হোটেলের ঘরে অমিত শাহের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে রাহুল সিনহা! চর্চা তুঙ্গে

মাসখানেক আগে বিজেপির যে সর্বভারতীয় নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল সেখানে বাংলা থেকে অনেকেই জায়গা পেলেও স্থান হয়নি বঙ্গ বিজেপির “পোস্টার বয়” বলে পরিচিত রাহুল সিনহার। তাঁর পরিবর্তে বাংলা থেকে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক করা হয় অনুপম হাজরাকে। এই অনুপম হাজরা আবার “তৎকাল বিজেপি’ বলে পরিচিত। যিনি দল বিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাছাড়া গেরুয়া রাজনীতিতে রাহুল সিনহার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞতা কম অনুপমের। একটা সময় এই বাংলার মাটিতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল সংগঠন নিয়ে বুক চিতিয়ে বিজেপি করেছিলেন রাহুল সিনহা। সেই রাহুল সিনহার কোনও পদ নেই! শুধু রাহুলবাবু কেন, অবাক হয়েছিল রাজনৈতিক মহল!

ওই ঘটনার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতে একটু অভিমানী হয়ে দলের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাহুল সিনহা। তিনি বলেছিলেন, একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে ৪০ বছর ধরে বিজেপির। কিন্তু দল তাঁকে এমন “পুরস্কার” দিল। এবং সেই সময় সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়েছিলেন। যদিও রাহুল সিনহা দল ছাড়েননি।

আরও পড়ুন:‘দক্ষিণেশ্বর মন্দির ভারতের চেতনা বিকাশের মহাকেন্দ্র’, লিখলেন শাহ

এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় বিজেপির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অমিত শাহের দু’দিনের বঙ্গ সফরে অন্য ভূমিকায় দেখা গেল রাহুল সিনহাকে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে রাহুল সিনহাকে সেভাবে দেখা না গেলেও অমিত শাহের দু’দিনের সফরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত সব কর্মসূচিতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশেপাশে ছায়াসঙ্গী হিসেবেই দেখা যাচ্ছে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে। যা বাংলায় গেরুয়া রাজনীতিতে খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

তাহলে কি দলের অন্দরে ফের গুরুত্ব বাড়ছে রাহুল সিনহার? রাজনৈতিক মহলের ঘুরপাক খাওয়া এমন প্রশ্নের মাঝেই এবার নিউটাউনের হোটেলে অমিত শাহের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করলেন রাহুল সিনহা। এবং তাদের সাক্ষাতের যে ছবিটি বাইরে এসেছে সেটিও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাহুল সিননা হাসিমুখে কিছু একটা বলছেন অমিত শাহকে, যা শুনে মাথায় হাত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। কিন্তু বিষয়টি ঠিক ছবি নিয়ে নয়। ছবিটি প্রতীকী মাত্র!

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এত সিনিয়র লিডার হওয়া সত্ত্বেও পার্টিতে পদ নেই তাঁর। অন্যদিকে, তৎকাল বিজেপির ভিড় বাড়ছে দলের অন্দরে। অন্যদল থেকে বহিষ্কৃত নেতারাই এখন রাজ্য বিজেপির হর্তাকর্তা। যা আদি বিজেপির নেতা-কর্মীরা কিন্তু মেনে নিতে পারছেন না। এবং তৎকাল বিজেপির ভিড় বাড়ার পরই দলের মধ্যে গোষ্ঠীকলহ মাথাচাড়া দিয়েছে। যা বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের জন্য অশনি সংকেত। ইত্যাদি আরও কিছু বিষয়ে হয়তো অমিত শাহকে অভিযোগ জানাতে পারেন রাহুল সিনহা। তবে অমিত শাহের সঙ্গে রাহুল সিনহার এই একান্ত সাক্ষাৎ নিয়ে যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা কিন্তু খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Previous article‘দক্ষিণেশ্বর মন্দির ভারতের চেতনা বিকাশের মহাকেন্দ্র’, লিখলেন শাহ
Next articleডাক পাননি বৈশাখী, তাই অমিত-সভায় গেলেন না শোভনও