মর্যাদা পাচ্ছেন না বলেই কি তৃণমূলে যোগাযোগ নিশীথের, নাকি বিজেপিতে যাবেন মিহির?

কিশোর সাহা

কোচবিহারের দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন এলাকার বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা নিশীথ প্রামাণিক। তা নিয়েই দুই শিবিরে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। শোরগোল পড়েছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতেও।

তৃণমূলের অন্দরের একটি সূত্রের দাবি, বিজেপি নেতাদের একাংশের কাজকর্মে বিরক্ত হয়ে ফের তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন নিশীথ প্রামাণিক। অন্যপক্ষের দাবি, কোচবিহারে তৃণমূলের কোন্দলের জেরে যাবতীয় পদ থেকে সরে দাঁড়ানো বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে গেলে কতটা কী গুরুত্ব পাওয়া যাবে নিশীথের কাছ থেকে তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

যদিও মিহিরবাবু দাবি করেছেন, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতেই নিশীথ তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে।
বিজেপির কোচবিহার জেলার অন্দরমহলের কয়েকজন জানান, বছর দেড়েক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও দলে সেভাবে গুরুত্ব পাননি নিশীথ প্রামাণিক। তরুণ সাংসদ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী কিংবা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিচালনার আংশিক দায়িত্বও দেওয়া হয়নি তাঁকে। তা নিয়ে তাঁর অনুগামীদের অনেকেরই ক্ষোভ রয়েছে। শুধু তাই নয়, দলের একাংশ এখনও কোচবিহারের বিজেপি সাংসদকে নবাগত হিসেবেই দেখেন। সম্প্রতি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা শিলিগুড়িতে দলীয় কাজে গেলে সেখানেও নিশিথকে জায়গা পেতে ঠেলাঠেলি করতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে লোকসভা ভোটে জেতেন। কিন্তু সাংসদ হওয়ার পরে দলে কিংবা দিল্লিতে নিশীথ প্রামাণিক সেভাবে গুরুত্ব না পাওয়ায় তাঁর কাছের লোকদের অনেকেই হতাশ। কোচবিহারের ভূমিপুত্রদের দাবি অনুযায়ী, নারায়ণী সেনা রেজিমেন্ট তৈরি কিংবা বিমানবন্দর ফের চালু করার ব্যাপারেও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের দিয়ে কোনও ঘোষণা করাতে পারেননি নিশীথ। দলের রাজ্য যুব নেতার সভাপতি পদের দাবিদার হলেও নিশীথবাবুর নাম বিবেচনার জন্য ভাবাই হয়নি বলেও অনেকের ক্ষোভ রয়েছে।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলার এক শীর্ষ নেতা জানান, অতীতে যাঁর সঙ্গে গোলমালের জেরে নিশীথকে তৃণমূলে কোণঠাসা হতে হয়েছিল সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এখন জেলার সংগঠনের কোনও পদে নেই। বরং পার্থপ্রতিম রায়কে সভাপতি করে যুবদের দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিক থেকে দেখলে দলের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক বলে পরিচিত মিহিরবাবুর মতো প্রবীণ নেতার মাধ্যমে ফেরার রাস্তা মসৃণ করতে নিশীথ আসরে নেমেছেন বলেও অনেকের ধারনা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় জানান, নিশীথ প্রামাণিক দলে ফেরার জন্যই প্রবীণ নেতার সঙ্গে নানা কথাবার্তা বলেছেন বলেই তিনি শুনেছেন।

কিন্তু মিহির গোস্বামীর অনুগামীদের মতে, সম্প্রতি দলের জেলার নানা কমিটিতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা ঠাঁই না পাওয়ায়, মিহিরবাবু সব দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি নিলেও দল ছাড়ার কথা কখনও ভাবেননি। বরং, যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁরা কে কতটা মর্যাদা পাচ্ছেন তা নিয়েই নিশীথবাবু ও মিহিরবাবুর মধ্যে অনেকক্ষণ কথাবার্তা হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।

আরও পড়ুন- করোনার জের, পরীক্ষা ছাড়াই পাসের দাবিতে সরব পড়ুয়ারা

Previous articleকরোনার জের, পরীক্ষা ছাড়াই পাসের দাবিতে সরব পড়ুয়ারা
Next articleবাংলা আল-কায়দার বিচরণ ভূমি! রাজ্যপালের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ কংগ্রেসের