লাদাখ নিয়ে বড় বড় কথা না বলে সেনার পাশে থাকুন, কুণাল ঘোষের কলম

কুণাল ঘোষ

চিন অসভ্যতা করছে। লাদাখে অন্যায় গাজোয়ারি চালাচ্ছে। আমাদের সেনারা আক্রান্ত। কড়া জবাবও দিচ্ছে।

1) এরমধ্যে কিছু সবজান্তা পণ্ডিত বলছেন, ভোট এলেই নজর ঘোরাতে সীমান্ত গরম হয়। কীসের ভোট এখন? সারা বছর দেশের কোথাও না কোথাও ভোট। সেজন্য সীমান্তে কিছু হলেই বিষয়টিকে গুরুত্বহীন ছেলেখেলায় নামাতে হবে? ইয়ার্কি হচ্ছে?

2) একশ্রেণির মিডিয়া, এমনকি বাংলা কাগজও বড় করে শিরোনাম করেছে- ভারতের 20 সেনা হত। এদের খবর, লে আউট সব দেশকে দুর্বল দেখানো, সেনার মনোবল ভাঙার মত। কেন, চিনের যে 43 জন হতাহত, সেটা খবরে লিখলেও শিরোনামে রাখতে কষ্ট হচ্ছিল? অবাধ গণতন্ত্র ও বাক্স্বাধীনতার এই অপব্যবহার? ” আজকাল” কাগজটা দেখলে লজ্জা হচ্ছে। বিজেপির রাজনৈতিক বিরোধিতা আর দেশের বিরোধিতা; আমাদের সেনাদের পাল্টা মার তুলে না ধরার মধ্যে তফাৎ আছে। কেন আমরা আমাদের সেনাদের সাহস আর পাল্টা মারের ছবিটাও তুলে ধরব না?

3) আর এক শ্রেণীর দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য চলছে- 56 ইঞ্চি কোথায় গেল? এইসব ছাগলকে তুলে ওই সীমান্তে ছেড়ে আসা উচিত। তুই করে দেখা। আমি বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু এই সস্তা কথাবার্তা প্রশ্রয় দিতে রাজি নয় এই সময়ে। কী করবে দেশ? যুদ্ধ? বেজিংয়ে পরমাণু বোমা ফেলে আসবে? এই পোড়া দেশের পণ্ডিতদের দেখুন। একাংশ বলবে- 56 ইঞ্চি কড়া জবাব দিক। চৌকিদার কোথায় গেলো? আর কড়া জবাব গেলে অন্য অংশ বলবে- নজর ঘোরাতে এখন সীমান্তে যুদ্ধের গল্প! বোঝো ঠেলা। এই হল গণতন্ত্র।

4) চিন অসভ্যতা করেছে। কোভিড নিয়ে সারা বিশ্বে নিন্দিত। নতুন করে করোনা ছড়ানোয় দেশেই সমালোচিত ওদের সরকার। ওরা নিজেদের কৌশলে নিজেরা নজর ঘোরাতে এসব করছে কিনা, সেই আলোচনাটাও হোক।

কেন্দ্রে যে সরকার থাকুক, সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী আমাদের সেনারা। ওই প্রতিকূল পরিবেশেও আমাদের ঘরের ছেলেরা আমাদের নিরাপদ রাখছে। চিন সেনার সঙ্গে আলোচনার পর আমাদের এলাকায় আমাদের সেনারা টহল দিচ্ছিল। চিনা জবরদখলের সামগ্রী সরাচ্ছিল। এই সময় চিনারা হামলা করে। সেই হামলা সামলেও, প্রাণহানির পরেও, ভারতীয় সেনা পাল্টা মেরেছে। বেশ করেছে।

আর আমরা এখানে বসে বড় বড় লেকচার দিয়ে জ্ঞান ফলাচ্ছি।

দল-টল ছাড়ুন, এই সময়টা ভারতের সেনার মনোবল বাড়াতে তাদের পাশে থেকে সমর্থন জানানোটা কি উচিত নয়?

আর তা না পারলে অন্তত চুপ থাকাও তো যেতে পারে।

ভারতের সেনার প্রতি গর্বিত এক নাগরিক হিসেবে স্যালুট জানাই। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা। আর গোটা বাহিনী, সীমান্তে জীবন বাজি রেখে অতন্দ্র প্রহরীদের জন্য পূর্ণ সমর্থন।

অনুরোধ- বিজেপির বিরোধীরা এখন 56 ইঞ্চি তুলে বা চৌকিদার বলে সস্তা কটাক্ষ করবেন না।
আরও অনুরোধ- সেনারা লড়ছে, বিজেপির কর্তাব্যক্তিরা দয়া করে এই তাৎক্ষণিক ঘটনায় তাদের পাল্টা মারের কৃতিত্ব নিজেরা নিতে যাবেন না।

চিনের তীব্র নিন্দা।
আমাদের সেনাদের সমর্থন।
এইটুকুই থাক।

 

Previous article“চিনকে যোগ্য জবাব দিক ভারত”- চায় গর্বিত ওরাওঁ পরিবার
Next articleচিনের হামলার যে ৪ কারণের কথা বলছেন সেনাকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা