স্বপ্ন দেখতেন দিন ফেরার । আশা করতেন জীবনটা বদলাবে। ছোট্ট দোকান সামলাতে সামলাতে জীবন যুদ্ধে প্রতি মুহূর্তে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। বিশ্বাস করতেন দারিদ্র্য থেকে চটজলদি মুক্তি দিতে পারে একমাত্র লটারি। সেই আশাতেই মাঝেমধ্যে কেটেও ফেলতেন টিকিট।
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে তার লাখ টাকার স্বপ্ন দেখাকে রীতিমতো পাগলামি বলে মনে করতেন পরিজনরা। কিন্তু এবারের বড়দিনে সব যেন ওলটপালট হয়ে গেল। সান্তা বুড়ো তার উপহারের ঝুলি উপুড় করে স্বপ্নও বাস্তব করে দিলেন। আরামবাগের মনসাতলার বাসিন্দা উত্তম মাইতি এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না যে তিনি এখন কোটিপতি ।সকালে লটারির টিকিট কেটেছিলেন, আর রাতে তিনি কোটিপতি।
পঞ্চাশ বছর আগে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য সেই কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছিল । বাঁচার তাগিদে একটি ছোট্ট কাপড়ের গুমটি দোকান করেন। সেটাও চলছিল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অভাবের সংসারে এগিয়ে আসেন স্ত্রী কৃষ্ণা মাইতি। সেলাই মেশিনের কাজ করে চেষ্টা করেছেন সংসারে সাহায্য করতে। দুই ছেলে কাজ করেন অন্যের দোকানে। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে উত্তম বাবুর অভাবের সংসার। অভাবের সংসারে এভাবেই দিন কাটছিল। শুক্রবার সকালেও দেড়শ টাকার লটারি টিকিট কাটেন। সন্ধ্যায় টিকিট মেলাতে গিয়ে চমকে যান তিনি। তার ওই টিকিটই এনে দিয়েছে তাকে কোটি টাকার পুরস্কার। প্রথমটা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি। নিশ্চিত হতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তিনি।
এরই পাশাপাশি এত টাকা জিতে আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না তার। কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। এত টাকা নিয়ে এখন কি করবেন, বুঝেই উঠতে পারছেন না উত্তম বাবু। তার স্ত্রী বলেছেন, কষ্ট করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছেন। এখন দুই ছেলের জন্য কিছু করার কথা ভাবছেন তাঁরা।
আপাতত রাতারাতি কোটিপতির দলে ঢুকে পরা উত্তম বাবু এবার একটু নিশ্চিন্তে জীবনটা উপভোগ করতে চান।
