অমিত শাহের মালা দেওয়া “বিরসা মুণ্ডা”র মূর্তি গঙ্গাজলে ধুয়ে পবিত্র করল তৃণমূল

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে মূর্তিতে মালা দিয়েছিলেন, সেই মূর্তির পরিচয় নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মহলে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। “আদিবাসী সমাজের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। বিরসা মুণ্ডা দলিত-সহ আদিবাসী সমাজের কাছে ভগবান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি মডেলে মালা দিয়ে যেভাবে বিরসা মুণ্ডাকে অপমান করেছেন, তাতে সমগ্র আদিবাসী সমাজ অপমানিত। আদিবাসীদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচী গড়ে তোলা হবে।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহ’র বাঁকুড়া সফর শেষে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলো শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

শুধু হুঁশিয়ারি দিয়েই থেমে থাকেনি ঘাসফুল শিবির। আজ, শুক্রবার বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন পুয়াবাগান চৌরাস্তার মোড়ে মোড়ে অমিত শাহ যে বিতর্কিত মূর্তিতে মালা পড়িয়েছিলেন, সেই মূর্তি “অপবিত্র” হয়েছে। তাই মূর্তিতে গঙ্গাজল আর দুধ দিয়ে ধুয়ে তা “পবিত্র” করা হলো। এই কাজে নেতৃত্ব দিলেন বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা। এছাড়াও ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, জেলা পরিষদের মেন্টর অরুপ চক্রবর্তী, বিধায়ক শম্পা দরিপা-সহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এছাড়াও হাজির ছিলেন আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা।

চতুরডিহি গ্রামের “মাঝি” অমূল্য হাঁসদা বলেন, প্রথমত এই মূর্তিটি বিরসা মুণ্ডার নয়। কিন্তু এই মূর্তিতে বিরসা মুণ্ডার নাম করে অমিত শাহ যেহেতু মালা দিয়েছেন, তাই আমরা মনে করি, তার স্পর্শে এই জায়গা অপবিত্র ও কলুষিত হয়েছে। সেকারণেই মূর্তিটিকে গঙ্গাজল আর দুধ দিয়ে শোধন করলাম আমরা।”

তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ”ভগবান পরিবর্তনের খেলায় মেতেছে বিজেপি। বিরসা মুণ্ডা নামে যে মূর্তিতে বিজেপির দু-নম্বর নেতা মালা দিয়েছেন সেটা আদৌ আদিবাসী সমাজের ভগবান বিরসা মুণ্ডার নয়।
ওটা রাস্তা সৌন্দর্যায়নের জন্য একজন শিকারীর মূর্তি হিসেবে বানানো হয়। আর সেই শিকারির মডেলকে বিরসা মুণ্ডা বলে চালিয়ে বিজেপি মালা পরিয়েছে। আদিবাসী সমাজের জন্য অপমানজনক।”

এখানেই থেমে থাকেননি তৃণমূল জেলা সভাপতি। বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শ্যামল সাঁতরা আরও বলেন, “ওরা ধর্মকে ব্যবসা বানিয়েছে। কোনদিন দেখা যাবে, দুর্গামূর্তি সরিয়ে অন্য মূর্তি বসিয়ে দেবে। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য-সহ মনিষীদের নিয়ে ওরা ছেলেখেলা শুরু করেছে। কাউকে চেনে না ওরা। ভোট সর্বস্ব রাজনীততেই ব্যস্ত। মেকি দলিত প্রেম দেখিয়ে এই এলাকাকে অপবিত্র করা হয়েছে। তাই গঙ্গাজল দিয়ে আদিবাসী সমাজের মানুষ তা পবিত্র করেছে।”

আরও পড়ুন:Breaking:  অফিস  টাইমে ৭ মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া সফরে এসে বাঁকুড়ার পুয়াবাগান চৌরাস্তার মোড়ে বিরসা মুণ্ডার প্রতিকৃতিতে মালা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু আদিবাসী সমাজের একাংশের দাবি, ওই মূর্তি বিরসা মুণ্ডার নয়। বিজেপি ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে লোক ঠকাচ্ছে।

Previous article“জীবনের দীর্ঘতম কারবা চৌথ” প্রীতি জিন্টার, ভার্চুয়ালি পালন রবিনার
Next articleমন খুশি করা ছুটির তালিকা ২০২১-এ