চিকিৎসায় সামান্য উন্নতি, ১৪দিনের মাথায় আজ ফের করোনা টেস্ট সৌমিত্রর

লড়ছেন ফেলুদা! গত দু’দিনের তুলনায় চিকিৎসায় সামান্য উন্নতি হয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থার। বেসরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের দাবি, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। খুলে নেওয়া হয়েছে বাইপ্যাপ সাপোর্ট। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালভাবেই কাজ করছে। আজ, বুধবার ১৪ দিনের মাথায় ফের করোনা টেস্ট হবে সৌমিত্রবাবুর। তবে এখনও ঝুঁকি পুরোপুরি কাটেনি ৮৫ বছর বয়সী অভিনেতার।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরে তাঁকে যে ওষুধ চলছিল, সেটাই আপাতত অপরিবর্তিত রয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু’বার তাঁর প্লাজমা থেরাপি হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে খুব ভালই ঘুমিয়েছেন অভিনেতা। তবে সোডিয়াম একটু বেশি থাকায় চিন্তায় চিকিৎসকরা।

প্রসঙ্গত,করোনা সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বার্ধক্যজনিত কারণে শরীরে আরও কিছু কঠিন সমস্যা ধরা পড়ে টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। গত কয়েকদিনে ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। এই সময়কালের মধ্যে তাঁর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার। বাড়ে অস্থিরতা। অসংলগ্ন আচরণ।

শুরু থেকেই বেলভিউয়ের ১০জন চিকিৎসক এবং কলকাতার অন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে আরও ৬ জন চিকিৎসক মিলিয়ে মোট ১৬ জনের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু বর্ষীয়ান অভিনেতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও উদ্বিগ্ন মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরাও।

গত সোমবার রাতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। যদিও এখন তা খুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রস্টেটে ক্যান্সার নতুন করে ছড়িয়ে প‌ড়াতেই এই বিপত্তি। চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন, তাঁর ক্যন্সার ইতিমধ্যেই ফুসফুস ও মস্তিষ্কে সংক্রমিত হয়েছে। সে সময় সৌমিত্রবাবুর আচ্ছন্ন ভাব না কাটায় চিকিৎসকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এছাড়াও নতুন করে আবারও জ্বর আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা। আগের মতোই চলছে অক্সিজেন। গত

অভিনেতার কো-মর্বিডিটির কারণেই প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে চিকিৎসকরা। করোনা আক্রান্ত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন (মিনিটে ১৫ লিটার) দিতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে উচ্চ পিএসএ কাউন্ট, ডায়াবিটিস-সহ নানা আনুষঙ্গিক রোগ এবং ‘কোভিড এনকেলোপ্যাথি’ (মস্তিষ্কে কোভিড সংক্রমণের প্রভাব) চিকিৎসকদের চিন্তায় রেখেছে। এ ছাড়া, তাঁর প্রস্রাবে ই-কোলাই পাওয়া গিয়েছে। দেহে সোডিয়াম বেড়েছে, জলের ঘাটতি রয়েছে। তাই কোভিড নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও ডাক্তারেরা সৌমিত্রবাবুর স্নায়বিক পরিস্থিতি জরিপ করা, হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পারিপার্শ্বিক সংক্রমণ মোকাবিলায় জোর দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ৮৫ বছর বয়সী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে করোনা সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত মঙ্গলবার। তার আগে সোমবার রাতেই তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। শুক্রবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। সেখান থেকে কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার পর গতকাল, সোমবার রাত থেকে অভিনেতার শারীরিক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে ভেন্টিলেশনে পর্যন্ত দেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার-পরিজন থেকে তাঁর কর্ম জগৎ এবং অসংখ্য অনুরাগী অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

তবে হাসপাতাল সূত্রে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, চিকিৎসায় আগের চেয়ে কিছুটা ভালো সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। যদিও ঝুঁকির বাইরে নন তিনি। তাই উদ্বেগ একটা থাকছেই।

আরও পড়ুন-দুর্গোৎসবের গাইড ম্যাপ প্রকাশ শুভেন্দুর, সভা থেকে প্রশংসা মুখ্যমন্ত্রীর

Previous articleভয়ঙ্কর অত্যাধুনিক: শব্দের গতিকে তুচ্ছ করে শত্রুকে ধ্বংস করল রাশিয়ার নয়া মিসাইল
Next articleশর্তসাপেক্ষে মুক্তি : অতিমারিতে ‘ফিরোজা’য় দিন কাটছে খালেদার