করোনা সংক্রমণে ভারত এখন ‘স্টেজ টু’-তে, এর অর্থ কী?

চিনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা বিশ্বে নতুন করে ১৩,৯০৩ জন COVID-19 ভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। বর্তমানে মোট ১,৬৭,৫১১ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে বলেও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। WHO জানিয়েছে, গোটা দুনিয়ায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬,৬০৬ জন।
গোটা বিশ্বের মতো ভারতেও COVID-19-এ আক্রান্তের সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২-এ৷ মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বর্তমানে বিশ্বের যে সমস্ত দেশে ওই মারণ ভাইরাস থাবা বসিয়েছে সেই তালিকায় “স্টেজ টু”-তে রয়েছে ভারত। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ বা ICMR বলেছে, “দ্বিতীয় পর্যায় মানে এই পরিস্থিতিতে ভাইরাসটি কোথা থেকে ছড়াচ্ছে সে সম্বন্ধে একটি ধারণা পাওয়া গিয়েছে৷ তার ফলে, করোনা’র সঙ্গে লড়াই করা অনেকটা সহজ হয়েছে৷

ICMR-এর ডিরেক্টর বলরাম ভার্গব বলেছেন, “বর্তমানে এ দেশে করোনা- ভাইরাসের কোনও কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সম্প্রদায়ভিত্তিক সংক্রমণ নেই। WHO বলেছে, ভারত এখন ২য় পর্যায়ে আছে। অর্থাৎ আমরা এখন তৃতীয় পর্যায়ে নেই। তৃতীয় পর্যায় হচ্ছে ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’ বা সম্প্রদায়ভিত্তিক সংক্রমণ, মানে, কোনও একটি বিশেষ সম্প্রদায় থেকে ওই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে”। এটা মারাত্মক৷” তিনি বলেছেন, “আমরা আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলিতে কতখানি নজর রাখতে পারছি বা সেখান থেকে বহিরাগতদের দেশে প্রবেশ রুখতে পারছি, তার উপরেও নির্ভর করছে অনেক কিছু। এই বিষয়ে সরকার অত্যন্ত সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সম্প্রদায়ের সংক্রমণ ঘটবে না”৷

|| করোনা-সংক্রমণের ৪টি স্টেজ||

◾স্টেজ ওয়ান: সংক্রামিত দেশগুলি থেকে এই ধরণের রোগী দেশে প্রবেশ করে৷ এক্ষেত্রে যারা বিদেশ ভ্রমণ করেছেন কেবল তাঁদেরই ইতিবাচক পরীক্ষা করানো হয়।

◾স্টেজ টু: যখন আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, যারা বিদেশ ভ্রমণ করেছেন তাদের আত্মীয় বা পরিচিতজনের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। স্থানীয় সংক্রমণে কম লোক আক্রান্ত হয়। কেননা ততক্ষণে ভাইরাসটির উৎস জানা যায় ফলে এর সঙ্গে লড়াই করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ভারত এখন এই পর্যায়ে আছে৷

◾স্টেজ থ্রি: যখন এই রোগ কোনও সম্প্রদায়গত ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং বৃহত্তর অঞ্চলের মানুষ সংক্রামিত হয়। সম্প্রদায়ের সংক্রমণ তখনই হয় যখন কোনও রোগী কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসা সত্ত্বেও বা আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে কোনও একটি দেশে সফর না করা সত্ত্বেও তাঁর শরীরে ওই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। এই পর্যায়ে, আক্রান্তদের শরীরে কোথা থেকে এই ভাইরাস এসেছে তা সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। যেমন, ইতালি এবং স্পেন রয়েছে স্টেজ থ্রিতে।

◾স্টেজ ফোর: এটা সবচেয়ে খারাপ পর্যায়, যখন এই রোগটি কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই মহামারীর আকার ধারণ করে। চিনে এই ঘটনাই ঘটেছে।

আরও পড়ুন-করোনা-তোপে কাহিল এবার ভারতীয় সেনাও

Previous articleপাহাড়েও করোনা আতঙ্ক, পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা জিটিএ-র
Next articleআমলা-পুত্রের কীর্তি, ক্ষোভ ঢেকে রাখলেন না মুখ্যমন্ত্রী