ফাইজার, মোডার্নার পর অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনও ৯০% কার্যকরী হতে পারে, দাবি বিশেষজ্ঞদের

ল্যানসেট পত্রিকায় কোভিশিল্ডের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

এবার কি তাহলে করোনা ঠাঁই পাবে না পৃথিবীর বুকে? করোনাভাইরাস রুখতে ব্যাপক তোরজোড় শুরু হয়েছে। ফাইজার ও মোডার্নার পর এবার অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন মানবদেহে ৯০ শতাংশ কার্যকরী হতে পারে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। তৃতীয় ট্রায়ালের ফলাফল বলছে, এই ভ্যাকসিনের হাফ ও ফুল-ডোজে ভাইরাসের সংক্রমণ রোখা সম্ভব হচ্ছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অক্সফোর্ডের সঙ্গে একজোট হয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা মানবদেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে গড়ে ৭০.৪ শতাংশ কার্যকরী। ১৩১ জনের উপর তৃতীয় দফা ট্রায়ালের পর এই ফল বেরিয়েছে। কীভাবে এটি ৯০ শতাংশ কার্যকর হয়ে উঠছে? এই টিকার দুরকম ডোজ রয়েছে। প্রাথমিক বা প্রথম ডোজটির পর বুস্টারের স্ট্যান্ডার্ড ডোজ দেওয়া হলে সেটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ কাজ করছে। তবে শুধু স্ট্যান্ডার্ড ডোজটিকে প্রাথমিক ও বুস্টার হিসেবে ব্যবহার করলে তার কার্যকারিতা মাত্র ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের হাফ-ডোজ প্রাইম ও ফুল-ডোজ বুস্টারেই সবচেয়ে ভালোভাবে লড়াই করা যাবে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে। এতে সংক্রমণ রোখা সম্ভব হবে। উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের উপর প্রয়োগ করেই ট্রায়ালের তৃতীয় দফায় এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের ডিরেক্টর ও ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রধান তদন্তকারী প্রফেসর অ্যান্ড্রু পোলার্ডের কথায়, “ফলাফল বলছে এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে আমরা অনেক প্রাণ বাঁচাতে পারব। একটি ডোজ ৯০ শতাংশ মতো কাজ করছে। এর প্রয়োগে অনেক মানুষকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে।” করোনাভাইরাসকে আটাকানো যাবে এই ভ্যাকসিনের সাহায্যে। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। ফাইজার ভ্যাকসিনকে যেখানে মাইনাস ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রিতে রাখতে হয়ে কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে তা একেবারেই নয়। মাত্র ২ থেকে ৪ ডিগ্রি ঠান্ডাতেই সংরক্ষণ করা যাবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন। এটি সঞ্চয় করে রেখে বণ্টন করাও তুলনামূলকভাবে সহজ হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতে ফেব্রুয়ারিতেই চলে আসবে অক্সফোর্ডের করোনা রোধী টিকা। দুটি ডোজের দাম পড়বে হাজার টাকার মত। তবে প্রথম দফায় এই টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্কদের। আমজনতার বাকি অংশের জন্য করোনা টিকা মিলবে এপ্রিলে। বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার শীর্ষ কর্তা আদার পুনাওয়ালা শুক্রবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে একথা জানান।

আরও পড়ুন-করোনা-রোধে মাত্র ৬০ শতাংশ কার্যকরী দেশীয় ভ্যাকসিন, জানাচ্ছেন বায়োটেকেরই কর্তা

Previous articleপ্যারোলের মেয়াদ বাড়ল রাজীব হত্যায় ষড়যন্ত্রকারীর, শীঘ্রই হতে পারে মুক্তি
Next articleমিম-তৃণমূল এক হয়েছে, কটাক্ষ দিলীপের