দিলীপই ‘আনডিসপিউটেড’ নেতা, বলে দিলেন দিল্লির নেতারা, অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

বাংলায় ভোট কবে?

করোনা আবহের মাঝে সে নিয়ে জল্পনা বিস্তর। সেই জল্পনাকে উস্কে দিয়ে লোকমুখে প্রায়শই জিজ্ঞাসা… দাদা কী হবে বলুন তো! বারবার তিনবার না পরিবর্তনের পরিবর্তন?

নানা মুনির নানা মত। কিন্তু সেই কাঁটো সে কাঁটো কি টক্কর জোর কদমে শুরু হওয়ার আগেই বেসরকারিভাবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির শীর্ষ নেতাকে নিয়ে চোরাগোপ্তা প্রশ্ন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন যত না বিরোধী পক্ষের, তার চেয়ে বেশী অভ্যন্তরের নব্য বিপ্লবীদের। তাঁরা সামনে আসেন না, আসার মুরোদ নেই। কিছু ধামাধরা সংবাদ মাধ্যমকে দিয়ে শকুনির চাল চালবার অসীম চেষ্টা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এসব দেখছেন, বুঝছেন এবং হাসছেন। ব্যবস্থা নিতেই পারেন। কিন্তু ভোটের আগে দলের অভ্যন্তরে অস্বস্তি বাড়াতে রাজি নন।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করে, তপন শিকদারের পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসাবে শাসক দলকে কড়া প্রতিদ্বন্দিতায় ফেলে রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। দিল্লি থেকে রাজ্য দলের দায়িত্বে থাকা শিবপ্রকাশ কিংবা অরবিন্দ মেনন বারবার মোদি-শাহ জুটির কাছে এ কথা বলেছেন। তাঁরা সন্তুষ্ট মূলত দিলীপের স্বচ্ছ্বতার সঙ্গে কাজের কারণে। গোপন এজেন্ডা নেই। যে কোনও বিষয়ে নিজে এগিয়ে যান। নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে আসতে পারেন, আবার সোমেন মিত্রকে শ্রদ্ধেয় নেতা বলতেও আপত্তি নেই। বিজেপি এবং নব্য বিজেপির সংমিশ্রণে দলের দায়িত্ব বন্টন করেছেন। তাঁরা এটাও বিশ্বাস করেন, যে ভাষায় দিলীপ কথা বলেন, সেটা দিলীপকে আরও স্বতন্ত্র করে দিয়েছে। ফলে মিডিয়াও জানে দিলীপ মানেই খবর হবে, মাঝে মাঝে বিস্ফোরণ হবে। খবরের খরার মাঝেও দিলীপ তাই খবরে থাকেন, সবচেয়ে বড় কথা খবরে থাকে বিজেপি।

অভিযোগ কি কিছু নেই? হ্যাঁ আছে। দিলীপ ঘোষ নাকি দলের কিছু নেতাকে উপেক্ষা করছেন। কাজে লাগাচ্ছেন না। ক্রমশ ডালপালা মেলা নেতাদের কাজের সুযোগ দিচ্ছেন না। দিলীপ বলছেন, চেষ্টা করা হয়েছে সব সেক্টরের নেতৃত্বকে সুযোগ দেওয়া। ফলে তৃণমূল থেকে আসা নেতারাও বাদ যাননি। আবার সকলকে একসঙ্গে সন্তুষ্ট করা যায় না। ফলে অভিযোগ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। আর নিজের ‘ভরসার টিম’ নিয়ে কাজ করার অধিকার তো সকলেরই রয়েছে। এক্ষেত্রে দিল্লির নেতৃত্ব চাইলে দলের রাজ্য কমিটিতে কয়েকজন আসতেই পারেন। যে কোনও সময় সেটা হতেই পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এটাও জানেন, যারা বাজনা বাজাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই পরীক্ষিত কিংবা জনবিচ্ছিন্ন। ফলে এদের পদক্ষেপগুলো আন্দাজ করা যায়।

বিধানসভা ভোটের আগে লোকসভা আসন ধরে ধরে দিল্লিতে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। অর্ধেক হয়েছে। বাকি কলকাতায় হবে। সেখানে দিলীপকে মধ্যমণি করেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ২০২১-এর গুটি সাজাচ্ছে। মুকুল রায়রাও থাকবেন, যদি না মাঝে অন্যরকম কিছু ঘটে যায়! রাজ্য থেকে কেন্দ্রের মন্ত্রীকে বলা হয়েছে মন্ত্রক আর সংসদীয় ক্ষেত্র সামলাতে। আর দলের ‘চিন্তাবিদ’ সাংসদকে বলা হয়েছে, দিলীপ ঘোষকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সাহায্য করুন। দ্বিতীয়বার রাজ্য সভাপতি করে দল বার্তা দিয়েছে, দিলীপকে সামনে রেখেই বিজেপি একুশের লড়াইয়ে নামছে। এ বার্তা নিয়ে দলের তৃণমূলস্তর পর্যন্ত যেন কোনও বিভ্রান্তি না থাকে। থাকলে কম্পিউটারের মেমরি ডিলিটের মতো অন্য ভাবনা ডিলিট করুন। ফাঁকা মেমরিতে নতুন নির্দেশ ঢুকিয়ে নিন। না ঢোকালে… কখন কী ঘটে যায় কিচ্ছু বলা যায় না…!!!

Previous articleজম্মু ও কাশ্মীরে একের পর এক হামলা বিজেপি নেতাদের ওপর! ফের জখম এক নেতা
Next articleকেরলের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করেছিলেন কোন্নগরের যুবক!