সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে দেব সাহিত্য কুটীরের “সাহিত্য সম্মান” ও বিতর্ক সভায় জমজমাট রবিবাসরীয় বইমেলা

এ বছর বইমেলার প্রথম রবিবারটি জমিয়ে দিলো ঐতিহ্যবাহী দেব সাহিত্য কুটীর। বর্ষীয়ান সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া হলো “সাহিত্য সম্মান”। একইসঙ্গে তাঁর হাত দিয়ে বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় সাহিত্যিকের বই প্রকাশ করল দেব সাহিত্য কুটীর। এই সম্মান পেয়ে অভিভূত সঞ্জীববাবু। এদিনের অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর শৈশব ও কৈশোর জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা নতুন প্রজন্মের লেখক-সাহিত্যিকদের সামনে তুলে ধরেন। মূলত, রক্ষণশীল পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় কীভাবে সাহিত্য চর্চা শুরু করলেন, সেটাও সকলকে গল্পের ছলে শোনালেন। তাঁদের সময় পাঠ্য পুস্তকই ছিল শেষ কথা। পরিবারের সকলকে লুকিয়ে-চুরিয়ে তৎকালীন লেখকদের বই কেমনভাবে তিনি পড়তেন এদিন সেটাও জানালেন বর্ষীয়ান সাহিত্যিক।

এদিন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে “সাহিত্য সম্মান” জানানোর দেব সাহিত্য কুটীর SBI অডিটোরিয়ামে একটি বিতর্ক সভার আয়োজন করেছিল। যেখানে বিষয়েও উপর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিকরা। বিতর্কের বিষয়বস্তু ছিল, সাহিত্যে “প্রেম-রাজনীতি-বাস্তব” বনাম “অলৌকিক-থ্রিলার”। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণ যোগ্যতা পাঠকদের কাছে বেশি। “প্রেম-রাজনীতি-বাস্তব”-এর পক্ষে ছিলেন দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য, বিনোদ ঘোষাল ও হিমাদ্রি কিশোর দাশগুপ্ত। অন্যদিকে “অলৌকিক-থ্রিলার”-এর পক্ষে ছিলেন অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী, রূপক সাহা ও কুণাল ঘোষ। বিতর্ক সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সাহিত্যিক অনীশ দেব অবশ্য শুরুতেই “সৎ” সাহিত্য এবং “অসৎ” সাহিত্য তত্ত্বখাড়া বিতর্ককে কিছুটা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেই নিজেদের যুক্তি দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তাঁদের বক্তব্য রাখেন।

শেষ বক্তা হিসেবে বিতর্ক সভা জমিয়ে দেন সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। তাঁর সংক্ষিপ্ত কিন্তু ক্ষুরধার-যুক্তিগ্রাহ্য বক্তব্য দর্শকদের মন জয় করে নেন। বিতর্কি সভায় কুণাল ঘোষ নিজের যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতবিতান থেকে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট ব্যোমকেশ এবং চলচ্চিত্রে সেই চরিত্রগুলির পরিবর্তনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। যা উপস্থিত সকলে উপভোগ করেন।

সব মিলিয়ে ৪৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রথম রবিবাসরীয় সন্ধ্যা জমিয়ে দিয়েছিল দেব সাহিত্য কুটীরের এই জমকালো অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন হেরিটেজ তকমা পাওয়া দেব সাহিত্য কুটীরের কর্ণধার রূপা মজুমদার।

Previous articleযোগীর রাজ্যেই খুন হলেন বিশ্ব হিন্দু মহাসভার সভাপতি
Next articleকরোনাভাইরাসে ফিলিপিনসে মৃত্যু, চিনের নাগরিকদের অনলাইন ভিসা বন্ধ করল ভারত