‘পিএম কেয়ার্স’-এর তথ্য দেবো না, RTI খারিজ করে জানালো PMO

মহামারি মোকাবিলায় গঠিত ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল সংক্রান্ত কোনও তথ্য দিতে অস্বীকার করলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সচিবালয়৷

RTI বা তথ্য জানার অধিকার আইনে পিএম কেয়ার্স সম্পর্কিত তথ্য চান এক আবেদনকারী৷ ওই আবেদনকারীকে RTI আইনের নির্দিষ্ট ধারা উল্লেখ করে জানানো হয়, PMO-তে এই সংক্রান্ত সব তথ্য নেই। তাই তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। এদিকে RTI বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা ‘আইনের অপব্যবহার’।

জানা গিয়েছে, এই পিএম কেয়ার্স সম্পর্কে তথ্য জানতে বহু আবেদন জমা পড়ে PMO-তে। একটি আবেদন জানিয়েছিলেন লোকেশ বাত্রা নামে এক অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর অফিসার। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত PMO-তে প্রতি মাসে কত আবেদন জমা পড়েছে, সে বিষয়ে জানতে চান তিনি। আবেদনের মধ্যে কতগুলি পিএম কেয়ার্স এবং কতগুলি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল সম্পর্কিত সে বিষয়েও আলাদাভাবে জানতে চেয়েছিলেন বাত্রা। কিন্তু বাকি সব তথ্য দিলেও পিএম কেয়ার্স এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
PMO থেকে ওই আবেদনের জবাবে বলা হয়েছে, ‘‘আপনি যে তথ্য জানতে চেয়েছেন, তা এই অফিসে এক জায়গায় গচ্ছিত নেই। সেই তথ্য সংগ্রহ করা এবং এক জায়গায় করা এই অফিসের এক্তিয়ার বহির্ভূত। সেটা করা অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্মের পক্ষে সঠিক হবে না।’’ RTI আইনের ৭(৯) নম্বর ধারার কথাও উল্লেখ করা হয় ওই আবেদনের জবাবে।

RTI-বিশেষজ্ঞদের মতে,
কোন কোন বিষয়ে কোনও সরকারি অফিস তথ্য দিতে অস্বীকার করতে পারে, RTI আইনের ৮ (১) নম্বর ধারায় সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। ৭(৯) ধারা অনুযায়ী, আবেদনকারী যে ভাবে তথ্য চাইছেন, কোনও অফিসে যদি ঠিক সেই ফর্মেই তথ্য থাকে, তা হলে তা দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু যদি সেই ফর্মে না থাকে, তা হলে সেই তথ্য দেওয়া সঠিক হবে না। সে ক্ষেত্রে তথ্য দিলে সেটা তথ্যের নিরাপত্তা বা সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটা শুধুমাত্র তথ্য না দেওয়ার অজুহাত। তথ্য কমিশনের প্রথম কমিশনার ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ বলেছেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও অস্পষ্টতা নেই। এটা আইনের ওই ধারার অপব্যবহার।’’ তিনি বলেছেন, “আমার সময়ে RTI ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে৷ তখন সাধারণ মানুষ এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এখন RTI আইন প্রতিষ্ঠিত। এখন এই ধরনের অজুহাত খাটে না।’’

এই পিএম কেয়ার্স নিয়ে বিরোধীদের একাধিক অভিযোগ আছে। সেই আবহেই পিএম কেয়ার্স সংক্রান্ত তথ্য দিতে অস্বীকার করল প্রধানমন্ত্রীর দফতর৷ দেশে যে কোনও বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল রয়েছে। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের মোকাবিলায় তৈরি করা হয়েছিল ‘পিএম কেয়ার্স’ নামে আলাদা একটি তহবিল। সেই তহবিলে যে কেউ দান করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থাকতেও আলাদা করে কেন ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল তৈরি করতে হল, তা নিয়ে শুরুর সময়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। পরে ওই তহবিলে কে কত টাকা দান করেছেন, সেই টাকা কোন খাতে কত খরচ হয়েছে, তার হিসাব প্রকাশ্যে আনার দাবিও জানিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি শাসক দল।

Previous articleরাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিস্ফোরক কৈলাস বিজয়বর্গীয়
Next articleরাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু আড়াই হাজার ছুঁইছুঁই