Tuesday, December 16, 2025

মমতা সম্পর্কে অনুপমের মন্তব্য “দায়িত্বজ্ঞানহীন”, তবে মোদিতেই ভরসা জয়ের

Date:

Share post:

সম্প্রতি সর্বভারতীয় বিজেপিতে রদবদল হয়েছে। তৈরি হয়েছে নতুন কমিটি। যেখানে তাৎপর্যপূর্ণভাবে জায়গা পেয়েছেন বাংলার কয়েকজন নেতা। রাজনৈতিক জন্মলগ্ন থেকে যাঁদের দূর-দূরান্ত পর্যন্ত গেরুয়া ঘরানার কোনও সম্পর্ক নেই অথচ অন্য দল থেকে এসেছেন, বাংলা থেকে তাঁদেরই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। যেমন- মুকুল রায় হয়েছেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি, নবাগত অনুপম হাজরা পেয়েছেন জাতীয় সম্পাদকের মর্যাদা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন “খাঁটি” বিজেপি ওয়ালারা। আর সেখানেই বিতর্কের সূত্রপাত।

বঙ্গ বিজেপির “পোস্টার বয়” বলে পরিচিত রাহুল সিনহার ঠাঁই নেই নতুন এই কমিটিতে। বরং, এই মুহূর্তে সেই অর্থে তাঁর পদই নেই। খুব স্বাভাবিক ভাবেই দলের প্রতি “বিদ্রোহী” আচরণ করতে দেখা গিয়েছে রাহুলবাবুকে।

এ প্রসঙ্গে বিজেপির আরেক জাতীয় নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “রাহুলদা বাংলার বিজেপিতে আমার গুরু। উনি আমাকে দলে নিয়েছিলেন। সাময়িক একটা অভিমান হয়েছে ওনার। তবে কিছুদিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কেন্দ্রের নেতারা ওনার জন্য কিছু একটা ভাববেন।”

আপনি তো বেশ কয়েক বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে পার্টি করছেন, আপনার কোনও পদোন্নতি হলো না কেন? যেখানে অন্য দল থেকে এসে মুকুল রায়, অনুপম হাজরা জাতীয়স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেন? প্রাক্তন অভিনেতার সোজাসাপ্টা উত্তর, “মুকুলদা অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছেন। অবশেষে তিনি পদ পেয়েছেন।”

আর অনুপম? জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ওর বয়স অল্প। শিক্ষিত ছেলে। কেন্দ্রের নেতারা কিছু নিশ্চয় বুঝেছেন, তাই জাতীয় সম্পাদক করেছেন।”

আপনিও তো বেশ কয়েক বছর ধরে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাহলে আপনি বাদ কেন? এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, “আমি দলে যোগ দেওয়ার পর জাতীয় কার্যকরী কমিটিতে রয়েছি। এখনও সেই কমিটিতে আছি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আমি। এছাড়াও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজ করার সুযোগ আমাকে দেওয়া হয়েছে।”

এগুলো তো নয় সরকারি পদ, কিন্তু দলীয়ভাবে আপনি কি আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার দাবিদার নয়? এই প্রশ্ন জয় বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে জানান, “বিজেপির তিন শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার উপর পুরো ভরসা আছে আমার। ওনারা যেটা ভাল বুঝেছেন সেটাই করেছেন। আর আমি তো নরেন্দ্র মোদিকে দেখে পার্টি করতে এসেছি। ওনাকে আমি রামকৃষ্ণের মতো দেখি। ওনার আদর্শ অনুসরণ করি। সেখানে পদটা বড় বিষয় নয়। মোদিজি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডার উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।”

এদিকে অনুপম হাজরা নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় বিতর্কে জড়িয়েছেন। কর্মিসভায় হাততালি পাওয়ার জন্য অনুপম সংবাদ মাধ্যমের সামনে আলটপকা মন্তব্য করে বলেন, “আমার যদি কোনওদিন করোনা হয়, তাহলে প্রথমে মমতা ব্যানার্জিকে জড়িয়ে ধরবো…!” এক্ষেত্রে অবশ্য অনুপমের এই মন্তব্যের প্রবল বিরোধিতা করেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছে অনুপম। একজন মুখ্যমন্ত্রী ও মহিলা সম্পর্কে কথাবার্তায় সংযম প্রয়োজন। ওর মতো শিক্ষিত ছেলের মুখে এমন কথা শোভা পায় না। এটাকে আমি সমর্থন করি না!”

আরও পড়ুন- বিদ্রোহের ডাক সোনিয়ার, কংগ্রেস- রাজ্যে কৃষি-বিধি লাগু হবেনা

spot_img

Related articles

মোটা অঙ্কের বাজেট নিয়ে মিনি নিলামে নামছে কেকেআর, দল পেতে পারেন ঈশ্বরণ

মঙ্গলবার আবুধাবিতে ২০২৬ সালের আইপিএলের মিনি নিলাম(IPL Mini Auction)। ৭৭টি জায়গার জন্য নিলামে উঠবেন ৩৫০ ক্রিকেটার। এই ৩৫০...

বাংলা না কি জ্বলছে! গদি মিডিয়ার অপপ্রচারকে ধুয়ে দিলেন সাধু থেকে আমজনতা

বাংলা না কি জ্বলছে! এখানে খুন-জখমের রাজনীতি চলছে! আক্রান্ত হিন্দু! গদি মিডিয়া এই খবর করতে এসেছিল কলকাতায় আর...

রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা! কেন্দ্রের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে লোকসভায় সোচ্চার তৃণমূল

পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে বাগে আনতে না পেরে এবার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো লঙ্ঘন করে...

মতুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা! রাজ্যসভায় বিজেপির পর্দাফাঁস সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মতুয়াকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে মোদি সরকার ও বিজেপি—এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার...