কৃষকদের প্রতি উদাসীন সরকার, প্রতিবাদে আত্মঘাতী শিখ সন্ত

মর্মান্তিক! কৃষি আইনের (agri law) বিরোধিতায় গত ২১ দিন ধরে দিল্লির প্রবল ঠাণ্ডা অগ্রাহ্য করে যে হাজার হাজার কৃষক বিক্ষোভ (farmers protest) দেখাচ্ছেন, তাদের প্রতি সরকারের নির্মম উদাসীনতা মেনে নিতে পারেননি তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণের প্রতিবাদে, কৃষকদের আন্দোলনকে সহমর্মিতা জানিয়ে আত্মঘাতী হলেন শিখ সন্ত বাবা রাম সিং (baba ram singh)। বেনজির এই ঘটনায় একইসঙ্গে শোক ও ক্ষোভ তীব্র হয়েছে আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে।

কৃষকদের দাবিকে সমর্থন করে শিখ সন্ত বাবা রাম সিং নিজে সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষক আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। আত্মহননের আগে এক চিঠিতে বাবা রাম সিং লিখেছেন, “সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাগ ও যন্ত্রণা প্রদর্শন করতেই আত্মহত্যার পথ বেছেছেন তিনি। তাঁর আশা, অন্তত এর পর সরকারের টনক নড়বে। জানা যায়, সিঙ্ঘু সীমান্ত থেকে ২ কিলোমিটার দূরে কুন্ডলির দিল্লি-সোনিপথ সীমান্তে ছিলেন ৬৫ বছরের প্রবীণ এই শিখ সন্ত। মৃত্যুর আগে তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, “রাস্তায় আন্দোলনরত কৃষকদের অধিকার পাওয়ার জন্য যন্ত্রণা দেখলাম। সরকারের অন্যায় আচরণ দেখে আমি ব্যথিত। অন্যায় করা যেমন অপরাধ, অন্যায় সহ্য করাও অপরাধ।”

পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের বৈধ রিভলবার থেকে গুলি করে আত্মঘাতী হন বাবা রাম সিং। ঘটনার পর দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর কারনালে তাঁর বাড়িতে মৃতদেহ পাঠানো হয়।

এদিকে কৃষক নেতাদের দাবি, গত একুশ দিনের মধ্যে মোট ২০ জন আন্দোলনকারী প্রাণ হারিয়েছেন। আন্দোলনে মৃত কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশ জুড়ে ২০ ডিসেম্বর শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। হরিয়ানার কারনালের সিংরা গুরুদ্বার থেকে আন্দোলনরত কৃষকদের জন্য ঠাণ্ডায় কম্বল বিতরণ করতে আসেন শিখ সন্ত রাম সিং। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি কৃষকদের দাবির সমর্থনে আত্মঘাতী হলেন।

আরও পড়ুন : কৃষক আন্দোলন অচিরেই জাতীয় ইস্যু হবে, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন শিরোমনি অাকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল (sukhbir singh badal)। তিনি বলেন, কৃষক আন্দোলনে এসে আত্মঘাতী হয়েছেন সন্ত বাবা রাম সিং। এই খবর শুনে খুব কষ্ট হচ্ছে। সন্তজির মহান ত্যাগ বিফলে যাবে না। কেন্দ্রের কাছে আবেদন করছি, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হোক। ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও ( rahul gandhi)। তিনি টুইট করে বলেন, দিল্লি সীমান্তের একাধিক জায়গায় কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁরা মৃত্যু বরণ করছেন। এর পর কবে হুঁশ ফিরবে মোদি সরকারের? কৃষকদের কথা ভেবে নিজেদের জেদ ছেড়ে এই কৃষি আইন বাতিল করা হোক।

Previous articleকৈলাশ ফাঁস করে দিলেন গোপন কথা, মধ্যপ্রদেশে সরকার ফেলেছেন মোদি!
Next articleদুই মেদিনীপুরেই একই চিত্র, দাদার ‘অনুগামী’রা সঙ্গে যেতে নারাজ