কৃষক বিদ্রোহ অব্যাহত, আজ বৈঠকে কি মিলবে সমাধান?

নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকদের বিক্ষোভ অব্যাহত। দিল্লির সবকটি সীমানা ঘিরে হাজার হাজার কৃষক অবস্থান, ধরনা চালিয়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের উপর। এই পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র খুঁজতে আজ কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে। তার আগে সকালে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে কথা বলবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কৃষি বিদ্রোহ নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য অমরিন্দরকে কটাক্ষ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বলেছেন, কৃষক স্বার্থের বিনিময়ে কেন্দ্রের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে ফের কৃষক নেতারা দাবি তুলেছেন, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে নতুন কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। বিশেষ কমিটি গঠনের কোনও প্রস্তাব মানা হবে না। বামপন্থী কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা বলেছেন, নতুন তিনটি আইন হল কৃষকদের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা। কর্পোরেট বন্ধুদের স্বার্থ রক্ষাই কেন্দ্রের উদ্দেশ্য। বড় বড় শিল্পপতিদের কাছে কৃষকদের দাস বানানোর চক্রান্ত করছে মোদি সরকার। আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে।

আরও পড়ুন:সুপ্রিমকোর্টে পিছল শুনানি, টাটা-এসপি গ্রুপের সম্পর্ক ছিন্নের উত্তর মিলতে পারে ৮ ডিসেম্বর

গত মঙ্গলবার সর্বশেষ বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ৩৫ জন কৃষক নেতার ম্যারাথন আলোচনা হয়। কিন্তু কোনও রফাসূত্র মেলেনি। নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এককাট্টা সবকটি কৃষক সংগঠন। আইন পর্যালোচনায় কেন্দ্রের দেওয়া কমিটি গঠনের প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করেছেন কৃষক নেতারা। তাঁরা মনে করেন কমিটি গঠনের প্রস্তাব আদতে সময় কেনার চেষ্টা এবং কৃষকদের বোকা বানিয়ে আন্দোলনে জল ঢালার চক্রান্ত। নিষ্ফলা বৈঠকের পর তাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে। একইসঙ্গে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার ফের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কৃষক নেতারা। আজকের বৈঠকে আশাব্যঞ্জক কোনও ফল বেরিয়ে আসে কিনা সেদিকে তাকিয়ে সব পক্ষই।

গত পরশুর অমীমাংসিত বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জানিয়েছিলেন, আমরা কৃষকদের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কৃষকরা মানবেন এমন পথ খুঁজে বের করাই আমাদের লক্ষ্য। এদিকে আন্দোলনের অষ্টম দিনেও রাজধানী দিল্লির সবকটি সীমানা অচল করে হাজার হাজার কৃষক অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। রোজই নতুন করে আরও কৃষক যোগ দিচ্ছেন। অসুস্থতা ও প্রবল ঠাণ্ডায় দুই কৃষকের মৃত্যুও হয়েছে। তারপরেও অদম্য জেদ দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজিপুর সীমান্তে ধরনা দিচ্ছেন কয়েক হাজার কৃষক। দিল্লিতে তাঁদের প্রবেশ আটকাতে লোহার ব্যারিকেড বসিয়ে সক্রিয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার এই আন্দোলন অষ্টম দিনে পড়েছে। দাবি পূরণ না হলে গোটা দিল্লি অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। বাম সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভা (এআইকেএস) সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে অবরুদ্ধ ভারতের রাজধানী। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি হয়েছে মোদি সরকার।

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next article“এরা প্রধানমন্ত্রীকেও বহিরাগত বলে!” এবার বেসুরো বৈশালী