অবশেষে গ্রেফতার হলো কাঁকুড়গাছির সেই জোড়া মৃত্যু-কাণ্ডের অস্ত্র বিক্রেতা৷ বিহারের নওয়াদা থেকে কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম পঙ্কজ কুমার৷ পুলিশ সূত্রে খবর, টানা জেরায় ধৃত পঙ্কজ কুমার জানিয়েছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহে একটি পিস্তল ও ১০ রাউন্ড গুলি নিয়ে সে কলকাতায় আসে। এর পর সেগুলি তুলে দেয় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অমিত আগরওয়ালের হাতে। এই
পিস্তল দিয়েই অমিত আগরওয়াল তাঁর শাশুড়িকে গুলি করে খুন করার পর নিজেও আত্মঘাতী হন৷
গত ২৩ জুন বিকেলে ফুলবাগানের আবাসনে ঢুকে শাশুড়ি ললিতা ঢনঢনিয়াকে গুলি করে খুন করে আত্মঘাতী হয় অমিত আগরওয়াল। শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়াকেও গুলি করতে চেয়েছিল অমিত। কিন্তু পিস্তলে কিছু সমস্যা হওয়ায় তিনি বেঁচে যান।
তদন্তে জানা যায়, অমিত একটি সেভেন এমএম পিস্তল ব্যবহার করেছিল। ঘটনাস্থলেই পাওয়া গিয়েছে সেটি। পুলিশ জেনেছে, সোমবার ফ্ল্যাটে ঢুকেই শ্বশুর ও শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে অমিত। জানায়, তাঁদের মেরে আত্মঘাতী হবে। শ্বশুর-শাশুড়ি ভেবেছিলেন, অমিত ভয় দেখাতে ও সব বলছে। কিন্তু পিস্তল বার করতেই তাঁরা ভয় পেয়ে যান। অমিতের শ্বশুর পুলিশকে জানান, অমিত গুলি চালাতে গেলে পিস্তলে সমস্যা দেখা দেয়। তখন সে শাশুড়ির কাছেই স্ক্রু-ড্রাইভার চায়। পরে নিজেই সেটি ঠিক করে গুলি চালায়। গুলি গিয়ে দরজায় লাগে। পরের গুলি লাগে শাশুড়ির গায়ে। তিনি মেঝেতে পড়ে যান। ফের গুলি চালাতে গেলে পিস্তলে আবার সমস্যা দেখা দেয়। সেই সুযোগে তার শ্বশুর পাশের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে পড়শিদের ফ্ল্যাটে চলে যান। পড়শিরাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে দরজা খুলে দেখে, অমিতও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। তার দেহের পাশেই বেশ কয়েক পাতার সুইসাইড নোট। সেখান থেকেই পুলিশ জানতে পারে অমিত বেঙ্গালুরুতে স্ত্রী শিল্পীকে খুন করে কলকাতায় এসেছে৷ কথা লিখে গিয়েছে। অমিত তার শ্যালককেও নয়ডা থেকে আসতে বলেছিল। সম্ভবত তাঁকেও খুনের পরিকল্পনা ছিল। কলকাতা পুলিশ তখনই বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ড থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানায়। সেখানকার পুলিশকর্তা মহাদেবপুরমে শিল্পীর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, সেটি বন্ধ। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায়, ফ্ল্যাট পুরো লন্ডভন্ড। শোয়ার ঘরে পাওয়া যায় শিল্পীর মৃতদেহ। ফুলবাগানে অমিতের দেহের পাশে যে সুইসাইড নোট মিলেছিল, তার একটি প্রতিলিপি পাওয়া যায় শিল্পীর দেহের পাশেও।