Wednesday, November 12, 2025

বাংলায় দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসবে কংগ্রেস, দাবি অধীরের

Date:

Share post:

কংগ্রেস জাতীয় দল। দীর্ঘসময় দেশ শাসন করেছে তারা। শাসন করেছে এ রাজ্যেও। কিন্তু বিগত একদশক ধরে এই বাংলার বুকে কংগ্রেসকে শুনে আসতে হচ্ছে “সাইন বোর্ড” হওয়া দল। উত্তরবঙ্গের দু-একটি জেলা ছাড়া তাদের অস্তিত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে উঠে এসেছে বিজেপি। কংগ্রেসের মতো বামেরাও কার্যত সাইন বোর্ডে পরিণত হয়েছে এ রাজ্যে। তাই বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস হাত ধরাধরি করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই করছে। কিন্তু জোট রাজনীতিতে ব্যর্থ বাম ও কংগ্রেস।

এরইমধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দাবি করলেন, পশ্চিমবঙ্গে আবার কংগ্রেস তার সুনাম ফিরে পাবে। সংগঠন মজবুত হবে। শুধু তাই নয়, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তি হিসাবে বিজেপি বা অন্য কোনও দল নয়, তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসবে কংগ্রেসেই।

আজ, শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস দফতর বিধান ভবন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত কংগ্রেসের এক বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব দেন অধীর চৌধুরী। সোমেন মিত্রের প্রয়াণ এবং প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচিত সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কলকাতার বুকে এতবড় মিছিলের নেতৃত্ব দিলেন অধীর। মিছিলে তাঁর সঙ্গে পা মিলিয়েছে বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায়, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কৃষ্ণা দেবনাথ, শুভঙ্কর সরকার, ঋজু ঘোষাল প্রমুখ। ছিলেন প্রয়াত সোমেন মিত্রের পুত্র রোহন মিত্র। মিছিলে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা, উচ্ছ্বাস, আবেগ দেখে উৎফুল্ল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি দাবি করেছেন, এইতো সবে শুরু। আরও অনেক কিছু দেখাবে কংগ্রেস। তবে এই মিছিলকে কেন্দ্র করে চরম-বিশৃঙ্খলা দেখা যায় কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। অধীর চৌধুরীকে ঘিরে ধরে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা এতটাই উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছিলেন, যে সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত তাদের নিজেদের কাজ করতে সমস্যায় পড়ে।

অন্যদিকে, খুব তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন ছিল কংগ্রেসের নিজস্ব মিছিল। যেখানে ছিল না বামেরা। অথচ, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে শহরের বুকে একাধিক যৌথ মিছিল করেছে বাম-কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বাংলায় তাদের নিজস্ব শক্তি মেপে নিতে কংগ্রেসের এই একক মিছিল। এবং নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে একুশের আগে জোটসঙ্গী বামেদের আসন সমঝোতা নিয়ে একটা বার্তা দিয়ে রাখা। “বাংলায় দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসবে কংগ্রেস”, অধীর চৌধুরীর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

বামেদের বার্তা দেওয়া রাজনৈতিক কৌশল হলেও অধীর চৌধুরীর এদিনের মিছিল ছিল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিরোধী ইস্যু নিয়ে। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এদিন কার্যত রাস্তায় নেমেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব সমস্যা, আইন শৃঙ্খলার অবনতি, স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা ও বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিধান ভবন থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত এই মিছিল হয়।

ধর্মতলায় মিছিল শেষে অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাজভবনে যায়। সেখানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ডেপুটেশন জমা দেন তাঁরা।

আরও পড়ুন-জেলে বসেই মণীশ খুনের ছক! বিজেপি নেতা হত্যায় নয়া মোড়

spot_img

Related articles

আবারও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি, চিনে ‘ব্রিকস স্কিলস কম্পিটিশন’-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে ছাত্রছাত্রীরা

ফের ইতিহাস গড়ল সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি (এসএনইউ)। গত বছরের পর আবারও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে চিনে অনুষ্ঠিত...

বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই BLA নিয়োগে নয়া নির্দেশিকা ! কমিশনকে তোপ তৃণমূলের

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে উত্তাল রাজনৈতিক মহল। বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) নিয়োগের নিয়ম পরিবর্তন করে এক...

বোধি ভবনের বার্ষিক উৎসব, সংবর্ধিত অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়

দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম সেরা CBSE বিদ্যালয় বোধি ভবন কলেজিয়েট স্কুলে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হল বার্ষিক অনুষ্ঠান। এই উপলক্ষে উত্তম...

সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় সৃজিত?

১৫ বছর টলিউডে রাজত্ব করেছেন। ঝুলিতে রয়েছে দুর্দান্ত সব ছবি। কিন্তু এবার সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করতে চলেছেন...