ফুটবলের ময়দান এখন অতীত, লকডাউনের আবহে জীবনটাই বদলে গিয়েছে ওদের

ওরা এই কিছুদিন আগেও ফুটবলের ময়দান দাপিয়েছেন। কিন্তু কখনও ভাবেননি যে এমন দিন দেখতে হবে! মহামারির সংক্রমণের জেরে লকডাউনের আবহে জীবনটাই বদলে গিয়েছে ওদের । আসলে পেট যে বড় বালাই।
এই তালিকাটা নেহাৎ ছোট নয়। তবে মোহনবাগানের উদয় কোনার, এটিকের বিশ্বজিৎ সাহা, ইস্টবেঙ্গলের বলজিৎ সিং সাইনি ও বাগান অ্যাকাডেমির দীপ বাগ বর্তমান পরিস্থিতির শিকার।
ফুটবলার উদয় কোনারকে মনে আছে? ২০০১-০২ মরশুমে মোহনবাগানকে জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন উদয়। একসময় ব্যারেটো-বাসুদেব মণ্ডলদের সঙ্গে মাঠ মাতিয়েছেন । আর এখন সেই স্ট্রাইকার মুম্বইয়ের ফুটপাথে সকালে সবজি ও বিকালে ফুল বিক্রি করেন।
মোহনবাগানের হয়ে জাতীয় লিগ ছাড়াও মহারাষ্ট্রের হয়ে সন্তোষ ট্রফি জিতেছেন। কিন্তু ভাগ্য এমনই যে কোথাও একটা চাকরি জোটেনি। খেলা ছাড়ার পর একটি জামাকাপড়ের দোকান খুলেছিলেন। সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে লকডাউনের জেরে । অগত্যা ফুটপাথের পসরা সাজিয়ে দিন গুজরান করছেন এই প্রাক্তন ফুটবলার।
এমনই আর এক ফুটবলার বিশ্বজিৎ সাহা। ২০১৪-য় এটিকের জার্সিতে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল বাদে সব ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তারকা এই সাইড ব্যাক। হঠাৎই হারিয়ে যান ফুটবলের মূল স্রোত থেকে। স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় খেলতে গিয়েছিলেন লোনে। তবে চুক্তি বাতিল হওয়ায় মাঠে নামা হয়নি। কেউই মনে রাখেন নি তার পারফরম্যান্স ।
একদিন জাতীয় লিগ জিতে, ISL চ্যাম্পিয়ন হয়ে কলকাতা ময়দান মাতিয়েছিলেন এই ফুটবলার। এখন তিনি একটি ফাস্ট ফুডের দোকান চালান।জীবিকা নির্বাহের জন্য লকডাউনে কঠিন সংগ্রাম চালাতে হচ্ছে এক সময়ে বল পায়ে মাঠ মাতানো তারকাদের।
যে ক্লাবের হয়ে নিরন্তর আনন্দ দিয়েছেন ফুটবলপ্রেমীদের, তারাও খোঁজ রাখেননি এই ফুটবলারদের। সমর্থকদেরও মাথা ব্যাথা নেই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া তারকাদের নিয়ে।
ইস্টবেঙ্গলের বলজিৎ সিং সাইনি ও বাগান অ্যাকাডেমির দীপ বাগ এখন এমনই পরিস্থিতির শিকার। এদের কেউ সবজি বিক্রি করছেন , আবার কারো পরিচয় ডিম বিক্রেতা । ফুটবলের ময়দান থেকে কয়েক যোজন দূরে নি:শব্দে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

Previous articleঅ্যান্টিবডি টেস্টের ব্যবস্থা সিপিআইএমের যাদবপুর এরিয়া কমিটির
Next articleরবিবার থেকে আলু মিলবে ২৫ টাকা কিলো দরে