কাজ করতে গিয়ে আচমকা ধস, ১৫ দিন ধরে কুয়োর নীচে আটকে শ্রমিক

পরিবারের দায়িত্ব সামলাতে, অনেকেই নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করেন। এই করোনা পরিস্থিতিতে এমন উদাহরণ আমরা ভুরি ভুরি দেখেছি। চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলেই রয়েছে সেই তালিকায়। কাজের সূত্রে বিপদেও পড়তে হয় তাঁদের। তেমনই এক ঘটনা ঘটল রাজস্থানের পালিতে।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটে নাগাদ, ৯০ ফিট গভীর একটি কুয়োর ভিতরে কাজ করতে নেমেছিলেন বছর ৪৫-এর শ্রমিক মুপারাম মিনা। বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিরে আসবেন। কিন্তু ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও, এখনও মেলেনি তাঁর হদিশ।

আরও পড়ুন : ১০০ টাকার নতুন কয়েন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

জানা গেছে, ওই দিন বিকেলে মুপারামের সঙ্গে আরও একজন নীচে কাজ করতে নেমেছিল। আচমকাই ধস নামে। ওই দ্বিতীয় ব্যক্তি একটু ওপরদিকে থাকায়, তিনি কোনওভাবে ওপরে উঠে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু উঠে আসতে পারেননি মুপারাম। ৯০ ফিট গভীর একটি কুয়োর নীচে আটকে পড়েন তিনি।

ঘটনার কথা জানাজানি হতেই, খবর দেওয়া হয় প্রশাসনকে। মুপারামকে ওপরে তোলার জন্য, বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছিল। পূর্ত দফতর, রেলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক মেশিন আনা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ইতিমধ্যে পুলিশের তরফে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। যাচাই না করেই কিভাবে একজন মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করলেন পুলিশকর্মীরা? পুলিশের যুক্তি, এতদিন ধরে মাটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন ওই ব্যক্তি। খাবার ও জল ছাড়া এতদিন কারোর পক্ষে কোনওভাবেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন : এবার যোগী রাজ্যে একসঙ্গে তিন দলিতকন্যার উপর অ্যাসিড হামলা! প্রকট প্রশাসনিক ব্যর্থতা

প্রথম কয়েক দিন আশায় আশায়, কুয়োর পাশেই বসে ছিলেন মুপারামের পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু এখন তারাও যেন হাল ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের এখন দাবি, যেভাবেই হোক প্রশাসন যেন ওনার মৃতদেহ অন্তত উদ্ধারের চেষ্টা করে।

এদিকে যে কুয়োয় নেমে ওই শ্রমিক কাজ করছিলেন, তার মালিক জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে তাঁর। তিনি পেশায় অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ১০০০ টাকা চুক্তিতে গত তিন সপ্তাহ ধরে ওই জমিতেই কাজ করছিলেন মুপারাম। এই কুয়ো সংলগ্ন জমিতে কাপাস ক্ষেত রয়েছে। কিন্তু জলের সংস্থান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপদে পড়েছেন তিনি। অবিলম্বে ওই শ্রমিককে বাইরে বের করার আর্জি জানিয়েছেন তিনিও।

Previous articleকরোনাকালে দোলায় আগমন মা দুর্গার, ফের মহামারির ইঙ্গিত!
Next articleফের তীরে এসে ডুবল তরী, আবার মাঝপথে বন্ধ হল করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল