অবসাদ নিয়ে যারা বন্ধু সাজছে, তাদের 95% বরাহনন্দন, কুণাল ঘোষের কলম

কুণাল ঘোষ

মন খুব খারাপ লাগলে একা থাকুন। নিজেকে সময় দিন। যা ভালো লাগে করুন।

কথা বলার ইচ্ছে হলে একেবারে ঘনিষ্ঠ, প্রকৃত শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে বলুন।

কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া বা বাড়তি কারুর জ্ঞান নেবেন না।
এইসব পাশে থাকা, মনের কথা বলা, হাত বাড়ানো- ভুলেও বিশ্বাস করবেন না।

হয়ত অনেকে আন্তরিকভাবেই বলবেন, কিন্তু বাস্তবে সেই হাত ধরে মনের জোর পাওয়া অসম্ভব।

নিজের লড়াই নিজেকে লড়তে হবে।
পথ চলতে কোণঠাসা হলে একসময় যাদের উপকার করেছেন, 95% চাইবে আপনি ধ্বংস হয়ে যান; কৃতজ্ঞতার দায় থাকবে না।
একসময়ের যারা ঘনিষ্ঠ, 95% আপনাকে চিনতে পারবে না।
পেশায় যাদের সঙ্গ তৃপ্তি পেতেন, 95% আপনার মৃত্যু চাইবে; কারণ শূন্যস্থান পূরণের সুযোগ পাবে।
যাদের মন খুলে প্রশংসা করেছেন, শুনতে পাবেন তাদের 95% আপনাকে গাল দিচ্ছে, দূরত্ব বোঝাতে।
চক্রান্ত রুখতে বড় শিবিরের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে 95% ‘বন্ধু’ উধাও হবে, গা বাঁচিয়ে উল্টোদিকে ভালো সাজতে।
আপনাকে কাজের পরিসর দিতে চাইবে না 95%, কারণ আপনার দক্ষতাকে ভয় পাবে।
আপনাকে বদনাম করবে, কলঙ্কিত করবে 95%, কারণ আপনার ইমেজ ভাঙতে না পারলে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।

অবসাদ নিয়ে চারপাশে যা জ্ঞানের বহর আর বাড়ানো হাত দেখছি, তার 95%-এর পেছনে টেনে তিনটে লাথি মারা উচিত।
যে বরাহনন্দনেরা না জেনে পরনিন্দায় ব্যস্ত থাকে, সেই হারামজাদারা চোখের জলের নাটক করছে। এগুলোকে ঠাস ঠাস করে চড়ানো উচিত।
বিপদে কে কজনের পাশে থাকে জানা আছে!

আর মনের কথা?
বিশ্বাস করে দুর্বল মুহূর্তে দশজনকে বলে দেখুন।
তার মধ্যে আটজন দশ মিনিটের মধ্যে বাজারে রটিয়ে আপনাকে খোরাক বানিয়ে দেবে। আপনিই খবর পাবেন, আপনি কত বিপদে আছেন। হয়ত একটু বেশিই খবর পাবেন, যা আপনিও জানেন না!!

আমি গত ত্রিশবছর নিজের পরিশ্রম, সাধনায় একটা পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছি।
এখানে এই বয়সে আমার মত স্বর্গ-নরক কেউ দেখেনি।

আমি বলছি, কারণে বা অকারণে বিপদে পড়লে নিজেকে লড়তে হবে।
কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।

এইসব 95% নাটুকে সহানুভূতির ন্যাকামিকে গুরুত্ব দেবেন না।

এই পথটা পুরো অন্ধকার।
তবু, এর শেষে আলো আছে। আলো থাকবে।

এতক্ষণ 95% শুয়োরের বাচ্চার কথা বললাম।
এবার বলি, বাকি 5% আপনার জীবনের সম্পদ।
এই 95%-এর হইচইতে হয়ত আপনি 5%কে সেভাবে দেখতেও পাননি।

এই 5%ই আপনাকে লড়াইয়ের শক্তি দেবে। জীবনের নতুন মানে খুঁজতে সাহায্য করবে। এরা সক্রিয়ভাবে পাশে থাকবে। হয়ত আন্তরিক শুভেচ্ছা নিয়ে দূরে ফেস বুকেও থাকবে।
কিন্তু এই 5% আপনার মনকে শক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আপনার নিজের লড়াইয়ের পরিবেশটা তৈরি করে দেবে। এদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক বা প্রত্যক্ষ আত্মীয়তা হয়ত নেই। কিন্তু এরাই পরমাত্মীয়।

চারপাশে অবসাদ নিয়ে জ্ঞান আর বড় বড় কথা শুনলে গা রি রি করছে।

যে কোনো কারণেই যারা কোণঠাসা, অবসাদে- তারা লড়াইয়ের সময় 95%কে পায় না। মরে গেলে কুম্ভীরাশ্রু আর মায়াকান্নার ছড়াছড়ি। এই 95%কে আমি জুতিয়ে লাল করার পক্ষে।

নিজের লড়াই নিজে লড়ুন।
আর যে 5% আপনার লড়াইতে মন থেকে পাশে, তাদের নিয়ে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখুন।

যে বা যারা অবসাদে থাকে, তাদের যন্ত্রণা না বুঝে, হাতেকলমে কিছু না করে শুধু নিজের ইমেজবিল্ডিংয়ের বাতেলা দেওয়াটা বর্জন করলেই ভালো হয়।

Previous articleকরোনা রুখতে প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য জীবাণুমুক্ত টানেল বানালো রাশিয়া!
Next articleদেশে করোনায় মৃত্যু মিছিল অব্যাহত, সংখ্যা বেড়ে ১২২৩৭