সমর্থন না বিরোধিতা? পুরোহিত ভাতা নিয়ে বিভ্রান্তি গেরুয়া শিবিরে

মুসলিম ইমাম ভাতার আদলে হিন্দু পুরোহিত ভাতার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের সেই পদক্ষেপ নিয়ে বিভ্রান্তি বাড়ছে বিজেপিতে। কেউ সমর্থন করছেন, আবার কেউ বিরোধিতা। প্রকাশ্যেই পরস্পরবিরোধী মত উঠে আসছে গেরুয়া শিবিরে। এই ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মতের ফারকও স্পষ্ট হচ্ছে। মজার ব্যাপার হল, ইমাম ভাতা চালুর পর এই বিজেপি নেতারাই বলেছিলেন, মুসলিম তোষণ করছে তৃণমূল সরকার। কেন হিন্দু পুরোহিতদের বঞ্চিত করা হচ্ছে? আর যখন পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হল তখন নানা জনের নানা মত। বিজেপির অনেকেই এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করে বলেছেন, দেরিতে হলেও অবশেষে হিন্দু পুরোহিতদের কথা ভেবেছে সরকার। অন্যদিকে কেউ সিদ্ধান্ত সমর্থন করে দাবি তুলেছেন, ভাতার আর্থিক অঙ্ক বাড়ানো হোক। কেউ বলছেন, ভাতা সবাই কেন পাবেন না? কেন প্রাপকের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হচ্ছে? কারুর আশঙ্কা, ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ বা রাজনৈতিক পরিচিতি দেখে নাম তোলার চেষ্টা হবে না তো? একই ইস্যুতে আবার বিজেপি শিবিরের উল্টো মত আরএসএসের। তাদের বক্তব্য, ভোট কেনার তাগিদে ভেট দিয়ে তোষণের রাজনীতি করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের আরএসএস মুখপাত্র জিষ্ণু বসু সরকারি এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেছেন, ব্রাহ্মণরা দান গ্রহণ করেন না। তাঁরা সমাজের যে হিত সাধন করেন তার জন্য দক্ষিণা নেন। সমাজ তাঁদের সেই দক্ষিণা দেয়। এটা কোনওভাবেই সরকারের কাজ নয়। তাঁর কথায়, পশ্চিমবাংলায় বাংলাভাষী হিন্দুরা বিপন্ন। সাহায্য যদি করতেই হয় তাহলে নদিয়া, সন্দেশখালিতে যে হিন্দু তফশিলিরা হার্মাদদের হাতে মার খাচ্ছেন, খুন হচ্ছেন, তাঁদের সাহায্য করুন। ইমাম ভাতার মত পুরোহিত ভাতার উদ্দেশ্যও আসলে সরকারি টাকায় দলীয় ভোট কেনার চেষ্টা। যদিও বিজেপি ও আরএসএসের অন্দরে পুরোহিত ভাতার বিরোধিতা নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ্যে এসে পড়ছে। অনেকের আশঙ্কা, চড়া সুরে এর বিরোধিতা করলে তা বুমেরাং হবে না তো? কারণ খোদ পুরোহিতদের সংগঠনগুলি এই ভাতার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের ফলাফলে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে হিন্দু ভোট এককাট্টা হয়ে বিজেপির পক্ষে যাওয়ায় শঙ্কিত তৃণমূল। রাজবংশী থেকে আদিবাসী, সব অংশের ভোট গিয়েছে পদ্ম শিবিরে। তাঁদের বক্তব্য, হিন্দুদের মধ্যে প্রভাব ফেলতে এবার নানা প্রচেষ্টা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিন্দু পুরোহিত ভাতার ঘোষণা সেই উদ্যোগেরই অংশ। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে তৃণমূল যাতে একতরফা ভোটে ফায়দা তুলতে না পারে সেজন্য পাল্টা প্রচার শুরু করেছে আরএসএস। তারা প্রচার করছে, এভাবে ব্রাহ্মণদের সরকারি ভাতা দিয়ে আসলে সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতিকেই অপমান করছে মমতা সরকার।

আরও পড়ুন-গোঘাটে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি-ই! দাবি পরিবারের

Previous articleযে থালায় ড্রাগ আসে, তাতে ছেদ করব: জয়াকে পাল্টা তোপ রবির
Next articleগভীর ঘুমের মাঝেই প্রয়াত প্রাক্তন এই ভারতীয় ক্রিকেটার!