বেকসুর খালাস বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আদবানি,মুরলী মনোহর যোশী, কল্যাণ সিং, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ার, সাক্ষী মহারাজ, অশোক সিঙ্ঘল,গিরিরাজ কিশোর, বিষ্ণু হরি ডালমিয়া,সাধ্বী ঋতম্ভরা-সহ ৩২ অভিযুক্তই৷

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো না৷ ঘটনাচক্রে এই ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনাস্থলে উপস্থিত নেতারা মসজিদ ভাঙ্গতে বিন্দুমাত্র প্ররোচনা দেননি৷ বরং তাঁরা করসেবকদের নিরস্ত করার চেষ্টা করেছেন৷

লখনউয়ের বিশেষ CBI আদালতের বিচারক এসকে যাদব বুধবার বাবরি ভাঙ্গার ঘটনার ২৮ বছর পর এই রায় ঘোষণা করেছেন৷ CBI-এর কোনও তথ্যপ্রমানই গ্রহণ করেনি আদালত৷ মসজিদ ভাঙ্গার যে ভিডিও ফুটেজ CBI দিয়েছিলো প্রমান হিসাবে, সেই ফুটেজকে আদালত বলেছে, “তৈরি করা ফুটেজ”!
আদালত এই রায় ঘোষণার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিনন্দন জানিয়েছেন আদবানি ও যোশিকে৷

প্রায় তিন দশক পর বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় রায়ে আদবানিদের সাফাইকেই গ্রহন করে বলেছে, ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্তদের সম্পর্ক ছিলোনা৷ অভিযুক্তরা কোনও উসকানি দেননি৷ বিচারক বলেছেন, অভিযোগ প্রমানে CBI-এর পেশ করা তথ্য অপরাধ প্রমানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ছিলোনা৷
এদিন রায় ঘোষণার সময় আদবানি, যোশী, উমা ভারতী ও কল্যাণ সিং ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা সশরীরে আদালতে হাজির ছিলেন৷ করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে এই মুহূর্তে হৃষীকেশের হাসপাতালে ভর্তি উমা ভারতী। অতিমারির মধ্যে বয়সজনিত কারণে লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মুরলি মনোহর যোশী আদালতে যাবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন৷ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁরা আদালতে হাজিরা দেন৷ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কল্যাণ সিং। তিনিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই আদালতে হাজিরা দেন বলে খবর।
১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। CBI চার্জশিটে বলেছিলো, প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলিমনোহর যোশী, উমা ভারতীর মতো নেতা- নেত্রীরা মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উস্কানিতে লিপ্ত ছিলেন৷ লখনউয়ের বিশেষ CBI আদালত এই অভিযোগ খারিজ করেছে৷
এ দিন বেলা ১১টার পর রায় ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বাবরি ধ্বংস মামলায় মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, গিরিরাজ কিশোর, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসের মতো ১৭ জন ইতিমধ্যে প্রয়াত। বাকি ৩২ জনের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন আইনজীবী কেকে মিশ্র।
এদিন আদালত চত্বরের নিরাপত্তা আঁটোসাটো করা হয়। অভিযুক্তরা, তাঁদের আইনজীবী এবং CBI-এর আইনজীবীরা ছাড়া আর কারও আদালতে ঢোকার অনুমতি ছিলো না। একটি মাত্র ফটক দিয়েই আদালতে ঢোকা গিয়েছে। অযথা যাতে জটলা না তৈরি হয়, তার জন্য আদালত সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে ব্যারিকেড বসানো ছিলো। যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো অন্য রাস্তা দিয়ে।

আরও পড়ুন : ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৮৭ ধর্ষণ, রোজ খুন ৭৯ জন, বলছে NCRB
