তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে জুনিয়র মৃধা (Junior Mrida) খুনের তদন্তে। বিশেষ করে মূল অভিযুক্ত প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর (Priyanka Choudhuri) সম্পর্কে বিভিন্ন কথা সামনে আসছে। ২০০৮ সালে অরকুটের (Orkut) মাধ্যমে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে আলাপ হয় জুনিয়রের। এরপর জিমে (Gym) গিয়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ২০০৯-এর গোড়া থেকেই জুনিয়রের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন প্রিয়াঙ্কা। মডেলিং করতেন তিনি। অথচ তিনি যে বিবাহিত, মোহনবাগান কর্তা বলরাম চৌধুরীর (Balram Choudury) পুত্রবধূ সেই পরিচয় গোপন করেই জুনিয়রের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। ২০১১-এর গোড়াতে এক টিভি রিয়ালিটি শোয়ে প্রিয়াঙ্কাকে দেখা যায় শাঁখা-সিঁদুর পরে। তখনই জুনিয়ার ও তাঁর পরিবার জানতে পারেন প্রিয়াঙ্কা বিবাহিত। তদন্তকারীদের অনুমান, সেখান থেকেই জুনিয়র-প্রিয়াঙ্কার সম্পর্কে ফাটল।

তবে, একা জুনিয়ার নন, টলিউডের একাধিক প্রযোজকের (Producer) শয্যাসঙ্গী ছিলেন প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। তাঁদের সঙ্গে বিদেশেও যেতেন তিনি।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র জুনিয়র মৃধা খুনের অভিযোগে গত সোমবার তাঁর বান্ধবী প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁকে জেরা করেই উঠে আসছে এই সব সম্পর্কের তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি জানতে পেরেছে, যেদিন জুনিয়রের দেহ উদ্ধার হয় সেদিন ১২ বার জুনিয়রকে ফোন করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। একই সঙ্গে এক প্রযোজককে শতাধিকবার ফোন করেন তিনি। তদন্তকারীদের ধারনা, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছিল জুনিয়রকে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে এয়ারপোর্টগামী লেনে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর দেহ। থেঁতলে যাওয়া দেহ দেখে প্রাথমিক ভাবে বরানগর থানার পুলিশ মনে করেছিল, অন্য কোনও গাড়ি পিষে দিয়েছে জুনিয়ারকে। পরে দিন ময়নাতদন্ত ধরা পড়ে, গাড়ির ধাক্কা দিয়ে মারা হয়েছিল ওই তরুণ ইঞ্জিনিয়ারকে। তার আগে তাঁকে গুলি করা হয়। এরপর রাজ্য সরকার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত না এগোনোয় নিহতের বাড়ির লোক এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।

আরও পড়ুন:“আগে মানুষের জীবন, তারপর বিশ্বাস”, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের

আদালতে তাঁরা জানায়, জুনিয়রের এক বান্ধবী ছিল। কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় জুনিয়র খুনের তদন্ত করবে সিবিআই। সিআইডির থেকে কেস ডায়েরি নিয়ে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। যে বান্ধবীর কথা উঠে আসে তিনি এক প্রভাবশালীর পুত্রবধূ বলেও জানা যায়। এরপর প্রিয়াঙ্কাকে ডেকে সম্প্রতি জেরা করে সিবিআই। জেরায় অসঙ্গতি ধরা পড়ায় সোমবার সন্ধেয় তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আপাতত তাদের হেফাজতেই আছেন প্রিয়াঙ্কা।
