ভুল ফোনের মাসুল, ৬০বছরের বৃদ্ধাকে বিয়ে করতে বাধ্য হল কিশোর

ফোনটা চলে গিয়েছিল ভুল নম্বরে।  অন্য প্রান্তে যিনি ফোনটা ধরেছিলেন, তাঁর গলার  স্বরের মাদকতায় মজে গিয়েছিল বছর পনেরোর কিশোর।  এরপর প্রায়ই কথা হতে থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। ফেসবুক থেকে ম্যাসেঞ্জার, ধীরে ধীরে হোয়াটসঅ্যাপে গান,  অন্যান্য তথ্য আদানপ্রদান শুরু হয়। ফোনের অন্যপ্রান্তের মহিলা কন্ঠের প্রেমে পড়ে যায় কিশোরটি। মহিলা শুধুমাত্র প্রেমের প্রস্তাব রাজি না হয়ে, শর্ত দেয় যে বাড়িতে এসে সরাসরি অভিভাবককে দিতে হবে বিয়ের প্রস্তাব। এমনকি তবেই মিলবে দেখা করার সুযোগ । প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া কিশোর  তাতেই রাজি হয়ে যায়।
বরপেটা জেলার সুখারচর গ্রামে প্রেমিকার বাড়িতে পৌঁছতেই সে পায়  উষ্ণ অভ্যর্থনা। জমিয়ে পেটপুজো হলেও সহজে প্রেমিকার দেখা পায়নি সে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথার বলার ফাঁকে  কিশোরের চোখ খুঁজছিল ‘তাঁকেই’। বাড়ছিল বুকের ধুকপুকানিও। শেষ পর্যন্ত এক হাত ঘোমটা টেনে প্রেমিকা দেখা দিলেও মুখ দেখতে পায়নি কিশোর। ঘোমটা সরাতেই চক্ষু চড়কগাছ! প্রথমে তো বুঝতেই পারেনি, ‘ইনি প্রেমিকা না প্রেমিকার মা!’ ভুল শুধরে যায় কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই। আরে এ তো ৬০ বছরের এক  বৃদ্ধা! এরই সঙ্গে এতদিন কথা বলেছে সে, বিশ্বাসই করতে পারছিল না ওই কিশোর। পালিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি।
প্রেমিকার পরিবার ধরেবেঁধে বিয়ে দিয়ে দেয় তাদের। মায়ের থেকেও বয়সে বড় মহিলাকে বউ করে বাড়িতে আনে ওই কিশোর। কিন্তু পরিবার তা মানতে নারাজ।
সুখারচর গ্রামের টালির চালের ওই বাড়িতে এখন তিল ধারণের জায়গা নেই। আশেপাশের গ্রাম থেকেও মানুষ আসছেন নতুন বউকে দেখতে। লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছে কিশোর। এই বিয়ে কোনওভাবেই মেনে নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কিশোরের পরিবার।  স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করছে পুলিশ। কিশোরের বয়স পনেরো বছর হওয়ায় আইনত সুবিধা পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মিস্ত্রির কাজ করা ওই কিশোর আদতে কাজের স্বার্থেই বঙ্গাইগাঁওতে এক বন্ধুকে ফোন করতে গিয়েছিল, আর তাতেই জীবনে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার।

Previous articleকরোনা মোকাবিলা: দিশা দেখাচ্ছে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
Next articleকবে দেওয়া হবে জয়েন্ট, নিট পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড?