ইটভাটার দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত মালদহে বেগুন চাষ

একদিকে করোনা সংক্রমণ, অপরদিকে ইটভাটার দৌরাত্ম্যে মার খাচ্ছে মালদার ঐতিহ্যশালী নবাবগঞ্জের (Nababganj) বেগুন চাষ। এই জাতের বেগুন শুধুমাত্র মালদহ (Maldah) জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাষ হয়ে থাকে। ব্রিটিশ আমল থেকেই রাজ-রাজাদের প্রিয় এই সবজি নবাবগঞ্জের বেগুন (Brinjal) হিসাবে রাজ্য তথা দেশজুড়ে বিখ্যাত রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে লকডাউন (Lockdown) এবং ইটভাটার ধোঁয়ার জেরে নবাবগঞ্জের চরম সমস্যায় পড়েছেন বেগুন চাষীরা। পুরাতন মালদার নবাবগঞ্জ এলাকা থেকেই সূত্রপাত এই বেগুনের। যা এখন চাঁচোল মহকুমার পুখুরিয়া থানার রাজাপুর, পরানপুর, পীরগঞ্জ এলাকাতেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে চাষ হচ্ছে। কিন্তু চলতি বছর করোনা সংক্রমণে জেরে যে লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতেই ব্যাপকহারে মার খেয়েছে বেগুন চাষের। পাশাপাশি, যত্রতত্র বেআইনিভাবে গজিয়ে ওঠা ইটভাটার ধোয়ার দাপটে নষ্ট হচ্ছে নবাবগঞ্জ বেগুন গাছের। যা নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষীরা । আর এজন্য ধীরে ধীরে ঐতিহ্যশালী এই নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ থেকে উৎসাহ হারাচ্ছেন মালদার চাষীরা।

রাজাপুর গ্রামের চাষী ওমর ফারুক, মোজাম্মেল হকের বক্তব্য, নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ মূলত পুরাতন মালদা ব্লক থেকে শুরু। এরপরেই আশেপাশের এলাকাগুলিতেই এই বেগুন চাষ ছড়িয়েছে । একেকটি বেগুন দেড় থেকে দুই কিলো পর্যন্ত হয়। কোনটা আবার ৮০০ গ্রাম থেকে এক কিলো পর্যন্ত হয়। বর্তমানে এই বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা পাইকারি দরে সবজি বিক্রেতা কিনছেন। তারা আবার সেটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করেন। এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু ফলন হলেও এবার চাষের জমির সংখ্যা কমেছে। গত বছর রাজাপুর, পীরগঞ্জ , পরানপুর এলাকাতেই কমপক্ষে ১০০ থেকে ১৫০ জন চাষী বিপুল পরিমাণ জমিতে এই বেগুন চাষ করেছিলেন। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণের জেরে রাজাপুর এলাকায় মাত্র ১০ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। ফলে লাভের মাত্রাও কমে গিয়েছে। যা এক প্রকার চাষীদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন:কাউকে নতুন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেনি দল, বিভ্রান্তি এড়াতে স্পষ্ট বার্তা তৃণমূলের

শীতের মরশুম শুরু হতেই মালদায় শুরু হয় নবাবগঞ্জ বেগুনের চাষ। এই বেগুন ভাজা করে এবং পুড়িয়ে খাবার চাহিদা রয়েছে ভোজনরসিক মানুষদের মধ্যে। জেলার বাইরে এবং অসম (Assam), বিহার (Bihar), ঝাড়খন্ড (Jharkhand), উত্তরপ্রদেশে (Uttarpradesh) মালদা থেকে নবাবগঞ্জের বেগুন রফতানি করা হয়ে থাকে। মূলত কলকাতা শহরে নবাবগঞ্জের বেগুনের চাহিদা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক রয়েছে কিন্তু লকডাউন এবং আবহাওয়ার জন্য নবাবগঞ্জ বেগুন চাষ করা নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন চাষীরা।

Advt

Previous articleসিডনিতে পুকোভস্কি-লাবুসানের ব্যাটে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া
Next articleবিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বেই উত্তরবঙ্গে শুভেন্দুকে ব্যাকফুটে ফেললেন অভিষেক