আর্থিক সাহায্য দিয়ে লজেন্স মাসি ও প্রয়াত সমর্থকের পরিবারের পাশে ইস্টবেঙ্গল রিয়াল পাওয়ার

করোনা মোকাবিলা ও লকডাউন পর্বে আরও অনেকের মতই ভীষণ আর্থিক অনটন ও সমস্যায় আছেন ইসবেঙ্গল ক্লাবের বেশকিছু অতি পরিচিত সমর্থক।

সেইসূত্রেই খোঁজখবর করতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গল অন্তপ্রাণ ময়দানে লজেন্স মাসি হিসেবে পরিচিত যমুনা দাস ও প্রয়াত কার্তিক দাসের পরিবারের অনটনের কথাও জানতে পারে লালহলুদ ফ্যান ক্লাব “ইস্টবেঙ্গল রিয়াল পাওয়ার (EBRP).” তৎক্ষনাৎ EBRP সিদ্ধান্ত নেয়, সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও যতটুকু সম্ভব, ওই অসহায় সমর্থকদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে।

EBRP পরিবারের মুখেই শুনুন তাদের সেই কর্মসূচির কথা–

“আমাদের কাছে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, যমুনাদি এবং কার্তিকদাকে সাহায্যের যে প্রতিশ্রুতি EBRP থেকে করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অর্থসংগ্রহের জন্য কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা UPI Payment এর অপশন আমরা দিচ্ছি না কেন?

দু’সপ্তাহও হয়নি, EBRP থেকে ইস্টবেঙ্গলি জনতার মাধ্যমে আমরা মাত্র ৯৬ ঘন্টায় ৭১,৯৭১টাকা সংগ্রহ করেছি এবং ৩৬ হাজার টাকা PM CARES আর ৩৬ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ফান্ডে জমা করেছি।

এই পুরো ব্যাপারটাই সম্ভবপর হয়েছে আমাদের সমগ্র লাল-হলুদ পরিবার অকুন্ঠভাবে এগিয়ে আসায়।

করোনার প্রকোপে বিশ্বজুড়েই আর্থিক মন্দার আভাস। আমাদের সবার মধ্যেই এক অজানা আশঙ্কা ঘনীভূত হতে শুরু করেছে, আগামীদিনের কথা ভেবে।

এরমধ্যেই আবার আমরা হালিশহরের ১০০-টি দরিদ্র পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, মাস্ক ও স্যানিটাইজার পৌঁছোয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তার জন্য প্রয়োজনীয় পুরো অর্থই শুধুমাত্র EBRP’র আভ্যন্তরীণ সদস্যদের থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছিলো।

এমতাবস্থায় আমরা যখন যমুনাদি এবং কার্তিকদার পরিবারের কষ্টের কথা শুনলাম, সত্যি বলতে আমরা দ্বিধাবিভক্ত ছিলাম – কিভাবে আবার প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান হবে? আবার বৃহত্তর ইস্টবেঙ্গল জনতার কাছে চাইবো? EBRP সাধারণ সমর্থকদের ফোরাম। আমাদের অসম্ভব ভালোবাসেন তাঁরা। যমুনাদি ও কার্তিকদার পরিবার ইস্টবেঙ্গলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, তাঁদের জন্য EBRP অর্থসাহায্য চাইলে মানুষ হয়তো না করবেন না, কিন্তু এই লকডাউন এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার বাজারে, সত্যি বলতে, আপনাদের কাছে আরেকবার যেতে আমাদের দ্বিধা হচ্ছিলো।

তাই EBRP’র কার্যকারী সমিতির সদস্যরা মিলে ঠিক করা হয় যে, এবারের মতো আমরা যা পারবো, অর্থাৎ EBRP তার নিজের আভ্যন্তরীণ সদস্যদের থেকে, সেইটুকু অর্থই যোগাড় করবো; মানুষের কাঁধে আর আর্থিক বোঝা চাপাবো না।

ঈশ্বরের কৃপায় আর আপনাদের আশীর্বাদে, এবারেও আমরা শুধুমাত্র EBRP’র আভ্যন্তরীণ সদস্যদের মধ্য থেকেই মাত্র ১২ ঘন্টায় ২৫,৬৩২ টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। সেই অর্থ থেকে ১২ হাজার টাকা করে মোট ২৪ হাজার টাকা যমুনাদি এবং কার্তিকদার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি অর্থ দিয়ে কার্তিকদার পরিবারের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছি আমরা”।

EBRP আরও একবার সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তাদের এই মহৎ উদ্যোগকে সফল করার জন্য। তারা আশাবাদী,অচিরেই এই সমস্ত দুর্যোগ কেটে যাবে, এবং সবাই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবো। কলকাতা ময়দানও ফিরে আসবে তার চেনা ছন্দে।

Previous articleগানের কলিতে মাহির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ব্রাভো
Next articleBreaking : ২৭শে ফের মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক