বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস: ২১০০ সালে দুনিয়ায় বাস করবে ১১০০ কোটি মানুষ

অতিমারির আবহে চলতি বছরের ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’ বিশ্বজুড়েই স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন৷ এমনই পরিস্থিতি যখন এক মারণ ভাইরাসের থাবায় দুনিয়ার জনসংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে৷

১১ জুলাই, আজ, ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ডে বা বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। ১৯৮৯ সালে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে এই দিনটি ঘোষিত হয়। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত বহু সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই প্রায় তিন দশক ধরে পালিত হচ্ছে এই দিনটি। ১৯৮৭ সালের ১১ জুলাই ‘পাঁচ বিলিয়ন দিবস’ উদযাপিত হয়, সেই দিনটির সূত্র ধরেই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের সূচনা। এই দিনেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৫০০ কোটি ছাড়িয়েছিল৷

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্যই হল জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাগুলিকে আবারও খতিয়ে দেখা। এছাড়াও সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচিকে কীভাবে এই জনসংখ্যা প্রভাবিত করে তা বিশ্লেষণ করা। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, প্রতিবছর, কয়েক মিলিয়ন মহিলা এমন নিপীড়নের শিকার হয়, যা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি করে। এবং তাঁদের বিকাশের পথে বাধা সৃষ্টি করে৷ ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড প্রকাশিত স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ২০২০ রিপোর্ট বলছে, ৪ মিলিয়নেরও বেশি মেয়ে যৌনাচারের শিকার হবে এবং চলতি বছরে ১২ মিলিয়ন মেয়ে বিবাহ করতে বাধ্য হবে। মহামারি কারণে লকডাউনে আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে আশঙ্কাও করা হয়েছে।
ইউএনএফপিএর নির্বাহী পরিচালক ড. নাটালি কানেম টুইটারে লিখেছেন, “সঙ্কটের সময়ে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার রক্ষা করা জরুরি …”

এই অতিমারি ধনী ও দরিদ্রকে আলাদা নজরে দেখছে না৷ তবে সম্প্রদায়ভিত্তিক পরিষেবা অনেক ক্ষেত্রে বাধা হওয়ায় কিছু মানুষ বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। লকডাউনের মধ্যে বিশ্বব্যাপী লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে। ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে, দেশীয় সহিংসতার অভিযোগের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে গর্ভবতী মহিলারা নিরাপদে প্রসবের জন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেনি।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যা ৭৭০ কোটি। আগামী ৩০ বছরে আরো ২০০ কোটি যোগ হয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের জনসংখ্যা তহবিলের অন্য পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৮০৪ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ১০০ কোটি, ১৯২৭ সালে ২০০ কোটি, ১৯৫৯ সালে ৩০০ কোটি, ১৯৭৪ সালে ৪০০ কোটি, ১৯৮৭ সালে ৫০০ কোটি এবং ১৯৯৯ সালে ৬০০ কোটি। ২০১১ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ৭০০ কোটিতে পৌঁছেছে। এই হারে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে প্রায় এক হাজার কোটি এবং চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ ২১০০ সালে গিয়ে দাঁড়াবে ১১০০ কোটিতে।

Previous articleএই নিয়ে তৃতীয়বার, ওড়ার সময় ব্যর্থ চিনের রকেট
Next articleরাজ্যে ফের রেকর্ড করোনা সংক্রমণের, মৃত্যু পেরোলো ৯০০!