রূপরেখা প্রস্তুত, মহামারির আবহে একগুচ্ছ নিয়মের বেড়াজালে হতে পারে দুর্গাপুজো

মহামারির আবহে দুর্গাপুজো আদৌ এ বছর হবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুজো নিয়ে আশ্বাসের কথা শুনিয়েছেন । তবু প্রশ্ন উঠেছে, এ বছর কলকাতার দুর্গাপুজোর সেই জৌলুস কি দেখা যাবে?
যদিও বিধিনিষেধের কথা মাথায় রেখে থিমের পসরা সাজাতে চান শিল্পীরা। তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের যৌথমঞ্চ ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সদস্যরা।
বুধবারই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুজো করতে হবে। সবাই যাতে মাস্ক পরে এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করে মণ্ডপে যান, ক্লাব এবং পুজো উদ্যোক্তাদের সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে । এই পরিস্থিতিতে পুজোর চার দিন কী ভাবে নিয়ম মানা হবে, তার রূপরেখাও তৈরি করেছে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’। অপেক্ষা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি।
উদ্যোক্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মহামারির পরিস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ পুজো করতে নারাজ। আড়ম্বর না দেখিয়ে, পুজোর সময় জনসেবামূলক কাজের ওপরই জোর দিতে চাইছেন তারা ।
তারা জানিয়েছেন, এবার প্যান্ডেল ও প্রতিমার উচ্চতা কম হবে। পুজোর দিনগুলিতে পুরসভার সহযোগিতায় এক বার করে প্রতিমার গায়ে এবং মণ্ডপে জীবাণুনাশক স্প্রে করার প্রস্তাবও দিয়েছেন উদ্যোক্তারা ।
মণ্ডপ খোলামেলা করার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে দর্শকরা বাইরে থেকেই ভাল ভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন। প্যান্ডেলের ভেতরের বদলে বাইরের দিকে শিল্পকর্মের উপরে জোর দিতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। বিধি নিষেধ মেনে এক বারে ২৫ জনের বেশি দর্শককে প্যান্ডেলে প্রবেশ করানো হবে না।
এই চিন্তাভাবনার সঙ্গে এক মত শিল্পীরাও।
ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সভাপতি কাজল সরকার জানিয়েছেন, পুজোর আগে থেকে প্রচার করা হবে যে দর্শকেরা শুধু রাতের কয়েক ঘণ্টা ঠাকুর দেখার জন্য যাতে বেছে না নেন। তাঁরা যেন সারা দিন ধরে ঠাকুর দেখেন। এমনকি যে সব পুজোয় স্টল থাকে, সেখানে দু’টি স্টলের মধ্যে কমপক্ষে যাতে ৫ থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। দর্শনার্থীরা মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করছেন কিনা সেদিকে বিশেষ নজরদারি চালাতে হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। সব ঠিকঠাক থাকলে, মহামারির আবহে একগুচ্ছ নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়বে এবারের দুর্গাপুজো ।

উদ্যোক্তাদের প্রস্তাবিত গাইডলাইন-

১) পুজো অপেক্ষাকৃত ছোট হবে। প্রতিমা ও মণ্ডপ বড় করা যাবে না।

২) পুজো হবে সাদামাটা অর্থাৎ পুজোয় কোনও চমক থাকবে না।

৩) মণ্ডপসজ্জাও হবে অনাড়ম্বর।

৪) প্রত্যেক মণ্ডপের মূল প্রবেশদ্বারেই রাখা হবে একাধিক থার্মাল স্ক্যানার। তাপমাত্রা বেশি হলে ফেরত পাঠানো হবে দর্শণার্থীদের।

৫) দর্শকদের মুখে মাস্ক না থাকলে ঢুকতে দেওয়া হবে না কাউকে।

৬) একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি মণ্ডপে প্রবেশ করানো হবে না।

৭) পুজোর প্রত্যেকদিনই মণ্ডপ ও প্রতিমা স্যানিটাইজ করতে হবে।

৮) পুজো মণ্ডপের আশেপাশের এলাকাও স্যানিটাইজ করবে পুজো কমিটিগুলিই।

৯) দিনের বেলাতেই ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা।

১০) আলোকসজ্জাও হবে সাদামাটা।

১১) মণ্ডপ চত্বরে খাবারের স্টলও দূরে দূরে থাকবে।

১২) রান্না করা খাবারই বিক্রি করতে হবে। স্টলে বসিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা রাখা যাবেনা।

১৩) পুজোয় দিতে হবে গোটা ফল।

১৪) মণ্ডপ শিল্পীদের স্বাস্থ্য বিধি দেখতে হবে পুজোর উদ্যোক্তাদেরই।

Previous articleস্যানিটাইজারে জিএসটি : মুখ্যমন্ত্রীকে সুজনের চিঠিতে SGST প্রত্যাহারের দাবি
Next articleমমতা না পার্থ-সৌগত? আনন্দবাজার ইস্যুতে কর্মী-নেতারা বিভ্রান্ত, কার কথা মানবেন!