“মানহানিকর” মন্তব্য, বাবুলকে দ্বিতীয় কড়া আইনি নোটিশ অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর

কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে কড়া আইনি নোটিশ পাঠালেন তৃণমূল যুব সভাপতি তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মানহানিরকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে বাবুলকে এই চিঠি ধরান অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। সেখানে আইনজীবী সঞ্জয় বসু স্পষ্ট উল্লেখ্য করেন, তাঁর মক্কেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু শব্দ বাছাই করে টুইটারে তুলে ধরে “ভিত্তিহীন ও মিথ্যা” রটনা করেছেন বাবুল সুপ্রিয়। যা মানহানিকর। যেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর তরফে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই বিতর্কিত টুইট প্রত্যাহার করে নিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে বাবুল সুপ্রিয়কে। অন্যথায়, মানহানির অভিযোগে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হবে বিজেপি সাংসদকে।

আরও পড়ুন- শুক্র গ্রহ আমাদের, আজব দাবি রাশিয়ার!

বাবুলকে পাঠানো আইনি নোটিশে সঞ্জয় বসু উল্লেখ করেন, “১৮ সেপ্টেম্বর আপনি (বাবুল সুপ্রিয়) আমার মক্কেলের (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছেন। এতে রাজ্য সরকারেরও সম্মানহানি হয়েছে। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই টুইটের বিবরণ অংশটি মিথ্যা এবং অসত্য। আমার মক্কেল সম্পর্কে আপনার (বাবুল সুপ্রিয়) মিথ্যা মন্তব্যে জনগণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছেছে। যা মানহানির প্রচেষ্টা। আপনার টুইটের ফলে আমার মক্কেলের সামাজিক মর্যাদা, খ্যাতি ও সম্মানের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।”

আইনজীবী সঞ্জয় বসুর আরও দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তৃতায় “অমানবিক মুখ্যমন্ত্রী” শব্দবন্ধটি ব্যবহারই করেননি। বরং তিনি বলেছিলেন, “আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অমানবিক এবং অক্লান্ত পরিশ্রমে…।” কিন্তু বাবুল সুপ্রিয় পৃথক দু’টি শব্দ বেছে নিয়ে পর পর জুড়ে দিয়ে “অভিষেকের মন্তব্য” হিসেবে টুইটারে তুলে ধরেছেন। যা স্পষ্টতই জালিয়াতি ও চক্রান্তের সামিল।

শুধু বাবুলকেই কড়া নোটিশ পাঠানো নয়, একইসঙ্গে টুইটার কর্তৃপক্ষকেও বিকৃত ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের জন্য কড়া নোটিশ পাঠিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু।

আরও পড়ুন- বঙ্গভঙ্গের দাবিকে কি সমর্থন করছে বিজেপি ? কণাদ দাশগুপ্তের কলম

প্রসঙ্গত, মহালয়ার সকালে ফেসবুক লাইভে বক্তৃতায় অভিষেক বলেছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর অমানবিক, অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলার একাধিক প্রকল্প বিশ্ব দরবারে সম্মানিত হচ্ছে।” বাবুল “অমানবিক” শব্দটি হাতিয়ার করে তৃণমূলকে খোঁচা দেন। অভিষেকের ভিডিও বার্তার নির্দিষ্ট অংশ তুলে ধরে বাবুল টুইটারে লেখেন, “মুখ ফসকে সত্যি কথাটা বেরিয়ে গেছে— “অমানবিক মুখ্যমন্ত্রী” আমি একটুও আশ্চর্য নই যে এটা পোস্ট করা ভিডিওতে রয়ে গিয়েছে। কারণ, যারা এটা শুট করেছে তারাও “অমানবিক মুখ্যমন্ত্রী” দিদির অমানবিক তৃণমূলী দুষ্কর্মে এতটাই লিপ্ত যে, ভুল করে “বেরিয়ে” যাওয়া এই সত্যটি ধরতেই পারেনি।”

এদিকে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর এই আইনি নোটিশকে “শিশুসুলভ” বলে পাল্টা টুইট করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, “বাংলায় একজন বড় বাচ্চা রয়েছে যে আমাকে আইনি ভাষায় লেখা প্রেমপত্র পাঠায়। আমি নিশ্চিত যে এটি অজ্ঞতা এবং অহংকারের কারণে করা হয়েছে। কারও নাম করিনি কিন্তু ‘‌ঠাকুরঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি’‌। প্রতিক্রিয়া কিন্তু আসবেই।”

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ আরও জানান, “এ রকম নোটিশ মাঝে মধ্যেই সবাইকেই পাঠানো হয়। আমার কাছেও আসে। আমার একটা ছোট বাক্স রয়েছে। তার মধ্যে ওই নোটিশগুলোকে রেখে দিই। আমার আইনজীবী যা করার করেন।”

আরও পড়ুন- কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে বর্ষীয়ান সাংবাদিককে নিয়োগ করল রাজ্য সরকার

Previous articleকেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে বর্ষীয়ান সাংবাদিককে নিয়োগ করল রাজ্য সরকার
Next article১২ কেজির পেল্লায় চিতলে হইচই জলপাইগুড়িতে