চার্জশিট দিতে ব্যর্থ দিল্লি পুলিশ, দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত DSP দেবেন্দ্র সিংয়ের জামিন

প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা ? না’কি পুরোটাই চিত্রনাট্য অনুসারে ?

দেশজুড়ে এমন প্রশ্নই উঠে এলো জঙ্গিযোগের দায়ে হাতেনাতে ধৃত জম্মু- কাশ্মীরের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিং-এর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে নি পারার ঘটনায়, জামিন পেয়ে যাওয়ার ঘটনায় ৷

চিন- সীমান্তে যুদ্ধের আবহ, পাক- সীমান্তে বিরাম নেই জঙ্গি কার্যকলাপ৷ নেপাল তাল ঠুকছে, ঠিক সেই সময়ে এই ঘটনা নানা জল্পনা তৈরি করেছে৷

এ বছরের গোড়ায় দুই হিজবুল জঙ্গিকে নিজের গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে হাতেনাতে ধৃত জম্মু- কাশ্মীরের DSP দেবেন্দ্র সিং-এর বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দিতে পারলো না পুলিশ। এই ব্যর্থতার নিট ফল, দিল্লির এক আদালতে শুক্রবার জামিন পেয়ে গেলেন দেশদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্ত DSP দেবেন্দ্র সিং৷
শুধু দেবেন্দ্র নন, এই ঘটনায় ইরফান শাহি মীর ধৃত আরও একজনেরও জামিন হয়ে গিয়েছে। তাঁদের আইনজীবী এমএস খান জানিয়েছেন, ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দিতে পারেনি দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। তাই আদালত জামিন মঞ্জুর করেছে৷ দেবেন্দ্র সিং এখন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা NIA-এর হেফাজতে রয়েছেন। দিল্লি পুলিশ দেবেন্দ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট না দিতে পারলেও NIA জানিয়েছে দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। শীঘ্রই তারা চার্জশিট দেবে।

এ বছরের জানুয়ারি মাসে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের ওয়ান পো এলাকায় একটি গাড়ি আটকায় পুলিশ। ওই গাড়িতে ৩ জঙ্গির সঙ্গেই ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের DSP দেবেন্দ্র সিং। আটক করা গাড়িটি ছিলো দেবেন্দ্রর ব্যক্তিগত৷
২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার সঙ্গেও দেবেন্দ্র যোগ থাকার কথাও ওঠে তখনই৷
ওই গাড়িতে ধৃত ৩ জঙ্গির মধ্যে ছিল হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার সৈয়দ নাভিদ মুস্তাক ওরফে বাবু এবং রফি রাঠের। ৩৭০ ধারা বাতিলের পর দক্ষিণ কাশ্মীরে ট্রাকচালকদের খুনে মূল অভিযুক্ত এই নাভিদ মুস্তাক। একইসঙ্গে সেদিন ধরা পড়েন মীর৷ তিনি পেশায় আইনজীবী হলেও জঙ্গি দলে নাম লেখান। এই মীর এদিন দেবেন্দ্রর সঙ্গেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

আদালতে তদন্তকারী অফিসাররা জানান, জম্মু-কাশ্মীর হাইওয়ের উপর বানিহাল টানেল পার করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল দেবেন্দ্রর। তিনি নিজে গাড়িতে থাকলে কেউ আটকাবে না, এই ভেবেই জঙ্গিদের সঙ্গে সওয়ার হয়েছিলেন। দেবেন্দ্র দাবি করেন, ওই জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতেই তিনি একই গাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জানা গিয়েছে, পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার কাউকেই নিজের পরিকল্পনার কথা জানাননি দেবেন্দ্র। তদন্তে জানা যায়, এই প্রথম নয়, আগে আরও অন্তত ৫বার জঙ্গিদের সাহায্য করেছেন দেবেন্দ্র। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বানিহাল টানেল পার করে জঙ্গিদের জম্মুতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন।

Previous articleএকনজরে বাংলার করোনা আপডেট
Next articleসর্বদল বৈঠকে লাদাখ নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগে কার্যত একঘরে কংগ্রেস, প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন বাকি বিরোধীদের