মোদির ‘ফিতে-কাটা’ পুজোয় গরহাজির থেকে দলে প্রশংসায় ভাসলেন দিলীপ ঘোষ

দুরন্ত সাহস দেখালেন দিলীপ ঘোষ৷

যে পুজোর উদ্বোধন করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সেই পুজোর ছায়াও মাড়ালেন না রাজ্য বিজেপির সভাপতি৷ শুধু দিলীপবাবুই নয়, পুজোর আসরে দেখা যায়নি বঙ্গ-বিজেপির অভ্যন্তরে ‘দিলীপ-পন্থী’ হিসেবে পরিচিত নেতাদেরও৷ আবার শুধুই দিলীপ- অনুগামীরাই যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা নয়, রাজ্য সভাপতির সঙ্গে তথাকথিত সখ্য না থাকা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহাও গরহাজির ছিলেন বিজেপি’‌র পুজো উদ্বোধনে। যথেষ্ট সাহস, দৃঢ়প্রত্যয় এবং Guts না থাকলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না৷ কারন, পুজোর উদ্বোধক নরেন্দ্র মোদি৷

বিজেপি’র দুর্গাপুজোয় অনেক হেভিওয়েট নেতাই গরহাজির ছিলেন৷সম্ভবত, মুকুল রায়, বিজয়বর্গীয়রা এই পুজোর উদ্যোক্তা হওয়ায় অনেক চেনা মুখকেই দেখা যায়নি৷ দিলীপবাবুদের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে সাহসী৷ রাজনীতিতে বিরল বিশেষ এক কারনে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পুজোর উদ্বোধন করেছেন, সেই পুজো বয়কট করেছে রাজ্য তৃণমূল অথবা সোনিয়া গান্ধীর উদ্বোধন করা পুজোর ত্রিসীমানায় ঢুকলেন না অধীর চৌধুরি, এমন ঘটনা ভাবা’ও বোকামি, এমন ঘটনাও অসম্ভব৷ অথচ, অবলীলায় সে কাজ করে দেখালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷

দল হিসাবে বিজেপি কোনও পুজোর আয়োজক হতে পারেনা৷ শুরু থেকে এমনই বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ৷ বলেছিলেন, দলের সভাপতি হিসেবে দলের এমন কোনও কর্মসূচির কথা তিনি জানতেন না৷ সেকারনেই ইজেডসিসি-তে তিনি পা রাখেননি৷ প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ওই পুজোর উদ্বোধন করছেন জেনেও তিনি অনড় ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে৷ প্রধানমন্ত্রীর ভারচুয়াল উপস্থিতি সত্ত্বেও দিলীপ ঘোষ এবং টিম-দিলীপ গরহাজির-ই ছিলেন৷

দিল্লির বার্তা, বিভাজনের স্থান নেই, ভোটের মুখে, সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে৷ কিন্তু তেমন হলো না৷ প্রকট হলো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব৷ যে পুজো উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, সেই পুজোরই এই ছবি৷ পুজো ঘোষণার মুহুর্ত থেকেই দিলীপ ঘোষ এই আয়োজনে আপত্তি জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু সেই আপত্তিতে কাজ হয়নি৷ উল্টে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়লেন নরেন্দ্র মোদি৷ তা সত্ত্বেও দিলীপবাবুরা ঘোষিত অবস্থান থেকে সরেননি৷ এই দৃঢ়তা প্রদর্শন সহজ কথা নয়৷ মোদিজি এই পুজোর ‘ফিতে কাটবেন’ জেনেও রাজ্য সভাপতিকে টলানো যায়নি৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দিলীপবাবুদের এই ভূমিকায় স্পষ্ট হয়েছে বঙ্গ-বিজেপির সর্বাঙ্গেই এখন কোন্দলের পদ্মকাঁটা ফুটে আছে৷ তবুও রাজ্য রাজনীতিতে সত্যিই নতুন এক নজির তৈরি করেছেন দিলীপ ঘোষ৷

Previous articleগণধর্ষণের শাস্তি হোক ফাঁসি, কেন্দ্রকে সুপারিশ কর্নাটক হাইকোর্টের
Next articleবড়িশা ক্লাবের “পরিযায়ী” দুর্গা প্রতিমা সংরক্ষণের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী