দক্ষিণ দিনাজপুরের পুরনো নেতা বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে ফিরছেন?

প্রবল ক্ষোভ ও অভিমান নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন পুরনো দিনের তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র। কিন্তু তেলে জলে মিশ খাওয়া কঠিন। তাঁর মন পড়ে সম্ভবত তৃণমূলেই। ফলে শোনা যাচ্ছে, প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বাড়ছে। আর তা নিয়ে দলে ধুন্ধুমার কান্ড।

বিপ্লববাবু তৃণমূলনেত্রীর পুরনো অনুগামী। জেলায় তৃণমূল গঠনের অন্যতম কান্ডারী। পরে আদি বনাম নব গোলমালে তিনি দল ছাড়েন। বিজেপিতে যান। এতে দলের যে শিবির আনন্দে নেচেছিল, তাদের মুরোদ হয়নি লোকসভায় তৃণমূলকে জিতিয়ে আনার। একটা সময় বিপ্লবরা যখন দল করেছিলেন তখন সরকারে বামেরা। পুলিশের সমর্থন তাঁরা পাননি। কিন্তু অভিযোগ, দলের জনভিত্তিহীন একাংশ স্রেফ পুলিশ আর পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করে লাগাম রাখতে চাইছে। অথচ লোকসভায় হেরে ভূত!
এখন সূত্রের খবর, বিপ্লবের দলের ফেরা নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে গোটা জেলার দলীয় কর্মীরা উৎসাহিত। কিন্তু, তৎকাল তৃণমূলি ও পরিযায়ী তৃণমূলের একটি অংশ জমিদারি হারানোর আশঙ্কায় তা ঠেকাতে মরিয়া। এরা নিজেদের বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার বা ফরওয়ার্ড করে কর্মীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
ইতিমধ্যে দল বিধায়ক গৌতম দাসকে কার্যনির্বাহী সভাপতি নিয়োগ করেছে। কার্যনির্বাহী সভাপতি আগেও কেউ কেউ ছিলেন। তাদের সম্পর্কে গোটা রিপোর্ট দলের কাছে আছে। এখন নতুন কার্যনির্বাহী সভাপতি কেন নিয়োগ করতে হয় বা কেন নতুন কাউকে আনতে হল, সকলেই বুঝছেন। গৌতম গঙ্গারামপুরের বিধায়ক। কংগ্রেস থেকে এসেছেন। তাঁর সক্রিয়তায় দলের চলতি ঘাটতি খানিকটা সামলানো যাবে বলে অনুমান।
এদিকে জেলার এক পুলিশকর্তাকে ‘ ব্যক্তিগত সমীকরণে’ দলীয় রাজনীতিতে আনার জল্পনা চলছিল বলেও খবর। এইসব রটনায় জেলায় দলের ষোলআনা ক্ষতি হচ্ছিল।
আপাতত বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ তৃণমূল চান দলের সাধারণ কর্মীরা। কারণ বিপ্লবকে যদি ফিরতে না দেওয়া হয় এবং তিনি বিজেপিতেই থাকেন, তাহলে তৃণমূলের কিছু ক্ষতি তো বটেই। যারা বিপ্লবকে ফেরাতে বাধা দিচ্ছে, তারা দলের শুভানুধ্যায়ী নাকি নিজেদের গোষ্ঠী নিয়েই চিন্তিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার আরেক বর্ষীয়ান নেতা শঙ্কর চক্রবর্তী অবশ্য সকলকে নিয়ে মানিয়েগুছিয়ে চলতে চান বলেই খবর।
ইতিমধ্যেই গোষ্ঠীবাজি ঘিরে জেলায় মারামারি হয়েছে। এক পরিচিত মুখ মহিলা সংগঠক হামলার শিকার। থানাপুলিশ হয়েছে। পুলিশনির্ভর রাজনীতি করা একটি অংশ এসব হামলা করে জেলায় দলটাকে লাটে তুলছে বলে অভিযোগ।
তবে বিপ্লবের দলে ফেরা নিয়ে কলকাতায় দলের তরফে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। জেলা সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ বিপ্লবকে ‘ বিশ্বাসঘাতক’ বলছেন। তিনি চাইছেন না বিপ্লব ফিরুন। এরকমই খবর।

 

Previous articleলোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে হতে পারে যাত্রী-বিক্ষোভ, নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি পূর্ব রেলের
Next articleকরোনা সংক্রমণে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১৩৫