ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে আইসিসি-র সঙ্ঘাত চরমে, ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত সৌরভরা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে এই লকডাউনের সময়ে ক্রিকেট সঙ্কটের মুখে।
অধিকাংশ দেশের ক্রিকেট বোর্ড
ভারতীয় বোর্ডকে সামনে রেখে বৈতরণী পার হতে চাইছে । কিন্তু
আইসিসি প্রধান হিসেবে শশাঙ্ক মনোহরের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময়েই ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে আইসিসি-র সঙ্ঘাত তীব্রতর হয়ে উঠেছে।
অস্ট্রেলিয়া চাইছে, বিরাট কোহালিরা তাদের দেশে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলুক। কোহালিদের সফরের সম্পূর্ণ সূচিও প্রকাশ করেছে তারা। দক্ষিণ দক্ষিণ আফ্রিকা আগামী অগস্টে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাদের দেশে ভারতকে চায়। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেট দল সফরে গেলে অনেকটাই কোষাগার ভরার সম্ভাবনা।
ভারতীয় বোর্ডের অভিযোগ, আইসিসি নতুন প্রথায় প্রত্যেক দু’বছর অন্তর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ করতে চায় । এবার পর-পর দু’বছরে দু’টি কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ রাখা হয়েছে। ভারতীয় বোর্ডের অন্দরে অভিযোগ
, আইপিএলকে প্রতিযোগিতায় ফেলতেই এত ঘন-ঘন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করতে চাইছে আইসিসি।
ভারতীয় বোর্ড তাই পাল্টা যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিতে চাইছে । আইসিসির অভিযোগ , ভারতীয় বোর্ডের ভিতর থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে খবর ফাঁস করা হচ্ছে। গোপন ই-মেল প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে । অস্ট্রেলিয়ার পাঠানো ই-মেল ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়েে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিয়ামক সংস্থার এথিক্স অফিসারকে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে এই তদন্ত আদৌ করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে । কারও কারও বক্তব্য, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে টালবাহানা করছে আইসিসি ।
তাদের যুক্তি, স্পেনে লা লিগা, ইংল্যান্ডে ইপিএল বা জার্মানির বুন্দেশলিগায় খেলা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে। অথচ আইসিসি অযথা সময় নষ্ট করছে। অস্ট্রেলীয়  ক্রিকেট বোর্ড এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, এ বছরে বিশ্বকাপ আয়োজন করা চূড়ান্ত ঝুঁকির বিষয়। তাদের কর্তারা স্পষ্ট কথা, করোনা নিয়ে সারা বিশ্বের এই পরিস্থিতিতে বিশ্বমানের কোনও ইভেন্ট এ বছরে করা সম্ভব নয়।
ভারতীয় বোর্ড কর্তাদের ক্ষুব্ধ হওয়ার সঙ্গত কারণ আছে। বিশ্বকাপ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে তাঁরা আইপিএল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এ বছর বিশ্বকাপ না হলে, নভেম্বরে আইপিএল করার চেষ্টা করবে ভারতীয় বোর্ড। আইপিএল বাতিল হলে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার লোকসান।
অন্যান্য দেশের পথে হেঁটে সৌরভরা এখনও করোনার জন্য চরম পদক্ষেপ করতে শুরু করেননি।ক্রিকেটারেরা চুক্তি অনুযায়ী এখনও টাকা পাচ্ছেন । অন্যান্য দেশ বেতন ছাঁটার পথে হেঁটেছে। কিন্তু আইপিএল না-হলে ভারতীয় বোর্ডও চাপের মুখে পড়বে।
এরই পাশাপাশি , অস্ট্রেলিয়ার নতুন আবেদন, এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাতিল হলে ২০২১ সালে তা করতে চায় তারা। সে ক্ষেত্রে ভারতে ২০২১-এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে ২০২২-এ করতে হবে। আবার ভারতে ২০২৩ সালেই পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ভারতীয় বোর্ড বা টিভি স্বত্ব কেনা ভারতীয় সংস্থা একই দেশে পর-পর দু’বছরে দু’টি বিশ্বকাপ করায় খুব আগ্রহী নয়।
বিশেষজ্ঞদের মত, ১০ জুন পরের আইসিসি বৈঠকে সব ঘুঁটি সাজিয়ে কোমর বেঁধে অংশ নেবে ভারতীয় বোর্ড। ক্রিকেট দুনিয়ার গরিষ্ঠ অংশের সমর্থন পেতে সৌরভরা দশ দিন সময় পাচ্ছেন ।

Previous articleরথযাত্রা স্থগিত: মাহেশের পুজো সম্প্রচার করতে সংবাদমাধ্যমকে আবেদন মন্দির কর্তৃপক্ষের
Next article৪২০ টাকার বিনিময়ে পাস সোনু সুদের, ভাইরাল ছবি