সাতপাকে বাধা ব্যারিকেড, চাঞ্চল্য কোচবিহারে

বিয়ে করার জন্য পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এসেছিলেন পাত্র, সঙ্গে ১৪ দিনের জামাকাপড়। ইচ্ছে ছিল ১৪ দিন শ্বশুরবাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তারপর বিয়ে করে রওনা দেবেন নিজের বাড়িতে। তাঁর স্বপ্নের উপরে জল ঢেলে দিলেন এলাকাবাসী। শেষমেষ তড়িঘড়ি বউ নিয়ে চলে যেতে হল নতুন জামাইকে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের রাজারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে শুধুমাত্র গাড়ির অনুমতি পত্র নিয়ে বিয়ে করতে এসেছিল ত্রিদীপ দাস। স্থানীয় বাসিন্দা ভজনকুমার দত্তের কন্যা পূর্ণিমা দত্তর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা হয়েছিল তাঁর । চৌঠা মে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হলেও লকডাউন এর কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সেই কারণেই অভিনব পদ্ধতিতে লকডাউন মেনে বিয়ে করার ব্যবস্থা কর হয়। সেই মতো পূর্ব মেদিনীপুর থেকে কোচবিহারে যান ত্রিদীপ।১৪ দিন শ্বশুরবাড়িতে থেকে ১৫ দিনের দিন বিয়ে করে বউ নিয়ে ফিরে যাবেন মনস্থির করেন তিনি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা বেঁকে বসায় বাধ্য হয়ে কোনও মতে নববধূকে নিয়ে চলে যেতে হচ্ছে তাঁকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে নিঃশব্দে জামাইকে বাড়িতে নিয়ে আসেন ভজন দত্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভিন জেলা থেকে আসা কোনও ব্যক্তিকে পাড়ায় থাকতে পারবেন না।
ইতিমধ্যেই কোচবিহার জেলায় ৭১ জন সংক্রমিত। এরপরও জোর করে হবু জামাইকে বাড়িতে রাখেন ভজন। রবিবার সকালে তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হন স্থানীয় আশা কর্মী এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। সিদ্ধান্ত নেন, কোনোমতেই বাইরে থেকে আসা ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইন এখানে থাকতে পারবেন না। তাঁকে অতি অবশ্যই চলে যেতে হবে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে। অথবা নিজের জেলায় ফিরে যেতে হবে। শেষমেষ নিজের জেলাতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন হবু জামাই। একই সঙ্গে ভজন দত্ত সহ তাঁর তিনজন পড়শীকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই মতো একটি ঘোষণাপত্র, তাঁদের বাড়িতে লাগানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল হক বলেন, “বিয়েতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, আমরা বলেছিলাম পাড়ায় যাতে না থাকে। এই কথা বাড়ির লোক শোনেনি। একই সাথে সরকারি নির্দেশিকায় তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, অবশ্যই আমরা পাড়ার বাসিন্দারা তাদেরকে সহযোগিতা করব”। ইতিমধ্যেই ঘটনার খবর পৌঁছেছে পুন্ডিবাড়ি থানায়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, এলাকার তিনটি বাড়ির বাসিন্দাদের হোম কোয়ারান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Previous article“ভারতের মর্যাদাহানি হতে দেবে না কেন্দ্র,” লাদাখ প্রসঙ্গে রাজনাথ সিং
Next articleদক্ষিণ ভারতেও পঙ্গপালের হানা, ফসল নষ্টের আশঙ্কা তামিলনাড়ুর কৃষকদের