বাংলাদেশে করোনার উৎপত্তি! সন্দেহের তালিকায় রয়েছে আরও আট দেশ

খায়রুল আলম (ঢাকা) : উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও চিনের একদল গবেষক দাবি করেছেন ভাইরাসটির উদ্ভব সম্ভবত অন্য কোনও দেশে। ভারত, বাংলাদেশসহ অন্তত আটটি দেশ রয়েছে তাদের সন্দেহের তালিকায়। সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিক্যাল সাইন্সের গবেষকদের দাবি, গত বছরের গ্রীষ্মেই সম্ভবত ভাইরাসটির উদ্ভব হয়। তবে ভাইরাসটির উৎস অনুসন্ধান এখনও শেষ করতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

করোনাভাইরাসের উদ্ভব নিয়ে চিনা গবেষকদের গবেষণাপত্রটি গত ১৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত জার্নাল ল্যানসেট-এর একটি প্রি-প্রিন্ট প্ল্যাটফর্মে। এতে গবেষকেরা ভাইরাসটির উৎস অনুসন্ধানে পলিজেনেটিক অ্যানালাইসিস পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এই পদ্ধতিতে ভাইরাস পুনরুৎপাদনের সময় মিউটেট বা ডিএনএ’তে বদলের সময় সংগঠিত পরিবর্তনগুলো বিশ্লেষণ করা হয়। যে স্থানে ভাইরাসটিতে মিউটেশনের পরিমাণ কম পাওয়া যাবে, সেখানেই এটির উৎস হতে পারে বলে ধরে নেওয়া হয়।

গবেষকদের দাবি ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী করোনাভাইরাসের প্রথম রূপটি অন্তত আটটি দেশ থেকে আসতে পারে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক রিপাবলিক, রাশিয়া ও সার্বিয়া। তাদের দাবি বাংলাদেশ ও ভারতে মিউটেশনের মাত্রা কম পাওয়া গেছে। ফলে এই দুটি প্রতিবেশী দেশ থেকে ভাইরাসটি এটি ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।

চিনা গবেষকদের দাবি, ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে ভাইরাসটি প্রথম মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তারা বলছেন ওই সময়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপদাহ বয়ে যায় ফলে জল সংকট তৈরি হয়। আর তাতে মানুষ ও প্রাণী একই উৎস থেকে জল পান করতে বাধ্য হয়। ওই সময়েই হয়তো ভাইরাসটি প্রথম মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে চিনের উহান শহরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয় বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তারা।

তবে চিনের এই গবেষণাটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করছেন গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ডেভিড রবার্টসন। তার দাবি চিনা গবেষকদের এই গবেষণাপত্রটি করোনাভাইরাস নিয়ে বোঝাপড়ায় নতুন কিছু যোগ করতে পারেনি। এই ব্রিটিশ গবেষকের দাবি চিনা গবেষণাপত্রটির লেখকেরা যে কম মিউটেশন শনাক্ত করতে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন তা সহজাতভাবেই নিরপেক্ষ নয়। এছাড়া চিনা গবেষকেরা মহামারি সংক্রান্ত হাতে থাকা তথ্য অগ্রাহ্য করেছেন, যাতে পরিষ্কারভাবেই দেখা যাচ্ছে ভাইরাসটির উদ্ভব চীনে আর সেখান থেকেই ছড়িয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক বিশেষজ্ঞ মার্ক সুচার্ডও বলেছেন সবচেয়ে কম মিউটেশন শনাক্ত করার পদ্ধতি নির্ভুল কিছু নয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে চিনের উহান শহরে রহস্যজনক ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করতে শুরু করেন চিকিৎসকেরা। ধারণা করা হয়ে থাকে সেখানকার একটি বণ্যপ্রাণীর বাজার থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। তবে প্রথম কোন রোগী আক্রান্ত হয়েছিলেন তা শনাক্ত করা যায়নি। ফলে এখনও ভাইরাসটির উৎস নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেওয়ার দায় চিনের ওপর চাপাতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।

আরও পড়ুন-আফগানিস্তানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, ৩১ নিরাপত্তারক্ষী সহ মৃত ৩৪

Previous articleআফগানিস্তানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, ৩১ নিরাপত্তারক্ষী সহ মৃত ৩৪
Next articleনিখিল ও নুসরতের সংসারে ধুন্ধুমার কান্ড, হঠাৎ কি এমন হল?