বাবরি ধ্বংস মামলার কালানুক্রম, ১৯৯২ – ২০২০

◾১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়৷

◾ তদন্ত শেষ করে CBI চার্জশিট দেয়।

◾মোট ৩২ জন অভিযুক্ত। এছাড়া নামধামহীন আরও অসংখ্য করসেবক।

◾২৮ বছর মামলা চলেছে৷ অভিযুক্তদের মধ্যে ১৬ জন আগেই প্রয়াত।

◾সঙ্ঘ পরিবারের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে নাম আছে এই মামলায়, অভিযুক্ত হিসেবে৷ লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীরাও আছেন।

◾উত্তরপ্রদেশে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার, সাক্ষী মহারাজ, ভিএইচপি নেত্রী সাধ্বী ঋতম্ভরা এবং রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের সভাপতি নৃত্য গোপাল দাস ও সম্পাদক চম্পত রাইয়ের নামও চার্জশিটে আছে।

◾সবমিলিয়ে ৪৮ জন অভিযুক্ত৷ মামলা চলাকালীন ১৬ জন মারা যান। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন, বিশ্বহিন্দুপরিষদ নেতা অশোক সিঙ্ঘল, গিরিরাজ কিশোর, বিষ্ণুহরি ডালমিয়া ও শিবসেনা সুপ্রিমো বাল ঠাকরে।

◾বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনার পর পুরোনো ফৈজাবাদ জেলায় পুলিস ২টি FIR করে।

◾একটিতে অজ্ঞাতপরিচয় লাখো করসেবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। লখনউয়ের আদালতে শুরু হয় মামলা।

◾দ্বিতীয় FIR-এ আদবানি, জোশী, উমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়।
রায়বেরেলির আদালতে শুরু হয় মামলা।

◾তদন্ত শুরুর পর ১৯৯৩ সালের ২ অক্টোবর CBI মামলায় যৌথ চার্জশিট দেয়।

◾৪৮জন নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও মসজিদ ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে।

◾বাবরি মসজিদ ভাঙার সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন আদবানি, যোশীরা। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, সংঘর্ষে উস্কানি, ফৌজদারি ষড়যন্ত্র-সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হন তাঁরা।

◾২০০১ সালে আদবানি-সহ ১৪ জন নেতাকে, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে খালাস করে নিম্ন আদালত।

◾২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টও নিম্ন আদালতের নির্দেশ বহাল রেখে, আদবানিদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।

◾২০১১ সালে CBI-এর এক আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়। আদবানি-সহ ১৪ জন নেতার বিরুদ্ধে ফিরে আসে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।

◾সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই, লখনউয়ের CBI আদালতে করসেবক এবং আদবানিদের বিরুদ্ধে ২টি মামলার একসঙ্গে শুনানি শুরু হয়।

◾প্রায় তিন দশক পর গত ১ সেপ্টেম্বর শেষ হয় সেই শুনানি।

◾২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, নিয়মিত শুনানি করে ২ বছরের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে।

◾বারবার সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়।

◾মামলা শেষ করতে লখনউয়ের আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদবের অবসরের দিন পিছিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত।

◾লখনউয়ের আদালতে নিজেদের বয়ানে অভিযুক্তরা দাবি করেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই ষড়যন্ত্রে অভিযোগ আনা হয়।

◾করোনা পরিস্থিতিতে ভিডিও কনফারেন্সে সাক্ষ্য দেন আদবানি- যোশী।

◾উমা ভারতী, কল্যাণ সিং-রা সশরীরে হাজিরা দেন।

◾কল্যাণ সিং ছাড়া কেউই, নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে কোনও নথি দেননি।

◾আদালতের বাইরে উমা ভারতী মন্তব্য করেছিলেন, মসজিদ ধ্বংসের জন্য ফাঁসি দেওয়া হলেও তিনি নিজেকে ধন্য মনে করবেন৷

◾আদবানি, যোশীরা সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও লিবেরহান কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, বাবরি ধ্বংস করার কাজ পূর্ব-পরিকল্পিত।

◾২০১৯-এর নভেম্বরে অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষেই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

◾ ওই রায়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, “আদালতের নির্দেশ অমান্য করে, বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়। বাবরি মসজিদ ধ্বংসে ভাঙা হয় আইন। হিসাব কষেই নষ্ট করে দেওয়া হয় মানুষের উপাসনাস্থল।”

◾ বাবরি ধ্বংস মামলায় ৩৫০ জনের সাক্ষ্য নেয় নিম্ন আদালত। খতিয়ে দেখা হয় প্রায় ৬০০ নথি।

◾ইতিমধ্যেই কেটে গেছে তিন দশক।

◾বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় আজ, বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০৷

◾আজকের রায়ের পর এই মামলা উচ্চ আদালতে গেলে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে আরও কতদিন লাগবে, সেই প্রশ্নই এখন বড়ভাবে দেখা দিয়েছে৷

আরও পড়ুন-৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২: এই রায় চূড়ান্ত নয়, কণাদ দাশগুপ্তর কলম

Previous articleএবার করোনা আক্রান্ত অভিনেতা সোহম
Next articleএকের পর এক জনহিতকর কাজ, রাষ্ট্রসংঘ থেকে সম্মানিত সোনু সুদ