নৌকা করে ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের জালে দাগী চোর

চুরি করে নিজের চৌহদ্দিতে ভালই নাম-যশ করেছে সে। সাত আট বছর ধরে প্রায় 500 বাড়িতে চুরি করে রীতিমতো দাগী চোরে পরিণত হয়েছে হুগলির গুপ্তিপাড়ার শেখ সইফুদ্দিন। চৌর্যবৃত্তিতে এমনই তার নাম যশ যে চুরি করতে গিয়ে কখনও খালি হাতে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়নি তাকে। কিন্তু মাস ছয়েক আগে জিরাটের এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বাড়িতে ডাকাতি করাই কাল হলো তার। মূলত রাতের অন্ধকারে নৌকা নিয়ে সে বেরিয়ে পরতো । তারপর কাজ সেরে ভোর হওয়ার আগেই ফিরে আসত নিজের ডেরায়। সিভিক ভলেন্টিয়ারের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় মূল পান্ডা সইফুদ্দিন কে ধরার জন্য উঠেপড়ে লাগে পুলিশ।
সম্প্রতি চুরির জন্য জিরাট যাওয়ার পথে গুপ্তিপাড়া গঙ্গার ঘাটে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাড়ি থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, চুরির সরঞ্জাম ও চুরি করা জিনিস মিলেছে। পুলিশি জেরায় সে যা জানিয়েছে তা সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়।
জানা গিয়েছে, সইফুদ্দিন প্রথম ছোটখাটো চুরির মাধ্যমে কাজ শুরু করেছিল। ধীরে ধীরে চাহিদা বাড়তে থাকায় নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে সে দাগী চোর হয়ে ওঠে। প্রথমদিকে একা চুরি করলেও এরপর চুরির ধরন বদলায়। যে বাড়িতে চুরি করবে তাকে ভাল করে পরখ করার জন্য লোক লাগাতো, তারপরেই হানা দিত রাতের অন্ধকারে সেই বাড়িতে। এমনকি ব্যাঙ্ক থেকে কেউ মোটা অঙ্কের টাকা তুললে সে তার বাড়ি খুঁজে বার করার চেষ্টা করত। তারপর চলত আপারেশন। তাকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে আদতে চুরি করা তার পেশা। ইদানিং চুরির ধরন বদলে ফেলে সে। পুলিশকে সে জানিয়েছে, জানলা দিয়ে ক্লোরোফর্ম ছড়িয়ে দিয়ে বাড়ির লোককে ঘুমে আচ্ছন্ন করে দিত সে। তারপর নির্বিঘ্নে নিজের কাজ সেরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিরাটের ডাকাতির ঘটনা সে স্বীকার করেছে। আদতে চৌর্যবৃত্তিই তার পেশা। এই প্রথম ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পরলো। তার মতো একজন দাগী চোরকে পাকড়াও করতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে হুগলির পুলিশ মহলে। তার কাছ থেকে 30 কেজি গাঁজা উদ্ধার হওয়ায় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বর্তমানে সে চুরির পাশাপাশি মাদক পাচারেও হাত পাকাতে শুরু করেছে।

Previous articleইতিহাস স্পর্শ করতে আজ ফের কোর্টে নামছেন সেরেনা
Next articleপ্যাংগং লেকের পাড় ধরে ৫০০ লালফৌজ ভারতে অনুপ্রবেশের ছক কষেছিল!