EXCLUSIVE দিলীপ ঘোষ : অনেক কথা বলি, যা আমার নিজেরও পছন্দ নয়!

রাজনীতি করতে এসে এমন কিছু কথা বলতে হয়, যা আমি বলতে চাই না। আমার রুচি বিরুদ্ধ। তবু বলি। কারণ, যারা যে ভাষা বোঝে তাদের সেই ভাষাতেই জবাব দিতে হয়। বছরের প্রথম দিনে ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’কে (Ekhon Biswa Bangla Sangbad) এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অকপট স্বীকারোক্তি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)।

২০২১-এর ১ জানুয়ারির সকালে মুখোমুখি বিজেপি রাজ্য সভাপতি (BJP State Secretary)। রাজনীতির বাইরের মানুষটা নিজেকে হাটখোলা করলেন ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর সম্পাদক অভিজিৎ ঘোষের (Editor, Ekhon Biswa Bangla Sangbad) সামনে।

নতুন বছরে তিন টার্গেট…
দিলীপ : ভোটে জিততে হবে। শিক্ষা-চাকরির সমাধান করা। এবং তৃতীয়ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করা।

আপনি খাটছেন, আর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অন্যদের নাম শোনা যাচ্ছে…
দিলীপ : আগে বলা হতো মুখ কোথায়? এখন তো শুনছি পাঁচজনের মুখ। ব্যাপারটা ভাল। কিন্তু পদ তো একটা। এসব আপনারা তৈরি করেন, আবার আপনারাই পরে কেটে দেন।

আরও পড়ুন : ‘শুভেন্দু পরিবারের সম্পদ, আমি ছেলের বিরুদ্ধে যাবো কেন?’মুখ খুললেন শিশির অধিকারী

আরএসএসের সংগঠক আর বিজেপি রাজ্য সভাপতি। কোনটা এনজয় করছেন…
দিলীপ : আসলে যাই করি সেটাই এনজয় করতে হবে, আমি দুটোই করি।

রোজ নতুন লোক বিজেপিতে আসছে। এত লোককে বসার জায়গা দেবেন কী করে…
দিলীপ : বসার জায়গা না পেলে দাঁড়িয়ে যাবেন। না হলে ঝুলে যাবেন। বাসে সিট না থাকলে কী করেন? বিজেপি দেশের সবচেয়ে বড় পার্টি। আর এখন হট কেক। ফলে ভিড় লেগে তো থাকবেই। সেভাবেই কর্মীরা তৈরি হচ্ছেন।

আপনি এতো খাটছেন, অথচ মাঝে মধ্যেই শোনা যায় আপনাকে সরানো হচ্ছে…
দিলীপ : শোনা যায় এটা ঠিক। এতে কর্মীরা বিভ্রান্ত হন এটাও ঠিক। তাদের বোঝালে বোঝেন। আবার চাঙ্গা হয়ে যান। বুঝতে হবে এই মিডয়ার যুগে এসব নিয়েই চলতে হবে।

কার উপর বেশি রাগ? বিরোধী দলগুলো? না দলের মধ্যে দিলীপ-বিরোধীদের?
দিলীপ : কেউ আমার বিরোধী রয়েছেন দলে, আমি বিশ্বাস করি না। হ্যাঁ, আমি মাঝে মধ্যে একটু রেগেমেগে কর্মীদের বকাঝকা করি। কিন্তু সেটা ইনডিসিপ্লিন হওয়ার কারণে। আমি নিজে ডিসিপ্লিনড লাইফ লিড করি। অন্যরাও ডিসিপ্লিন মেনে চলুক সেটাও চাই।

রোজ নতুন নতুন ডায়ালগ বলেন। সেসব সুপার হিট। এগুলো কী নিজে আগের রাতে বসে তৈরি করেন, না এন কে সলিল টাইপের কাউকে রেখেছেন, যিনি এসব লিখে দেন…
দিলীপ : না, না, কেউ বলে দেয় না। স্বতঃস্ফূর্ত। আমার সেই সময়ে যা মনে হয়, সেটাই বলি। কোনও রাখঢাখ নেই। তাতে কারওর ভাল লাগে, কারওর খারাপ লাগে। এটা আমি পরিষ্কার বলতে চাই, অনেক কথা আমি প্রকাশ্যে বলি যা বলতে চাই না, আমার চরিত্র বিরোধী। বোধহয়, বর্তমান রাজনীতির সেটাই দস্তুর। যে যেমন ভাষা বোঝে, তাকে সেই ভাষাতেই জবাব দিতে হয়।

সাধারণ রাজনীতির বাইরে ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কেমন লাগে…
দিলীপ : রাজনীতির বাইরে ওনার কোনও অস্তিত্ব নেই। উনি মন্দিরে গেলেও রাজনীতি করেন, জনসভাতে গেলেও তাই করেন, শিক্ষাঙ্গনে গেলে… আর তা করতে গিয়ে অনেক কথা বলেন, যা সমস্যা তৈরি করে।

লোকসভায় জিতলেন। অথচ নিজের বিধানসভা খড়গপুরে হারলেন। শিকড় আলগা হচ্ছে…
দিলীপ : শিকড় ঠিক আছে। ভোটে জেতার জন্য শাসক দলের নানা শক্তির কাছে হেরেছি। বুঝেছি। এবার সেই প্রতিরোধ তৈরি করছি। ভোটে আমরাই জিতব।

সকালে হাঁটা দিয়ে শুরু, তারপর চায়ে পে চর্চা, মিছিল, বৈঠক সভা… পরশুরামের গেছো দাদার মতো এই ফিটনেস রাখেন কী করে…
দিলীপ : পারিবারিক ভাবেই আমি শক্ত সমর্থ। শরীর ঠিক রাখতে খেলাধুলো ব্যায়াম করতাম এখনও করি। নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করি। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাই। আমার কিছু হারানোর নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। দেওয়ার আছে। সেটাই চেষ্টা করি। আগে থাকার জায়গা ছিল না। পার্টি অফিসে থাকতে হতো। এখন তবু আলাদা জায়গা পাই। না পেলে একসঙ্গে থাকি। কোনও অসুবিধা নেই।

অবসরে কী করেন…
আগে অবসর পেতাম। বই, গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত পুরনো ফিল্মের গান শুনতাম। এখন সময় হয় না। তবে গাড়িতে যেতে যেতে শুনি। একটু সময় পেলে আপনাদের মতো মানুষের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলি। বাথরুম ছাড়া আমি আর কোথাও ইন্ডিভিজ্যুয়াল নই।

ঘুম হয়?
দিলীপ : হয়। বিছানায় পড়লেই ঘুমিয়ে পড়ি। তবে ইদানিং ঘুম হঠাৎ ভেঙে যাচ্ছে। আর ঘুম আসছে না?

সেটা কি চাপে…
দিলীপ : না মনে হয়। আবার ঠিক হয়ে যাবে।

স্বপ্ন দেখেন…
দিলীপ : আমি জেগে স্বপ্ন দেখি। লোককে স্বপ্ন দেখাই।

স্বপ্নে কে বেশি আসেন…
দিলীপ : কেউ না। ওই যে বললাম, জেগে স্বপ্ন দেখি, দেখাই।

আরএসএস-বিজেপি করে কী জীবনের সব রোমান্স জলাঞ্জলি দিলেন…
দিলীপ : গাছের তলায় বসে কারওর সঙ্গে গল্প করা যদি রোমান্স বলেন, তাহলে ওসবে আমি বিশ্বাস করি না। আমি সকলের সঙ্গে, সকলের মধ্যে, সকলকে নিয়ে থাকতে ভালবাসি।

Advt

Previous articleকৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে মোদিকে খোঁচা দিয়েই নতুন বছর শুরু করলেন রাহুল
Next articleনর্থইস্ট ম‍্যাচে তিন পয়েন্ট লক্ষ‍্য বাগান ব্রিগেডের