লক্ষ মানুষও আন্দোলন করছে না। কিন্তু দেখানো হচ্ছে, এটা গোটা দেশের আন্দোলন।”

চিঁড়ে খাওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমি ছোট থেকে চিঁড়ে খেয়েই মানুষ হয়েছি। এটা যার যার নিজের মন্তব্য। সবাই সকলের মতো কথা বলেন। আমিও বলি।”

Previous articleদ্বিতীয় সন্তানকে বড় করতে না চাওয়াতেই খুন, জেরায় স্বীকার মায়ের
Next articleঅভিজিৎ-মুখ্যমন্ত্রী সাক্ষাতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ নোবেলজয়ীর