স্বাস্থ্য-বিধিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ, নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের

খায়রুল আলম (ঢাকা) : দুর্গাপুজো চলাকালীন মণ্ডপ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশ, প্রশাসন ও সরকারের। বললেন পুজো উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত।

বুধবার বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে পুজো পরিষদের চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে মণ্ডপের নিরাপত্তায় স্থায়ীভাবে পুলিশ না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শ্যামল কুমার পালিত বলেন, “এখনও চট্টগ্রাম জেলায় কোনো পুজো মণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আমরা পাইনি। আমরা স্বস্তিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নিরাপদে পুজো করতে চাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, ব়্যাফ, পুলিশ, আনসার ভিডিপির সদস্যরা টহল দেবেন বলে জানতে পেরেছি।”

প্রতিটি মণ্ডপে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে পুজো হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো করার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করছি আমরা- ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’।

লিখিত বক্তব্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব জানান, “এবার চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন ১৫ উপজেলায় সর্বজনীন ভাবে ১ হাজার ৫২৪টি ও পারিবারিক ভাবে ৩৮৯টি মিলে ১ হাজার ৯১৩টি পুজো মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হচ্ছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর চণ্ডীতীর্থ বোয়ালখালীর কড়লডেঙ্গা পাহাড়স্থ মেধস আশ্রমে মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে জেলাব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। ”

বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে নিজে সুস্থ থাকা এবং অপরকে নিরাপদ রাখার প্রত্যয়ে এবার দুর্গাপুজো হবে সংক্ষিপ্ত পরিসরে। আমরা জেলার পুজা মণ্ডপগুলোতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে-মণ্ডপ পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের জন্য খোলামেলা রাখা। শুধু পুষ্পাঞ্জলিদানের সময় মাইকের ব্যবহার করা।

সাউন্ড সিস্টেম বা ডিজের ব্যবহার না করা। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে- প্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা ইত্যাদি না করা। মণ্ডপের প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার অথবা সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা।

পূজারী ও দর্শনার্থীদের মুখে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা। মণ্ডপ গেইটে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ভিড় এড়াতে অল্পসংখ্যক পূজার্থীকে দফায় দফায় পুষ্পাঞ্জলিদান অথবা ভার্চুয়াল পুষ্পাঞ্জলিদানের ব্যবস্থা রাখা।

শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মণ্ডপে প্রবেশ এবং প্রস্থানের আলাদা ব্যবস্থা রাখা। আতশবাজি বা পটকা পরিহার করা। বিজয়া দশমীতে সূর্যাস্তের মধ্যে প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন করা এবং যথাসম্ভব মণ্ডপের কাছের জলাশয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন করা।

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী সুরক্ষার জন্য প্রতিমা নিরঞ্জন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে একটি মডেল মন্দির, চণ্ডীর উদ্ভবতীর্থ মেধস আশ্রমকে ঐতিহ্যবাহী মন্দির হিসেবে তালিকাভুক্ত করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, দুর্গাপুজোয় চার দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে জটিলতা নিরসনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, জেলা পুজো পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন বিশ্বাস, বিপুল দত্ত, বিজয় গোপাল বৈষ্ণব, বিশ্বজিত পালিত, উত্তম শর্মা, কল্লোল সেন, রিমন মুহুরী, দোলন মজুমদার, নিউটন সরকার, মাস্টার অশোক কুমার নাথ, কাজল শীল, অধ্যাপক শিপুল দে, সব্যসাচী দেব টিপু, মৃণাল কান্তি দাশ প্রমুখ।

আরও পড়ুন-এখনও ডাক আসেনি, ঢাক কাঁধে স্টেশনে অপেক্ষায় ঢাকির দল

Previous articleসারেগামাপা-র চার বিচারকই কোভিড পজিটিভ, শোয়ের শুটিং ঘিরে জল্পনা
Next articleরোহিঙ্গাদের তহবিল গঠনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন