বঙ্গভঙ্গের দাবিকে কি সমর্থন করছে বিজেপি ? কণাদ দাশগুপ্তের কলম

 

কণাদ দাশগুপ্ত

বঙ্গভঙ্গে মরিয়া বিজেপি !

লোকসভার বাদল অধিবেশনে দার্জিলিং-এর বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ‘গোর্খাল্যান্ড’- এর দাবিতে সরব হলেন ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখ, বেলা ৪টে নাগাদ৷ প্রশ্ন উঠেছে, বঙ্গভঙ্গের দাবি নিয়েই কি একুশের ভোটে যাবে মরিয়া বিজেপি ?

লোকসভা টিভিতে দেখা গিয়েছে, ১৯ সেপ্টেম্বর,২০২০, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঠিক সামনের আসনে দাঁড়িয়ে বিজেপা সাংসদ রাজু বিস্তা সংসদে বলছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে ৩৭০ ধারা ইস্যুতে সাহসী ভূমিকা নিয়েছিলেন, দেশের দেড় কোটি গোর্খার আলাদা রাজ্যের দাবিও সেইভাবে পূরণ করবেন৷ ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির ‘সংকল্প পত্রে’ গোর্খাদের আলাদা রাজ্যের কথা বলা হয়েছিলো৷ অতীতে দু’বার, ১৯৮৮ ও ২০১১ সালে DGHC এবং GTA ঘোষণা হলেও, তাতে গোর্খাদের দাবি পূরণ হয়নি৷ এই সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই৷” রাজু বিস্তা যখন সংসদে ‘গোর্খাল্যান্ড’- এর দাবি জানাচ্ছেন, সেই সময় ঠিক তাঁর পিছনে বসে আছেন বঙ্গ- বিজেপি’র সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ৷

বিজেপি এক জাতীয়স্তরের রাজনৈতিক দল৷ এই দলের সাংসদরা স্পর্শকাতর কোনও সর্বভারতীয় বিষয়ে নিজের ইচ্ছামাফিক সংসদে ভাষন দেবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না৷ দলের নীতি’র বাইরে গিয়ে মাঠ-ময়দানের সমাবেশে কিছু বলা গেলেও, সংসদে দাঁড়িয়ে সেভাবে বলা যায়না৷ সুতরাং ধরে নেওয়াই উচিত, বিজেপির সাংসদ রাজু বিস্তা ওইদিন যেভাবে বাংলা ভাগ করে আলাদা গোর্খাল্যান্ড গঠনের পক্ষে সওয়াল করলেন, তাতে বিজেপির সায় আছে৷ সর্বভারতীয় বিজেপি এই ইস্যুর সমর্থক না বিরোধী, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷

কিন্তু এদিন লোকসভা টিভিতে দেখা গিয়েছে, বক্তার পিছনে বসে সতীর্থ সাংসদের বাংলাকে টুকরো করার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে দিলীপ ঘোষ টেবিল চাপড়াচ্ছেন দিলীপ ঘোষ৷ কে এই দিলীপ ঘোষ ? উনি বঙ্গ-বিজেপি’র শীর্ষতম নেতা, ওনার নেতৃত্বেই সম্ভবত বিজেপি একুশের ভোটে লড়বে৷ দিলীপবাবুর টেবিল চাপড়ানো দেখে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাকে ভেঙ্গে ‘গোর্খাল্যান্ড’ গঠনের দাবিকেই বিজেপি একুশের ভোটে ইস্যু করবে৷ দিলীপবাবুর এই টেবিল চাপড়ানো বা তালি দেওয়াই প্রমান করছে, বঙ্গ-বিজেপি বঙ্গভঙ্গের দাবিকে সমর্থন করে এবং আলাদা গোর্খাল্যান্ড চায়৷

বঙ্গভঙ্গের যে অ্যাজেণ্ডা ঝুলি থেকে বাইরে নিয়ে এলো বিজেপি, এবং যেভাবে বঙ্গ-বিজেপি সেই দাবিকে সমর্থন করলেন, তার ব্যাখ্যা বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরকে দিতেই হবে, আজ বা কাল৷

Previous articleকে এই ‘হামজা’? নাটের গুরুর খোঁজে মরিয়া তল্লাশি গোয়েন্দাদের
Next articleকোভিডের জের, বুধবার অথবা শুক্রবারে স্থগিত হতে পারে সংসদের অধিবেশন