বান্দ্রার পর এবার পালঘরে দুই সাধু সহ তিনজনকে পিটিয়ে খুন: প্রশ্নের মুখে উদ্ধব সরকারের ভূমিকা

লকডাউনের মধ্যেও একের পর এক আইনভঙ্গের ঘটনায় বেআব্রু মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে সরকারের ভূমিকা। লকডাউন অমান্য করে স্রেফ গুজবের ভিত্তিতে নানা ঘটনা ঘটছে আর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শুধু তদন্তের আশ্বাস দিয়ে দায় সারছেন। কয়েকদিন আগে মিথ্যা গুজবের ভিত্তিতে মুম্বইয়ের বান্দ্রায় লকডাউন অমান্য করে কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের জমায়েত নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ঘটল আরেক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। মহারাষ্ট্রের পালঘরে চুরির গুজবের জেরে কয়েকশো গ্রামবাসী পুলিশের সামনেই দুই সাধু ও তাঁদের ড্রাইভারকে ঘিরে ধরে পিটিয়ে মেরে ফেলল। গত ১৬ এপ্রিল এই বীভৎস ঘটনা ঘটলেও তা ধামাচাপা দিতে তৎপর হয় প্রশাসন। এরপর রবিবার এই ঘটনা জানাজানি হতেই সমালোচনার ঝড়। পুলিশ ও প্রশাসনের ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে ফোন করে দুই সাধু সহ তিনজনের গণপিটুনি ও হত্যার ঘটনায় চরম অসন্তোষ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লকডাউনের মধ্যে একের পর এক গুজব ও আইনভঙ্গের একাধিক ঘটনা সামলাতে না পারায় তোপের মুখে শিবসেনা জোট সরকার।

চাপের মুখে সোমবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পালঘরে দুই সাধু ও তাঁদের গাড়ির চালককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় কোনও সাম্প্রদায়িক বিষয় নেই। ভুল করে চোর ভেবে তাঁদের পিটিয়ে মেরেছে গ্রামবাসীরা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনায় শতাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান উদ্ধব।বলেন, তিনি নিজে এই তদন্তের বিষয়ে নজর রাখবেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে মুম্বই থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে মহারাষ্ট্রের পালঘরে দাদরা ও নগর হাভেলি সীমানার গাঢ়চিনচালে গ্রামে চোর ঢোকার গুজব ছড়ায়। এমনকি, চোরেরা শিশুদের কিডনি কেটে নিয়ে পাচার করে দিতে পারে বলেও রটে যায় পুরো গ্রামে। আরও রটে যায় যে, চোরেরা গ্রামের মধ্যেই রয়েছে। এই অবস্থাতেই গ্রামবাসীরা সামনে পেয়ে যায় দুই সাধু এবং তাঁদের গাড়ির চালককে। তাঁদেরই চোর ভেবে নৃশংসভাবে মারধর শুরু করে গ্রামবাসীরা। পুলিশ ওই তিন জনকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশের সামনেই বাঁশ-লাঠি দিয়ে পেটানো হয় তিন জনকে। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। বেআব্রু হয়েছে প্রশাসনিক অপদার্থতা।

 

Previous articleপৃথিবীর এখন গভীর অসুখ, তোমার ওখানে কি সূর্য উঠছে!
Next articleরাতভর বৃষ্টিতে ভিজল দক্ষিণবঙ্গ, মঙ্গলেও ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস